‘শর্ষের ভিতরে ভূত !’ ব্যাপকভাবে প্রচলিত এই প্রবাদটি আবারো প্রমাণ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তা হাইওয়ে পুলিশের ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাঈম মিয়া। যার প্রকাশ্য ঘৃন্য এবং নির্লজ্জ কর্মকান্ডে এলাকার সাধারণ মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে ।
মানুষ নির্লজ্জ কতটা হতে পারে তার প্রমান করেছে এই নাঈম মিয়া ৷
প্রতিদিন এই নাঈম মিয়ার নিম্ন ২০ হাজার টাকা তার পকেটে নিয়ে বাড়ি ফেরার (টার্গেট) লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে চিহ্নিত চাঁদাবাজদের সড়কে প্রকাশ্যে অপকর্ম করতে অনুমতি দেন এই কর্মকর্তা । অথচ খোদ হাইওয়ে পুলিশের আইজিপি সাহাবুদ্দিন খান অত্যান্ত সততা ও নিষ্টার সাথে সকল কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশ কোন অবস্থাতেই না মেনে চাঁদাবাজ বাহিনী নিজেই পরিচালনা করেই যাচ্ছেন নির্লজ্জতার সাথে।
রোববার চাঁদাবাজদের নিয়ে এমন ব্যানার ফ্যাস্টুন টাংগিয়ে নাটক মঞ্চায়নের পর ব্যাপক সমালোচনা হলেও তা কর্নপাত করেনি নাঈম মিয়া ।
সোমবার ২৩ অক্টোবর সকাল থেকেই ওই চাঁদাবাজচক্র ইন্সপেক্টর নাঈম মিয়ার টার্গেট পূরণ করতে পুরানো কায়দায় চালিয়ে যাচ্ছে অপকর্ম ।
জানা যায়, রূপগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পরিবহন খাত ও ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদা আদায়কারী চিহ্নিত ব্যক্তিদের নিয়ে নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের তথ্য পাওয়া গেছে।
গেলো রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকায় এর আয়োজন করে ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্প। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই অনুষ্ঠানে অন্তত আটজন এমন ব্যক্তি অংশ নেন, যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে জোড়ালোভাবে ।
এমন ঘটনায় রূপগঞ্জে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চাঁদাবাজদের সতর্ক না করে তাদের নিয়েই জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের অর্থই হচ্ছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ তামাশা করা।
মুকুল দেওয়ান নামের এক পথচারী বলেন, ভুলতা থেকে গোলাকান্দাইল পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর বাজার বসিয়ে চাঁদা আদায় চলছে। এসব দোকানের কারণে পথচারী ও যানবাহন ঠিকমতো চলাচল করতে পারছে না। সড়কের ওপর থেকে কাঁচাবাজার ও অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ না হলে সড়ক কখনও নিরাপদ হবে না।
ওই এলাকার শাহিন হোসেন বলেন, পুলিশের সঙ্গে যারা ব্যানার ধরে রেখেছেন, তাদের অনেকেই চাঁদাবাজ। কেউ ফুটপাতের দোকান, কেউবা অবৈধ স্ট্যান্ড, কেউ আবার যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করেন। অথচ হাইওয়ে পুলিশ তাদের নিয়েই জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের ব্যানার ধরিয়ে রেখেছে। এটিকে নিয়ম রক্ষার অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছেন তিনি।
তাঁর ভাষ্য, গোলাকান্দাইল থেকে ভুলতা পর্যন্ত অবৈধ বাজার ও স্ট্যান্ডের কারণে সড়ক সরু হয়ে পড়েছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভুগছে পথচারী। প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানি। তবু সতর্ক হচ্ছে না প্রশাসন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজন চাঁদাবাজের বিষয়ে তথ্য দেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা (হিউম্যান হলার) ও অটোরিকশার চালকরা। তবে কেউ নাম প্রকাশে রাজি হননি।
তারা জানান, অনুষ্ঠানের ব্যানার ধরে রেখেছিলেন বাবুল মিয়া। তিনি ইজিবাইক বা অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেন। এ ছাড়া রেন্ট-এ-কার বা ট্যাক্সি থেকে চাঁদা আদায়কারী মাসুম ও আওলাদ হোসেনও ছিলেন। এ ছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায়কারী সেলিম মিয়া, বাসের চাঁদা আদায়কারী জজ মিয়া ও যুব হোসেন, ভুলতা স্ট্যান্ডে লেগুনা থেকে চাঁদা আদায়কারী কাওসার হোসেন এবং গোলাকান্দাইল স্ট্যান্ডের লেগুনা থেকে চাঁদা আদায়কারী সোহাগ মিয়াকেও পুলিশের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। এ বিষয়ে কথা হয় সোহাগ, আওলাদ ও জজ মিয়ার সঙ্গে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে বলেন, অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তাদের ডাকা হয়েছে, যে কারণে গেছেন। সড়কে বা পরিবহনে চাঁদাবাজি করলে তো ডাকা হতো না।
তাদের ভাষ্য, অনেক সময় সড়কের যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশকে সহায়তা করেন। এর বিনিময়ে তারা টাকা-পয়সা নেন না। তারা চাঁদার টাকায় নয়, নিজ নিজ ব্যবসার টাকায় চলেন।
ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক নাঈম মিয়া বলেন, ‘অনুষ্ঠানের স্বার্থে সবাইকে নিয়েছি। স্থানীয় জনগণই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে।’ সেখানে তিনি কোনো চিহ্নিত চাঁদাবাজকে জায়গা দেননি, এমনকি ভবিষ্যতেও দেবেন না। তাঁর ভাষ্য, কারও বিরুদ্ধে রোডে চাঁদাবাজির সুস্পষ্ট অভিযোগ বা প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।









Discussion about this post