বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান খান বলেছেন, “আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে যদি এত উন্নয়ন করে থাকে, তাহলে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পায় কেন? সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে অভিনন্দন জানাবেন বলে জানান বিএনপির এই নেতা।
আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভুঁইগড় রঘুনাথপুর এলাকায় এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মঈন খান।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে এক দফা দাবিতে ওই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
সমাবেশের অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা–কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগদান করেন। সমাবেশে নেতা–কর্মীদের আগমনের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নারায়ণগঞ্জমুখী অংশে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
আবদুল মঈন খান বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করে এ দেশে একবার বাকশাল কায়েম করেছিল। আজকে নতুন করে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। যে সরকার মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে নিয়েছে, সেই সরকার কোনো দিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এই সত্য শুধু বাংলাদেশে নয়, মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে এই স্বেরাচারী সরকারের মুখোশ খুলে গেছে। এ সরকার মেগা উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির কী অবস্থা করেছে আজ। মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ দেশের ৪২ বিলিয়ন ডলার থেকে আজকে ২১ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে। এর জবাব সরকারকে দিতে হবে। এ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়কে লোপাট করে দিয়ে সরকার ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আইএমএফের কাছে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মঈন খান। তিনি বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। আজকে তাঁর চিকিৎসা পাওয়ার মৌলিক অধিকার হরণ করে মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করে তাঁকে আটকে রেখেছে সরকার।
জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান, বিএনপির সহ–আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু ইউসুফসহ অনেকে।
বিএনপি মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আমরা আন্দোলন করছি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। আওয়ামী লীগ যদি এত উন্নয়ন করে থাকে বাংলাদেশে, এত ভালো কাজ করে থাকে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায় কেন? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে আমিও তাদের অভিনন্দন জানাব।’
সোমবার রাজধানীতে এক সমাবেশে বিএনপিকে অপরাজনীতি, আগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতার রাজনীতি ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে ৩৬ দিনের সময় বেঁধে দেন (আলটিমেটাম) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর জবাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘পুলিশ–র্যাব ছেড়ে আসেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে খেলব। ৩৬ ঘণ্টা সময় দেন, কোথায় খেলতে চান, আমরা খেলব। পুলিশ–র্যাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন। আমরা খেলতে রাজি আছি ওবায়দুল কাদের। ওরা পুলিশ ও র্যাব নিয়ে যুদ্ধ করতে চায়, খেলতে চায়, ওই খেলা কি ফেয়ার খেলা হবে? এতই যদি শক্তিশালী হোন, মন্ত্রিত্ব বাদ দেন, পাবলিক হয়ে আসেন। আমরা খেলব।’









Discussion about this post