রোববার দুপুর ১২টা ৪২ মিনিট। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্মনিবন্ধনের কাজ করতে এসে অফিস বন্ধ পেয়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা
ঘড়িতে তখন সকাল ১১টা। বিএডিসি কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ঝুলছিল তালা। ফটকে অফিসের বিজ্ঞপ্তি দেখে সেখানে থাকা ফোনে কল করেন প্রতিবেদক।
অপর প্রান্ত থেকে কার্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান পরিচয় দেন মো. আরিফ হোসেন।
তিনি দাবি করেন, সপ্তাহে দু’দিন কার্যালয় খোলা থাকে।
তবে স্থানীয়দের ভাষ্য, এক বছর ধরে কার্যালয়টি বন্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বিএডিসি কার্যালয়ের রোববারের চিত্র এটি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি সরকারি কার্যালয় ঘুরে সরকারের বেঁধে দেওয়া নতুন সময়ে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি অনেককে।
অফিস খোলা হয়নি- এমন কথা সঠিক নয় বলে দাবি করেন বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁদের অফিস ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে ।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে সরকার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস কার্যক্রম চালু করে গত বুধবার থেকে।
গতকাল সকাল ৯টায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কর্মচারীরা উপস্থিত আছেন। নেই কর্মকর্তা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের নৈশপ্রহরীর দাবি, তাঁর স্যার মাঠে গেছেন। কর্মকর্তা মো. রূপক মিয়ার দাবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নিয়মিত নাসিরনগরে এসে অফিস করেন।

সকাল ১০টায় সামাজিক বনায়ন নার্সারি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের দরজা-জানালা বন্ধ। স্থানীয়দের ভাষ্য, অফিস কখন খোলা হয় আর বন্ধ হয়, সেটা তাঁরাই বলতে পারবেন। উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়ও বন্ধ দেখা গেছে। কর্মকর্তাদের ফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোনাব্বর হোসেন বলেন, নির্ধারিত সময়ে অফিস বন্ধ থাকা দুঃখজনক।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা আবুল কালাম। তিনি গতকাল তাঁর ছেলের জন্মনিবন্ধন সংশোধন করার জন্য উপজেলায় আসেন। তাঁর দাবি, অফিসের সামনে দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছেন; কিন্তু দেখা পাননি কোনো কর্মকর্তার।

গন্ধর্বপুর এলাকার রুবি আক্তার এসেছেন মেয়ের জন্মনিবন্ধন সংশোধন করাতে। তিনি বলেন, ‘আড়াই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি।’ তাঁদের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছিলেন জাঙ্গীর এলাকার সোহান, রূপসী এলাকার সাহিদাসহ অনেক নারী-পুরুষ।
ইউএনওর পক্ষ থেকে জন্মনিবন্ধন সংশোধন করেন টেকনিশিয়ান জাহিদুল ইসলাম। সকাল ১১টায় তাঁর কক্ষটি না খোলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
একপর্যায়ে ইউএনওর কাছে যান তাঁরা। তাঁদের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদেও হয়রান হয়েছেন তাঁরা।

দুপুর ১টার দিকে ইউএনও ফয়সাল হক বলেন, সার্ভার ও টেকনিশিয়ানের কিছু ত্রুটি রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। অফিস বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, জাহিদকে ত্রুটি সমাধানের জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।
সূত্র৷ : সমকাল









Discussion about this post