একের পর এক সবজীর ট্রাক রাত ১১ থেকে শুরু হয়েছে । সারারাত ই চলে বাজারের হৈ হুল্লুর । নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে দিগুবাবুর বাজারের পাইকারী আড়তের জন্য সবজিবাহী ট্রাকগুলো আসতে শুরু করেছে। একেকটি ট্রাকে একেকটি পন্য । কোনটিতে পেপে, কোনটিতে শশা, কোনোটায় ঝিঙে, কোনোটায় পটোল, আবার কোনোটায় একাধিক ধরনের সবজি।
বগুড়া থেকে ট্রাকচালক হোসেন মিয়ে নিয়ে এসেছিলেন ঢ্যাঁড়স, করোলাসহ বিভিন্ন সবজি। তিনি জানালেন, বগুড়ার থেকে আসতে তাঁর সাড়ে তিন টন ক্ষমতার ট্রাকে ডিজেল খরচ হয়েছে ৯০ লিটারের মতো (আসা-যাওয়া)। সরকার নির্ধারিত নতুন দামে ডিজেল কিনতে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ২৬০ টাকা, যা এক দিন আগের তুলনায় ৩ হাজার ৬০ টাকা বেশি।
এই ট্রাকচালকের ভাষ্য অনুযায়ী, বগুড়া থেকে ঢাকায় সবজি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সাড়ে তিন টন ক্ষমতার একটি ট্রাকে ভাড়া বেড়েছে তিন হাজার টাকার মতো। এত দিন ভাড়া ছিল ১২ হাজার টাকার আশপাশে। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর নেওয়া হচ্ছে ১৫ হাজার টাকার মতো।
বাজারের সামেন অসংখ্য ট্রাক। গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে রোববার ভোর ৫টা পর্যন্ত থেকে ট্রাকচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর বিভিন্ন রুটে ট্রাকভাড়া ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর প্রভাব পড়েছে সবজির দামেও। পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। কম দামি সবজিগুলোর দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা এবং বেশি দামের সবজির দাম ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে খুচরা পর্যায়ে। এর পুরোটাই যে ট্রাকভাড়ার কারণে, তা নয়, চাহিদা ও সরবরাহের বিষয়টিও রয়েছে। ব্যবসায়ীরা এও বলছেন, তাঁদের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে। এ কারণে তাঁরা একটু বেশি দাম নিচ্ছেন।
জনপ্রিয় সবজি বেগুনের উদাহরণটি দেওয়া যাক। নগরীর রেল লাইন বাজার, কালীর বাজার, মাসদাইর বাজার, বাবুরাইল বৌ বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দুই দিন আগেও এই বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা ছিল। একই সাথে যে পেপে গত কয়েকদিন পাইকারী বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা কেজি শশা বিক্রি হয়েছে (পইকারী) ৩০ টাকায় সেই শশা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে । আর পেপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে । এই পাইকারী বাজার থেকে কিনে নিয়ে খুচরা দোকানী প্রতিটি পন্যে ১০ – ১৫ টাকা বেশী দরে বিক্রি করছে । নিতাইগঞ্জ অস্তায়ী বাজারে রোববার সকালে শশা বক্রি হচ্ছে ৫০ টকায় । আর পেপে ৪০ টাকায় ।
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার অটো চালক মোস্তফা (৫০) প্রতিদিনে মতো সকাল সকাল শবজি কিনতে এসে বাড়তি মূল্য দেখে ধাক্কা খেয়েছেন । পেপে, শশা, ঢ্যাঁড়স, করোলা পরিমাণের তুলনায় কিছুটা কম কিনে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, “কই যামু আমরা ? কি খামু ? আমার বাড়িতে এক কেজি ঢ্যাঁড়স লাগে । সেখানে কিনলাম আধা কেজি । করল্লা লাগে আধা কেজি সেখানে কিনলাম ২৫০ গাম । আর কাঁচা মরিচ খাওয়া তো ছেড়েই দিয়েছি । নিম্নমনের কাঁচা মরিচের কেজিও এখন ২০০ টাকার কম না । আর ভালো মানের টা ৩০০ টাকা । তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে সকল কিছুতে দাম বাড়ছে । আর এই তেলে এখন জ্বলতেছে কাচা শবজিও ।









Discussion about this post