চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বদলী হন মহা দূর্ণীতিবাজ উপ পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন । তার বিরুদ্ধে পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলায় গার্মেন্টস, ডাইং কারখানা ইটিপি বন্ধ রেখে পরিবেশ ধ্বংস করতে সকল কল কারখানা, ইট ভাটা, মিল ফ্যাক্টরি, ক্লিনিকসহ পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রিত সকল প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত মাসোহারা আদায়ের অভিযোগ ছিলো জোড়ালোভাবে ।
মহা ধুরন্ধর এই কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন কখনো বিগত সময়ের জেলা প্রশাসক, কখনো স্থানীয় সংসদ সদস্য, সংসদ সদস্যের প্রভাবশালী পুত্র, জুডিশিয়াল একজন ম্যাজিস্ট্রেট, কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ব্যবহার করে কয়েকজন ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে পুরো জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ ধ্বংস করে গেছেন। পরিবেশের এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে নিজের পকেটে ভারী করতে কয়েকজন বিশেষ পেশার দালাল নিয়মিত লালন পালন করতো।
নারায়ণগঞ্জের পরিবেশের এমন ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত এই সেপ্টেম্বর থেকে জেলা থেকে বিদায় নেন সেই দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন । আর একই পদে অধিষ্ঠিত হন আরেক উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান ।
হাফিজুর রহমান নারায়ণগঞ্জ জেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্ব গ্রহন করে নগরীর সৈয়দপুর পাঠাননগর এলাকার রহমান স্টোরের মালিকানাধীন বাড়িতে স্থাপিত অবৈধ পলিথিন কারাখানায় অভিযান চালিয়ে দুই ট্রাক ভর্তি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দের পর কয়েকজন কর্মচারীদের কারাদণ্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় ওই অবৈধ নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরির কারখানার মালিক রাজিব দাস ও সবুজ পালিয়ে যায়।
অভিযানের পর সেই কুখ্যাত অপরাধী রাজিব দাস ও সবুজ গোপনে সেই পরিবেশ অধিদপ্তরের পুরানো অসাধু কর্মকর্তা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কর্মচারী আতাউর রহমানের মাধ্যমে নানাভাবে লিয়াজো করে সেই অবৈধ নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরির কারখানা তিন দিনের ব্যবধানে আবার চালু করে ।
সবুজ – রাজিব দাসের মতো আরো কয়েকজন অবৈধ নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসায়ী গোপাল, লিটন, মানিক, মাসুম, নারায়ণ, ওবায়েদ, বিপ্লব, রুবেল, সায়েম, সাকিল, শ্যামল, ভোলাসহ অনেকেই থানার ওসি, ডিবি পুলিশের ওসিকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে ।
আর মাসোহারা আদায়কারী পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ থানার ওসি ও ডিবি পুলিশের ওসিকে বিগত সময়ে এমন প্রশ্ন করা হলে সকলেই একবাক্যে অস্বীকার করে বলেন, ‘এই নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানার কোন খবর ই আমার / আমাদের জানা নাই ।’
চোখো আংগুল দিয়ে এমন নিষিদ্ধ অপরাধের চিত্র দেখিয়ে দিলেও নানাভাবে টালবাহানা করে অসাধু উচ্ছিষ্টভোগী ওই কর্মকর্তারা ।
নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের নতুন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান যোগদান করে ই একটি নিষিদ্ধ পলিথিন কারাখানায় অভিযানের ১৫ দিন পর এবার বায়ু দূষণকারী তিনটি কারখানাকে ৬ লাখ টাকা ও শব্দ দূষণকারী দুটি কারখানাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় বন্দরের দেওয়ানবাগ এলাকার মেসার্স বিক্রমপুর রি রোলিং মিলস (প্রা.) লিমিটেডকে ২ লাখ টাকা, সোনারগাঁয়ের মৃধাকান্দি এলাকার এইচ কে জি স্টিল মিলস লিমিটেডকে ২ লাখ টাকা ও রূপগঞ্জের রূপসী এলাকার জিংডা ইন্ডাস্ট্রিজ কো. লিমিটেডকে ২ লাখ জরিমানা করা হয়।

একইসঙ্গে শব্দদূষণের অপরাধে মেসার্স বিক্রমপুর রি রোলিং মিলস (প্রা.) লিমিটেডকে এবং এইচ কে জি স্টিল মিলস লিমিটেডকে ৫ হাজার করে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ দূষণকারী কারখানা কিংবা প্রকল্পের বিরুদ্ধে আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় এমন অসাধু কর্মকর্তাদের নানা কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নগরীর অনেকেই বলেন, দূর্ণীতি কি আসলেই বন্ধ হবে ? এক কুখ্যাত দূর্ণীতিবাজ মামুন বদলী হলেও নতুন হাফিজুর কি সততার লেষমাত্র দেখাতে পারবে ? নাকি ‘যেই লাউ সেই কদু’ ই দেখতে হবে জেলাবাসীদের ? হাফিজুর কি মামুনের চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে ? এমন অসংখ্য প্রশ্ন করে, কেউ কেউ আরো বলেন, নগরীর বিজ্ঞজনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এখন হাফিজুরের দিকে ।









Discussion about this post