আড়াইহাজার থেকে নদীপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে গত দুই দিনে ৯ যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাদের পরিবারের কাছ চার লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে আসছে মানব পাচারকারী একটি চক্র।
একের পর এক মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
শনিবার (২২ জুলাই) অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
ওকাপ জানায়, নিখোঁজদের মধ্যে ৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন- কল্যাণদী শখবাড়ি এলাকার ইকবালের ছেলে নাজমুল হাসান, সামছুদা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া, আবদুল হান্নান মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ মিয়া, রিপন মিয়ার ছেলে হালিম মিয়া, মজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ মিয়া ও মিছির আলীর ছেলে শাহীন আলী।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের কল্যাণদী, বিলপাড়, শখবাড়ি, রঘুনাথপুর, খাজপাড়া ও জাকারদিয়া গ্রামের ৯ যুবক নদীপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। পরিবারের সদস্যদের কিছু না জানিয়েই তারা বাড়ি থেকে চলে গেছে। বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর ফোনের মাধ্যমে একটি চক্র তাদের পরিবারের কাছে জনপ্রতি ৪ লাখ টাকা করে দাবি করছে।
নিখোঁজ হৃদয়ের বাবা সামছুদা বলেন, গত দুদিন ধর আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। নাম পরিচয় গোপন রেখে এক লোক ফোন করে বলে, ৪ লাখ টাকা দিলে আমার ছেলেকে ছেড়ে দিবে। টাকা না দিলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে বলেছে। আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রােগ্রাম (ওকাপ) কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, আমরা নিখোঁজদের তালিকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানোর কথা বলছি। সেই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে থানায় জিডি করার কথা বলেছি। তাদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমাদের যা যা করণীয় সবই করব।
আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক আহাম্মদ বলেন, আমরা অনেক দিন ধরেই মানব পাচারের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছি। সম্প্রতি ৯ জন নিখোঁজের কথা শুনছি। আমরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এর আগে মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে আড়াইহাজারের ১২ যুবককে মিয়ানমারের জেলখানায় বন্দি রাখার ঘটনায় তাদের মুক্তির দাবিতে গত ১১ জুলাই আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা।









Discussion about this post