মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার দিনই যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
ওইদিন দুপুরে কমিটি ঘোষণার পর বিকেলে কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক পদ থেকে আবুল কাউসার আশা পদত্যাগের ঘোষণাদের । যিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন ।
আতাউর রহমান মুকুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি মহানগর বিএনপির কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। কমিটিতে আমাদের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ণ করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে কোনো রকম পরামর্শ না করেই কমিটি দেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানেন না টাকা খেয়ে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আতাউর রহমান তার ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, শহীদ জিয়ার চেতনাকে ধারণ করে এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে বলতে চাই, সদ্য নারায়ণগঞ্জ মহানগরের যে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে আমি পদত্যাগ করছি। কেননা আমি আমার ত্যাগী নেতাকর্মী ভাইদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে এমন কোনো পদ-পদবি চাই না যা আমাকে নিজের কাছেই নিজেকে দুর্বল করে তুলবে।
তিনি আরও লেখেন, শত বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে আজীবন ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো এবং শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের আদর্শে খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তারেক রহমানের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবো।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে ভাতিজা আবুল কাউসার আশা নতুন কমিটির পদ থেকে পদত্যাগের পরে চাচা আতাউর রহামান মুকুল পদত্যাগ করায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়ায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী সমালোচনা করে বলেছেন, “মহানগরীতে কি ত্যাগী ও আপোষহীন নারায়ণগঞ্জে স্থায়ী বাসিন্দা নেতার অভাব পরেছে ? যার কারণে বহিরাগতদের নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বিএনপির দায়িত্ব দিতে হবে ? যাদের কোন দরদ নাই নারায়ণগঞ্জের প্রতি । স্বার্থ হসিল করতেই এই নেতারা বিএনপির সাথে যুক্ত রয়েছে । আর নেপথ্যে শাসক দল আওয়ামীলীগের দালালী করেই টিকে আছে নারায়ণগঞ্জে । প্রমাণ স্বরূপ ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই নেতারা কি করেছে তা তো অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুই প্রকাশ করেছেন। কার কাছে থেকে টাকা নিয়ে নির্বাচন করে আইভীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তা তো নারায়ণগঞ্জ বাসী জানেন ই ।
২০১৬ সালের নাসিক নির্বাচনের পর পর বিএনপির নেতারা ই কঠোর সমালোচনা করে মন্তব্যের আংশিক নিম্নে দেয়া হলো :
নির্বাচনে প্রভাবশালী পরিবারের কাছ থেকে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের ২ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু । এ অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৭ জুন শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতা মোঃ আবদুল মজিদ বিবৃতিতে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২ কোটি টাকা গেল কই ? টাকা নিয়ে ভাগভাটোয়ারায় কি খেয়ে ফেললো কারা ? আবু আল ইউসুফ খান টিপু ভাষ্য মতে সাখাওয়াত হোসেন খান নাসিক নির্বাচনে ওসমান পরিবারের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা পেয়েছে। অপর দিকে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ২ কোটি সাথে আরো ৩০ লাখ টাকা টাকা সাখাওয়াত পেয়েছে । আসলে টাকা পেয়েছে কত সাখাওয়াত ? এই টাকা বিষয়ে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার-আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানে কিভাবে ? তাহলে কি তারা টাকা ভাগবাটোয়ারা অংশে ছিলেন ?
২০১৭ সালের ১৪ জুন (বুধবার) বিকেল ৩ টায় এক টক টক শোতে টিপু চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “পবিত্র মাহে রমজানে আমি চ্যালেঞ্জ করলাম সে ২কোটি টাকা নিয়েছে আমার কাছে অস্বীকার করুক। আর ২৫ লাখ টাকা যে নিয়েছে তা সে নিজে আমার কাছে বলেছে। আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে সময় হলেই পাবেন। আর প্রভাবশালী মহলকে আমি ভয় পাইনা। আমার সাথে শামীম ওসমানের সরাসরি রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছে, এটা কিন্তু আমি তার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি।”
আবু আল ইউসুফ খান টিপুর এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্যের পাশাপাশি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের প্রতি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও এমন চ্যালেঞ্জের পর সাখাওয়াত হোসেন খান আজো পর্যন্ত এমন টাকা গ্রহণের বিষয়ে আর কোন কথা বলেন নাই । উল্টো সব সময় সাখাওয়াত হোসন খান আর আবু আল ইউসুফ খান টিপু মিলেমিশেই রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। যার ফল এই নতুন কমিটি বলেও মন্তব্য করছেন নেতাকর্মীরা ।








Discussion about this post