দীর্ঘদিন যাবৎ সর্বত্র ব্যাপকভাবে গুঞ্জন ছিলো নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাম ব্যবহার করে একটি চক্র নানা পন্থায় শত শত ইটভাটা, বিভিন্ন কল কারখানা, ডাইং ক্লিনিকসহ সকল ধরনের ব্যবসায়ীদের কে হয়রানী করে চাঁদাবাজির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর কাছে খবর আসে মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাঁদমারী এলাকার ফরিদা বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় কয়েকটি বিচার সালিসি বোর্ডের আয়োজন করা হয়েছে ।
এমন খবরে ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় সাধারণ দর্শকের ভূমিকায় অবস্থানকালে নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অফিস সহকারী তানিয়া আক্তার বসতে বলেন । এ সময় এই কার্যালয়ে কয়েকজন কে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে কার্যালয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামান।
মো: সেলিমুজ্জামান প্রবেশের আরো ১০ মিনিট পর খুব দম্ভ সহকারে অফিস কার্যালয়ের ভিতরের কক্ষে প্রবেশ করেন অপরিচিত এক মধ্যবয়সী পুরুষ । যেন তিনি কোন ম্যাজিস্ট্রেট । এমন ভংগিমার সরকারের এই দপ্তরে প্রবেশের পর অফিস সহকারী তানিয়া কে আগত ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলে তার নাম রাসেল তিনি সাংবাদিক। একই সাথে তানিয়া বলেন, আমাদের স্যার সেলিমুজ্জামান এবং এই সাংবাদিক কয়েকটি সালিসি বোর্ডের পরিচালনা করবেন, শুনানি করবেন, এরপর সিদ্ধান্ত দিবেন । অর্থাৎ বিচার বৈঠক শুরু হয়েছে।
এমন পরিচয় এবং ঘটনার পর বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
এক পর্বের সালিসি বোর্ডের শুনানির পর ভিতরের কক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসলে রাসেল নামক এই সাংবাদিক কে প্রশ্ন করলে, তিনি উত্তরে বলেন, ” আমি মানব জমিন” পত্রিকায় সাংবাদিকতা করি । কোন জেলার প্রতিনিধি আপনি : এমন প্রশ্ন ফের রাসেল প্রতিবেদককে বলেন, “আমি নারায়ণগঞ্জে মানব জমিন’ পত্রিকায় কাজ করি ৷”
মানবজমিন পত্রিকার মতিউর রহমান সাহেব কে চিনেন বা আপনাকে চিনেন তিনি ? এমন প্রশ্নের জবাবে রাসেল ফের বলেন, “মতিউর রহমান কে আমি চিনিও না তিনিও চিনেন না !” এ সময় প্রতারক রাসেল নিজেকে বিল্লাল হোসেন রবিনের ঘনিষ্ঠজন এবং তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা বলে দাবী করে।
এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামান নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমরা এই রাসেলকে দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবেই বিল্লাল হোসেন রবিন পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন মুঠোফোনে আলাপকালে প্রতিবেদকের সাথে উচ্চস্বরে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এবং এই প্রতারক রাসেলকে মানব জমিন পত্রিকায় বিগত দিনে কাজ করতো বলে দাবী করলেও খোদ মানব জমিন পত্রিকার দপ্তর থেকে এই নামে কোন সাংবাদিক নাই বলেও দাবী করেন।
দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান চৌধুরীর দপ্তরে এমন সাংবাদিক রাসেল সম্পর্কে জানতে চাইলে মুঠোফোনে বার্তা সম্পাদক নিজাম উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, এই নামে আমাদের কোন প্রতিনিধি নাই । তবে এমন চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রায়ই আমাদের কাছে আসতেছে। বিষয়টি অবশ্যই মানবজমিন পত্রিকা খতিয়ে দেখবে।
এমন ঘটনায় বেড়িয়ে আসে নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সেলিমুজ্জামান এবং মানব জমিন পত্রিকার নাম ব্যবহার করে এই রাসেল প্রতারণার বিশাল ফাঁদে ফেলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে নগরীর কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করলে তারা বলেন, ‘ব্যবসা করতে গেলে কোন না কোন ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবেই । শতভাগ সঠিক থেকে ব্যবসা কেউ করতে পারবে না । তাই ব্যবসায়ীদেরকে নানাভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা কর্মকর্তা অথবা মানব জমিন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র । আর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সেলিমুজ্জামান কেন কোন যাচাই বাছাই না করে এমন প্রতারক কে ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব ও পুলিশের মধ্যমনি করে সাথে নিয়ে ঘুরেন তা কেউই অনুধাবন করতে পারেন না । এই প্রতারক রাসেল ইট ভাটায় ইট যাচাই করে ! হোটেল রেস্তোরাঁয় খাবার যাচাই-বাছাই করে ! বিভিন্ন কল কারখানায় পণ্যের মান যাচাই-বাছাই করে ! কোন যোগ্যতায় এই প্রতারক এমন কর্মকাণ্ড করার সাহস পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় দাড়িয়ে ? শর্ষের ভিতরে যে ভূত থাকে তার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে এই বিচারকরূপী প্রতারক রাসেল ।’









Discussion about this post