মাস শেষে ট্রাফিক পুলিশের রেকারম্যান হিসেবে এটিএসআই কিংবা কন্সষ্টেবলদের অটো বানিজ্যের কারণে ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যাটারী চালিত অটো চালকরা। শহরের যত্রতত্র এখন অটো স্ট্যান্ড। বঙ্গবন্ধু সড়কের সংযোগ শাখা সড়কের এমন কোন মোড় নেই যেখানে অটো ষ্ট্যান্ড নেই। এ সকল ষ্ট্যান্ডের নেপথ্যে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের আর্থিক সম্পর্ক।
দীর্ঘদিন যাবৎ চলমান এমন অটো বাণিজ্যের কারণে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জাহেদ পারভেজ দায়িত্ব গ্রহনের পর খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই প্রতি মাসে মাসোয়ারা প্রদানকারী অটো চালকদের আর থামানো যায় নাই । একই সাথে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জাহেদ পারভেজ কোন অবস্থাতেই থামতে পারে নাই অটো চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়কারী রেকারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এটিএসআই ও কন্সষ্টেবলদের ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশে দায়িত্বরত একজন ইন্সপেক্টর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একেক জন রেকারম্যানদেরকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট টার্গেট দিয়ে চাঁদাবাজি করতে রাস্তায় নামিয়ে দেন একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। আপনারা যারা প্রকৃত পক্ষে সাংবাদিকতা করে তারা এমন নগ্ন চাঁদাবাজির মতো অপরাধ নিয়ে লিখতে পারেন নাই । আর কেউ মুখ খুলতেও পারেন নাই । প্রমাণ ছাড়া লিখাও যায় না । প্রতি মাসে একেকজন রেকারম্যান নিম্নে ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা নির্দিষ্ট টার্গেট পূরণ করতে অসহায় গরীবদের জোড়পূর্বক অটো রিক্সা / রিক্সা / ইজিবাইক আটক করে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে কিংবা বক্সের পাশে নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করে আসছে প্রকাশ্যেই । কেউ কি কোন দিন হিসেব নিয়েছেন বিশাল এই চাঁদাবাজির কত টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে ? কেউ কোন দিন সাহস করে নাই ! কারণ সাংবাদিকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে। এই আইনের দোহাই দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। একজন কর্তার বায়রা ভাই নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিশাল অট্টালিকা কিনেছেন কোটি কোটি টাকায় । ৫ জন রেকারম্যান নিম্নে প্রতি মাসে ২৫ রাখ টাকা দিতে বাধ্য । আর ওই কর্তা মাদক ব্যবসায়ীর সাথে আপোষ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসপি হারুন দায়িত্ব পালনকালে একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর নাম মাদক মামলায় থাকার পরও ওই মাদক ব্যবসায়ীর এই নামে কাউকে খুজে পাওয়া যায় নাই মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে মাদক মামলা থেকে দায়মুক্তি দিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীর সাথে একসঙ্গে হাসতেও দেখা গেছে । এই হলো আমাদের শীর্ষ একজন কর্তার চরিত্র । আমার নাম প্রকাশ হলে আমার সার্ভিস বুকে লাল কালী বসিয়ে দিবেন তাই আমার বিশাল ক্ষতি করে ফেলবে । এই সার্ভিস বুকের কারণেই হাজারো অনিয়ম দূর্ণীর পরও কেউ মুখ খুরতেও সাহস করে না কেউ ।” ( এমন রেকর্ড রয়েছে সংরক্ষিত )
শহরের বেশ কয়েকজন অটো চালকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, সাংবাদিক ও ট্রাফিক পুলিশের সমন্বয়ে গড়া একটি সিন্ডিকেটকে টাকা দিয়ে তার স্বাচ্ছন্দ্যে শহরে অটো চালাচ্ছেন। তবে এখানে একজন প্রভাবশালী শ্রমিক নেতার নামও এসেছে। পুলিশ গত কয়েকদিন চালায় বিভিন্ন যানবাহনে কাগজপত্রহীন গাড়িতে অভিযান। মিডিয়াকে ডেকে নিয়ে ফটো সেশনের মধ্য দিয়ে চলে তাদের এ তথাকতিথ এ অভিযান।
নগরবাসীকে বোঝাতে চেষ্টা করছেন তারা খুব সক্রিয়া ভুমিকা রাখছেন যানজট নিরসনে। এ সকল অভিযানের নেপথ্যে রয়েছে নগরীর অবৈধ অটো চলাচল থেকে নগরবাসীকে দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। রাত ৯টার পরে শহরের চাষাঢ়ার শান্তনা মার্কেটের সামনে দেখা যায় এলোপাথারী অটো রেখে রাস্তা বন্ধ করে তারা যাত্রী তোলার কাজে ব্যাস্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে অটোচালকরা সংবদ্ধ হয়ে তেড়ে আসে। অথচ এই স্পট থেকে মাত্র ১৫ গজ দূরত্বে রয়েছে পুলিশ বক্স। রাতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দেখা না গেলেও দেখা মেলে তাদের সহযোগি কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের। তারা বেশ খোশগল্পে মসগুল অটো চালকদের সঙ্গে।
এতো ঘটনার পরও একেকজন রেকারম্যানকে কঠোর নজরদারী করলেই অটো রিক্সা / ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও ইজি বাইক থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে তার অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যাবে। এটিএসআই হাসান আর এটিএসআই শফিকের কাছে থাকা হাজার হাজার অটো চালক আর অটো মালিকদের নাম / নাম্বারযুক্ত মিনি ডায়রী পাওয়া গেলেই বেড়িয়ে আসবে সকল তথ্য। একই সাথে সকল রেকারম্যানেদের মুঠোফোন যাচাই করলেই পুরো চাঁদাবাজির ফিরিস্তি পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা । আর নারায়ণগঞ্জে কর্মরত অনেকেই আছেন, যারা দায়িত্ব নিয়ে প্রমাণসহ বলতে পারবেন কি পরিমাণ চাঁদা আদায় ও বন্টন চলছে অবিরামভাবে। কিন্তু যারা এই চাঁদাবাজির প্রমাণ করবেন তাদের রক্ষা করবেন কে ? আর এই চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে বন্ধ হবে না নগরীর যানজট ।








Discussion about this post