নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আবু বকর সরকার সত্তোরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে নাজিরের কক্ষে আড়াই ঘন্টা আটকে রেখেছেন।
একই সাথে আটকে রেখে তাকে দফায় দফায় সারাজীবন জেল খাটানোর ভয়ও দেখিয়েছে গালিগালাজও করেছেন এ সরকারি কর্মকর্তা।
এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত দিয়েছেন নগরীর বিকে রোডের বাসিন্দা হাজী ফজলুল হক।
গত ৫ জুন করা এ অভিযোগে ফজলুল হক (৭১) জানান, গত ২ জুন তার নিজের ও নাতির ভূমি সমস্যার লিখিত দরখাস্ত নিয়ে খানপুরে এসিল্যান্ড অফিসে যান। এসিল্যান্ডকে তাকে দরখাস্ত নাজিরের কাছে জমা দিতে বলে। এরই মধ্যে এসিল্যান্ড অফিসে থাকা অলি মিয়া, শামীম মিয়া, জামান নামে তিনজন তাদের পিছু নেয় এবং টাকা দাবি করে। তারা এসিল্যান্ড অফিসের নিযুক্ত কর্মচারী না হয়েও নিয়মিত সেখানে কাজ করে। ফজলুল হক ও তার নাতি টাকা দিতে অস্বীকার করে অফিস থেকে বের হওয়ার পথে অলি মিয়া তাদের বলে, ‘এসিল্যান্ড স্যার আপনাকে ডাকে’। তিনি এসিল্যান্ডের কাছে গেলে তাকে দালাল অপবাদ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফতুল্লা এসিল্যান্ড আবু বকর।
দুপুর আনুমানিক ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নাজিরের রুমে এ বৃদ্ধকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ সময়ে তাকে জেলে পাঠানোর হুমকিও দেয় এসিল্যান্ড। তার হুমকি ও হয়রানিমূলক ব্যবহারে ওই বৃদ্ধ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন৷ তিনি এসিল্যান্ড অফিসে বসেই কাঁদতে থাকেন৷ এ সময়ে তার মোবাইল ফোনও কেঁড়ে নেয়া হয়। এরপর আর তিনি ফতুল্লা এসিল্যান্ড অফিসে যাবেন না এমন অঙ্গীকারবদ্ধ করিয়ে তাকে নাজিরের কক্ষে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে পরে জেলা প্রশাসক ও মানবাধিকার সংস্থার কাছে অনুলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী ফজলুল হক।
এ বিষয়ে জানতে ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আবু বকর সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোন ঘটনা এসিল্যান্ড অফিসে ঘটেনি৷ তিনি ফজলুল হক নামে কোন বৃদ্ধ এমন অবস্থায় পড়েছেন কিনা তাও জানেন না বলে দাবি করেন৷
উল্লেখ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার খানপুরের এই এসিল্যান্ড কার্যালয় কে ঘিরে দীর্ঘদিন যাবৎ অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও নগরবাসীকে হয়রানী থেকে রক্ষা করতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় নাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে । উল্টো এসিল্যান্ডের এই দপ্তরের প্রায় অনেক কর্মকর্তা কর্মচারীরা দম্ভ করে বলেন, “এখানে বদলী হয়ে আসতে প্রতিযোগিতা থাকে । কে কত বেশি ঘুষ দিয়ে এই দপ্তরে বদলী হবে তা নিয়ে হুলুস্থুল তৈরি হয় । এতো টাকা ঘুষ দিয়ে যারা এখানে আসবে তারা কি ঘুষ না খেয়ে সাধু হয়ে আংগুল চাটবে ? আর এখানকার এই ঘুষের টাকা কোন কর্তারা খায় না এমন দুই একজনকে খুজে আনেন দেখি !”
এমন বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে ।









Discussion about this post