‘র্যাব এত বেশি অন্যায় ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি, এর মধ্যে আমাদের পুলিশ প্রধানও আছেন। এদের বরখাস্ত করা উচিত ছিল। তবে তা না করে কয়েকদিন আগে আবারও দুজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এসব সমস্যা দূর না করলে নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে না।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর সাবেক ডিজি ও বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ সাতজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা তুলে নিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের সহযোগিতা চাওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় দেশের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরই কয়েকবার করে গ্যাস-তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে ।
‘প্রশাসনে, বিচার বিভাগসহ সব স্থানে তারা নিজেদের লোক নিয়োগ দিয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনও এখন তারা বাদ দেয় না। গায়ের জোরে নিয়ে যায়। আজ তারা দলীয় প্রশাসনকে নিযুক্ত করেছে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে গিয়ে। তারা নির্মম ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। ইলিয়াস আলীসহ প্রায় ছয়শ নেতাকর্মীকে তারা গুম করেছে, তাদের হদিস খুঁজে পাইনি। ’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন, তার বাঁচার কথা ছিল না। এসবের উদ্দেশ্য একটাই, আওয়ামী লীগের শাসনকে চিরস্থায়ী করা। এখানে কেউ ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারবে না। এটাই আওয়ামী লীগের মূল উদ্দেশ্য। ’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরিকল্পিত ভাবে মূল সংবিধান পাল্টে দিয়ে তারা স্বৈরতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে। ১৯৭২ সালেও তারা ক্ষমতায় এসে মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। আমরা দেখেছিলাম ’৭৪ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এসব সামলাতে না পেরে ’৭৫ সালে তারা বাকশাল করে। তখন পত্র-পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। আজ আবারও তারা গনতন্ত্রের লেবাস পরিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দিয়ে। আপনারা জানেন এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আওয়ামী লীগই নিয়ে এসেছিল। তারা এ দাবিতে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। তবে ক্ষমতায় আসার পর তারা তা বাতিল করে। আজ মানুষ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১৮ সালে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। ’
‘এই সরকারকে আরও সময় দেওয়া হলে এ দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। আমাদের নেত্রী মিথ্যা মামলায় গৃহবন্দি আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিথ্যা মামলায় বিদেশে আছেন। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সকলের মাঝে জাতীয় ঐক্য করতে হবে।









Discussion about this post