দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধুদের স্মার্ট ফোন দিয়ে টিকটক করে চরমভাবে আশক্ত হয়ে পরে অন্তর। আর এই নেশা থেইক্কাই প্রতিদিন বারবার টাচ (স্মার্ট) ফোন কিন্না দিতে বাবা ও মাকে চাপ দেয় এই অন্তর। দরিদ্র এই সংসারে কোন মতে খাবার জোটাতেই হিমশিম খাইতে হয় সেইখানে এই টাচ মোবাইল কিনমু কেমনে । অন্তরের বাবা তো জুয়ারী আর নেশাখোর। কোরবানীর মাংশ টোকাইয়া হেই মাংশ দুই নম্বর রেল গেইটে বেইচ্চা নেশা করছে আর জুয়া খেলছে। আমি কই থেইক্কা পরের বাসায় কাম কইরা টাচ মেবাইল কিন্না দিমু । হেরপরেও কইছি কয় দিন সবুর (সহ্য) কর কিন্না দিমু তোরে টাচ মোবাইল। সবুর হইলো না আমার জাদুটার । ফাঁসি দিয়া চইল্লা গেলো।
এভাবেই নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে বিলাপের (কান্না) সাথে এমন মন্তব্য করেন নিহত কিশোর রাকিব হাসান অন্তরের (১৭) মা আইরিন বেগম।
রাকিব হাসান অন্তরের টাচ মোবাইলের আবদার পূরণ করতে না পারায় বাবা- মায়ের সাথে অভিমান করে সিলিং ফ্যানের সাথে মায়ের ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাকিব হাসান অন্তর (১৭) নামের এক কিশোর।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাতে ফতুল্লা মডেল থানার পশ্চিম দেওভোগ ফারুকের বাড়ীর দ্বিতীয় তলায়।
নিহত রাকিব হাসান অন্তর ফতুল্লা মডেল থানার পশ্চিম দেওভোগ ফারুকের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মো. মহসীনের পুত্র। ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।
অপমৃত্যুর মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, নিহত কিশোর রাকিব হাসান অন্তর উত্তর নরসিংপুরস্থ জাজেজ ডাইং কারখানায় হেলপার হিসেবে কাজ করে আসছিলো। ৭-৮ দিন পূর্বে একটি টাচ্ মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্য বাবা- মায়ের নিকট আবদার করেছিলো। তখন বাদী ও তার স্ত্রী নিহত রাকিব হাসান অন্তর কে বলে যে সবে মাত্র ঈদ শেষ হয়েছে।হাতে টাকা নেই। কয়েকদিন পর মোবাইল ফোন কিনে দিবো। রোববার সকাল নয়টার দিকে বাদীর স্ত্রী তার বোনের বাড়ীতে বেড়াতে যায়। বাদী একই সময়ে নিজ কর্মস্থলে চলে যায়। নিহত রাকিব হাসান অন্তর সারাদিনই বাসায় ছিলো। মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ার রাগে ও ক্ষোভে বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার মধ্যে নিহত রাকিব হাসান অন্তর ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় মায়ের ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। রাত আটটার দিকে বাদী বাসায় ফিরে এসে দেখতে পায় গলায় ফাঁস লাগানো ছেলে রাকিব হাসান অন্তরের ঝুলন্ত দেহ।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আজম মিয়া জানায়,বাবা- মায়ের সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে । এবিষয়ে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে ।
নিহত কিশোরের মা আরো জানায়, আমি আমার পোলার লাশ কাটাকাটি করুক তা চাই নাই । কিন্তু আমাদের বাড়িওয়ালা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ো পুলিশ আনাইয়া আমার জাদুর লাশ এইখানে নিয়া আইছে।









Discussion about this post