নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নারী কেলেংকারীসহ সকল ধরেণের অপরাধের হোতা জবরদস্তিমূলক জমি দখল, হত্যাচেষ্টা, বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের দুই মামলায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে আগাম জামিন দেয়নি হাইকোর্ট।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রফিককে জামিন না দিয়ে তার আবেদন ডিলিট করার নির্দেশ দেয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি দখল, হত্যাচেষ্টা ও লুটপাটের অভিযোগে করা দুই মামলায় দুটি আবেদনে ১৮ জন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত রফিকুল ইসলামসহ তিনজনের আবেদন ডিলিট করে বাকিদের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে।
এর আগে ১৯ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রফিককে প্রধান আসামি করে আলাদা দুই মামলায় প্রায় ১০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দুটি করেন ভুক্তভোগী আলী আজগর ভূঁইয়া ও মো. মামুন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়সার আলমের আদালত শুনানি শেষে মামুনের অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ এবং আলী আজগর ভূঁইয়ার আবেদনটি গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মামলার অভিযোগে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন জানান, তাদের বাড়ির আশপাশের অনেক নিরীহ মানুষের জমি সন্ত্রাসী রফিকুল ইসলাম তার বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে দখল করে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় আসামিরা দলবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে তাদের পাঁচ ভাইয়ের মালিকানাধীন ৯৫ শতাংশ জমি রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে বলে। অন্যথায় বাড়িঘর ভেঙে ফেলা ও গুলি করে পাঁচ ভাই ও মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ১৯ অক্টোবর সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জন নিয়ে বাড়িতে এসে বাদীর মাকে দুদিনের মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি দিয়ে যায়।
সর্বশেষ ২১ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে আসামিরা বুলডোজার, হাতুড়ি, শাবলসহ বিভিন্ন দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং গাভি, স্বর্ণালংকার, টাকা, টিভি, ফ্রিজ, আলমারিসহ ঘরের প্রায় ৬৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় তিনতলা পাকা বাড়ি। কেটে ফেলে ৫০টি বড় গাছ। যাওয়ার সময় ২ নম্বর আসামি পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দ্রুত জমিজমা রেজিস্ট্রি করে না দিলে দেখামাত্র গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়।
অন্য মামলার বাদী আজগর আলী ভূঁইয়া জানান, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে নাওড়া মৌজায় বাদী ও তার পরিবারের নামে থাকা ৫ বিঘা জমি রফিকুল ও মিজানুরের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
১৮ নভেম্বর আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায় এবং গরু-ছাগল, আসবাবপত্র, টাকা, টিভি, ফ্রিজ ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১২ লাখ ৭৯ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলে বাদীর একতলা বাড়িটি, যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা।
ভাঙচুরের সময় আসামিরা বাদীর বৃদ্ধ বাবার গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে রাখে এবং দ্রুত জমি তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে না দিলে সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
দীর্ঘদিন যাবৎ আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের নানা অপতৎপরতা এবং অসংখ্য ঘটনার পরও অনেকেই এতোদিন ভয়ে মুখ বন্ধ করে রাখলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিকের অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে এলাকার সকলেই । দেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ জাদরেল কর্মকর্তাদের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক ছাড়াও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের অনেক গডফাদারদের সাথে প্রকাশ্যে এবং গোপন সম্পর্ক ছিলো এই আন্ডা রফিকের।
রূপগঞ্জের অসংখ্য রফিকুল ইসলাম থাকলেও ‘আন্ডা’ না বললে কেউ এই রফিকুল ইসলামকে চিনতো না, এমন ‘আন্ডা’ রফিকের নাম ব্যাপক প্রচার থাকলেও কেউ এই ‘আন্ডা রফিক’ বলার সাহস করতো না আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু চক্রের কারণে। আর আইনশৃংখলা বাহিনী আর অসাধু রাজনৈতিক দলের অনেকে নেতা এই আন্ডা রফিকের আস্তানায় পদধূলী দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতো। বসুন্ধরা গ্রুপের শেল্টারে এই আন্ডা রফিক ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে সেই নূর হোসেনের চাইতেও ভয়ংকর স্টাইলে চলাফেরা করতো । আর এই আন্ডা রফিকের চারিপাশে থাকতো চেলাচামুন্ডাদের দল। সেই আন্ডা রফিকের দেশের আরেক কুখ্যাত ভূমিদস্যূ যারা দেশের রাজনীতি, ব্যবসায়ী পর্যায়ে পরিবর্তন ঘটাতে পারে সেই বসুন্ধু গ্রুপের বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পুত্র সায়েম সোবহান আনভীনের পয়ে ধরে কান্নাকাটি ও ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে সেই আন্ডা রফিকের অবস্থান আঁস্তাকুড়ে আচড়ে পরে।









Discussion about this post