“কুখ্যাত অপরাধী সিদ্ধিরগঞ্জের নানা অপকর্মের হোতা কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও মূলত এই ঘটনায় মতির টিকিটিও স্পর্শ করতে পারবে না কেউ। উল্টো এই অভিযোগের কারনে অভিযোগকারী আরো খেশারত দিতে হবে । এর কারন হলো এই অভিযোগে মামলা দায়ের হবে না নানা কারনে । আর মতি একদিকে শাসক দলের রাজনৈতিক নেতাদের শেল্টার, অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাসোহারা গ্রহণসহ বিশেষ পেশার লোকজনের কারণে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে মতি। সকল অপরাধী সাম্রাজ্য পরিচালনা করে এই কাউন্সিলর । সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সখ্যতা তো আছেই । তাইলে মতিরে ঠেকায় কে ? মতি অপরাধ সাম্রাজ্যের অপ্রতিরোধ্য এক নাম !”
(এমন মন্তব্য করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একজন কর্মকর্তা । তিনি ৪ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড আলাপকালে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি কোন কোন কর্মকর্তাকে মাস শেষে তেল চুরিসহ নানা অপকর্মের কারনে কত টাকা প্রদান করেন তার সামান্য ফিরিস্তি তুলে ধরেন)
শুক্রবার (৫ আগষ্ট) রাতে ইসমিতা এন্টারপ্রাইজের মালিক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক মো: লিটন (৩৮) বাদী হয়ে কাউন্সিলর মতিসহ ১৮ জন ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলো, আদমজী আইল পাড়া এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান মতি (৫৫), মৃত করিমের ছেলে মো: আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার (৩২), মো: ইউসুফ মিয়ার ছেলে গ্যাস মিজান ওরফে টুন্ডা মিজান (৩৬), ইউসুফ আলী প্রধানের ছেলে মো: মান্নান ওরফে মাদক মান্নান (৩৮), মৃত ইউসুফের ছেলে জীবন (৩০), ভাংগারী বাবুলের ছেলে হৃদয় (২৮), মৃত আতাউর মাষ্টারের ছেলে মো: মামুন ওরফে ভাগিনা মামুন (৩৮), মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে ইকবাল (২৮), মো: আসলামের ছেলে হিরা (৩০), অফিস বাবু ওরফে ইয়াবা বাবু (৩০), রুবেল (৩২), মৃত কালু মিয়ার ছেলে শামীম (২৯), মো: রুহুলের ছেলে সাগর (৩০), সুলতানের ছেলে শাহ আলম (২৮), জাকারিয়ার ছেলে নুর হোসেন (২৫), মুসলিমের ছেলে মিজান ওরফে ভাগিনা মিজান (৩৩), মোস্তফা বাবুর্চীর ছেলে বশির (৩০) ও মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে রবিন (২৬)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আদমজী ইপিজেডস্থ চার্মিং ফ্যাক্টরীর এনএস কন্সন্ট্রাকশন এর সাপ্লাইয়ার ইসমিতা এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোঃ লিটন ও তার বন্ধু মোঃ সেলিম মজুমদার গত বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) দুপুরে আদমজী ইপিজেডস্থ চার্মিং ফ্যাক্টরীর ভিতরে প্রবেশ করলে অভিযুক্তরা এসে ভুক্তভোগীদের কাছে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এবং অভিযুক্তরা বলেন ইপিজেডে ব্যবসা করতে হলে চাঁদা দিতে হবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
একপর্যায়ে অভিযুক্ত আক্তার ওরফে পানি আক্তার তার প্রাইভেটকার যোগে দেশীয় অস্ত্র সুইচ গিয়ার, দা, লাঠি, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে ইপিজেডের ভিতরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষন পর ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেলযোগে কয়েকজন যুবক উপস্থিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ১নং অভিযুক্তের হুকুমে সকল অভিযুক্তরা মিলে ভুক্তভোগীদের এলোপাথারী ভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করে। এবং অভিযুক্ত হৃদয় ও গ্যাস মিজান তাদের হাতে থাকা হকিস্টিক, লোহার রড দিয়ে ভুক্তভোগী লিটন ও সেলিম মজুমদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে মারাত্মক গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে।
এসময় ভুক্তভোগী সেলিম মজুমদারের পকেটে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে তাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সকল অভিযুক্তরা ইপিজেডের ভিতরে পূনরায় দেখতে পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে চলে যায়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, একই দিন বিকেলে ইপিজেডের ভিতরে হামলার ঘটনার জের ধরে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার আক্তার ওরফে পানি আক্তারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের অফিস ব্যাপক ভাংচুর করে। এসময় অফিসে লাগানো বঙ্গবন্ধুর ছবি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি, এমপি শামীম ওসমানের ছবি ও থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাকর্মীদের ছবি ভাংচুর করাসহ অফিসে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে হার্ডডিস্ক ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং অফিস ভাংচুর করে অফিসের কেবিনেটের ড্রয়ারে থাকা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা অভিযুক্তরা নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম বার বলেন, হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী লিটন থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান ওসি।









Discussion about this post