নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানা এলাকার রাজনৈতিক নানা সমিকরণে মনিরুল আলম সেন্টুর নাম কারো অজানা নয় । এই সেন্টু বিএনপির ঝান্ডা উড়িয়ে সকলকে টেক্কা দিয়ে দাপটের সাথে আওয়ামীলীগের সকল নেতাদের টপকিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন বারংবার। সবশেষ বিএনপি ছেড়ে নাটকীয়ভাবে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে মনিরুল আলম সেন্টু তার চেয়ার টিকিয়ে রাখেন হাজারো বিতর্কের পরও।
তিনি স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ এমন প্রচারও চালান তার নিজস্ব প্রচার মাধ্যম । এতো সুণাম- দূর্ণাম, আলোচনা সমালোচনা, হাজারো বিতর্কের পর এবার সেই কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী মুজাহিদ মাদকসহ ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতারের খবরে সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
গত শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বন্দর থানার মদনগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃতের নিকট থেকে ৬০ বোতল ফেনসিডিল ও ১ শত পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। একই সাথে মাদক বহনে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মুজাহিদের সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রেফতারকৃত মুজাহিদ কুতুবপুরের তুষারধারা,গিরিধারা, শহীদ নগর, আদর্শ নগর এলাকার মূর্তিয়মান আতঙ্কে পরিনত হয়েছে। সহযোগী মিজান, রায়হান, ছাইফুল, জাহিদ,আদর,মৃদুল,লিটন,শাহীন,সাগর,রাতুল, আকাশ,সজিব,ইমন,তানভীর,নয়ন, সম্রাট, অয়ন শতাধিক উঠতি বয়সি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পুরো কুতুবপুর দাবড়িয়ে বেড়িয়েছে। কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর সরাসরি শেল্টারে এই বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক ব্যবসা, নির্মাণ সামগ্রী কিনতে বাধ্য করাসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। শুধু সাধারণ মানষই নয়, এই বাহিনীর হাতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি কুতুবপুরের শহীদ নগর এলাকায় চাঁদার দাবীতে রিপন দাস ও তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত হত্যার চেষ্টা করে মুজাহিদ বাহিনী। বিশাল বাহিনী নিয়ে হামলা চালানোর একটি ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভাইরালও হয়। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের হলেও পুলিশ মুজাহিদকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গত ২১ আগস্ট রাতে চাঁদার দাবীতে কুতুবপুরের দৌলতপুরে ব্যবসায়ী ইব্রাহীমকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে মোজাহিদ বাহিনী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গাজী মুজাহিদ মোল্লা কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর সরাসরি শেল্টারে এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কিশোর এবং উঠতি বয়সের উশৃংখল যুবকদের নিয়ে বিশাল একটি বাহিনী গড়ে তুলে নানা ধরনের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ধুরন্ধর গাজী মুজাহিদ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে কখনো প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিদের সাথে, কখন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে কিংবা জনপ্রতিনিধিদের সাথে ফটোসেশান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে থাকেন। এই ছবিকে পুঁজি করেই নিজেকে বিশাল বাহিনী প্রধান হিসেবে আত্ম প্রকাশ ঘটিয়ে এলাকায় মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে।
এই বাহিনীর কাছে তুষারধারা, গিরিধারা, শহীদ নগর, আর্দশ নগর, নুরবাগ এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে পরেছে। মুজাহিদ বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপ দাবী করেছে ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক রুহুল আমীন জানান, মুজাহিদের সহযোগীদের গ্রেফতার করতে কাজ করে যাচ্ছি, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
রুহুল আমিন আরো বলেন, মামলাটি এখন তদন্ত করছেন ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক কাজী ফেরদৌস । এই মাদক ব্যবসায়ীকে গত রোববার আদালতে পাঠানোর পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরো তথ্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ ।
কুতুবপুরের অনেকের প্রশ্ন : মাদকের এমন ভয়াবহ অবস্থার কারণে কুতুবপুর এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ? এর দায় কে নেবে ? বিগত সময়ে বিএনপি করার কারণে আইনশৃংখলা বাহিনী সেন্টুর কথা শুনতো না এমন অজুহাত দিলেও এখন কি বলবেন এই আওয়ামীলীগের নব্য চেয়ারম্যান ? মাদকের এমন ভয়াবহতার জন্য কি নিজে দায় স্বীকার করবেন সেন্টু ? গাজী মুজাহিদ মোল্লা কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর শেল্টারে মাদকের ডিলারে পরিণত হয়েছে কি করে অস্বীকার করবেন সেন্টু ! এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর কাছে চান এলাকাবাসী।









Discussion about this post