নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বন্দর উপজেলার সাবদী বাজারের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ যেই মামুন মিয়া অর্থাৎ দীঘলদির সালাউদ্দিন মিয়ার পোলা (পুত্র) কয়েক বছর আগেও বিদেশ থেইক্কা নিঃস্ব হইয়া দেশে ফিরা আসে। এরপর চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদের সামনের ফুটপাতে একটা টেবিল নিয়া ফ্যাক্সি লোডের দোকান দেয় ছোট্ট কইরা । এরপর কয়েকদিন পর শুনি মামুন নাকি বিশাল বড় সাংবাদিক। তার বাড়িতে অনেক ওসি, দারোগা, ডিবি পুলিশের অফিসাররা অনেকেই প্রায়ই আসে। আবার দাওয়াতও খায় কয়েকদিন পর পর। এমন অনেক ওসিদের সাথে ছবি, অপরাধীদের সাথে ছবি তুইল্লা ফেসবুক ও দেখা গেছে। এই মামুন মেম্বারী ইলেকশনও কইরা ফেল করছে। সে এখন নাকি কোটিপতি। পুলিশ ছাড়াও অফিসারদের ভীড় প্রায়ই দেখা যায় মামুনের বাড়িতে। তার বাড়িতে অনেক বড় বড় অপরাধীদের ও আনাগোনা দেখা যায় । বৃদ্ধ প্রাণ বল্লবকে মারপিট করার পর এই মামুন মিয়াকে নাকি পুলিশ নিয়ে গেছিলো আবার ওই ওসিদের তদ্বির ছাইরাও দিছে। এমন ঘটনায় এই মামুনের বিরুদ্ধে এই অসহায় পরিবার কেমনে কি করবো ?”
( ২ ঘন্টা ২৪ মিনিটের আলোচনায় সাবদী বাজারের লোকজন এ সময় মামুন মিয়ার বিশাল ফিরিস্তি তুলে ধরে ধরেন।
বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পরও সন্ত্রাসীদের ভয়ে এখন আর মুখ খুলতেও রাজি হচ্ছে না বন্দর উপজেলার সাবদি – দীঘলদী ঝাড়তলার নিহত প্রাণ বল্লব সরকারের পরিবারের সদস্যরা । তাদের বক্তব্য : “আমাদের তো এখানে থাকতে হবে।” আমাদের বাড়ি ঘর ছাড়া করবে বলেও হুমকি দিয়েছে বৃদ্ধ প্রাণ বল্লব সরকার (৬৫) এর উপর হামলাকারী মামুন মিয়া সহ তার পরিবারের সদস্যরা।
একই সাথে স্থানীয় মাস্তান ও মাবতাব্বর শ্রেণীর লোকজন জোড় পূর্বক সালিশী নামে প্রহসনের মাধ্যমে নিহতের পরিবারকে ৩ লাখ টাকায় প্রাণ বল্লব সরকারের উপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার মীমাংশা করবে বলে পুরো বন্দর উপজেলায় জোড় গুঞ্জন উঠেছে।
বন্দর থানা পুলিশের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছেন, ঘাতক মামুনের পক্ষে স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি (কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যান), কয়েকজন স্থানীয় বিশেষ পেশার লোকজন এবং বন্দর থানার পুলিশের চার জন কর্মকর্তা লোমহর্ষক এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘটনার পর থেকে দৌড়ঝাপ চালিয়ে যাচ্ছে ।
শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) বিকেলে নিহতের পুত্র এবং সাংবাদিক মামুনের বিরুদ্ধে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার মামালার বাদী সমভু সরকার নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, রোববার স্থানীয় লোকজন এই ঘটনা নিয়ে সালিশী করবে । আমরা অসহায় ।
এমন অসহায় পরিবাররের পাশে কোন অবস্থাতেই নারায়ণগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেউ পাশে এসে দাড়ায় নাই। আর বন্দর থানা পুলিশ তাদের দ্বায় এড়াতে ৩০৬ ধারায় মামলা গ্রহণ করলেও মূলতঃ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ব্যাপক তদ্বিরে আসামী গ্রেফতার না করে উল্টো আসামী মামুনের সাথে শ্বশান ঘাটে দাড়িয়ে চা সিগারেট পান করার পাশাপাশি হাাসি ঠাট্টা করার দৃশ্য দেখে নিহতের পরিবার আরো আতংকিত হয়ে পরে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে থেকে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয় সালিশীর সকল কিছু নির্ধারণ হয়ে গেছে। আগামীকাল রোববার বিকেলে শুধু টাকা লেনদেন হবে । বাধ্য হয়েই এই ঘটনা মেনে নিতে হচ্ছে নিহত প্রাণ বল্লব সরকারের পরিবারকে। তিন লাখ টাকা নিহতের পরিবারকে আর ৫ লাখ টাকা পুলিশ – সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে দেয়া হবে ঘাতক মামুনের পক্ষ থেকে। এমন সালিশীতে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীর নাম ব্যাপকভাবে প্রচার হলেও তারা নিজেদেরকে এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নন বলে জানান ।
সালিশীর বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে নিহত প্রাণ বল্লব সরকার (৬৫) এর অসহায় সন্তান সম্ভু বল্লব সরকার শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন , আগামী কাল রোববার সালিশী বসবে । কারা বসবেন এই সালিশীতে ? এমন কয়েকটি প্রশ্নে সম্ভু সরকার নিজেকে অসহায় বলে মন্তব্য করে তিনি কোন অবস্থাতেই মুখ খুরতে চান নাই।
এমন অসহায় পরিবারটির পাশে নারায়ণগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেউ নাই কেন এমন প্রশ্নে এই সংঘঠনের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমদের কেউ ডাকেন নাই তাই এই বিষয়ে আমরা কেউ জানি না কিছু । তবে এ বিষয়ে খেজ নিয়ে দেখছি বলে মন্তব্য করেন।









Discussion about this post