নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি ভোট চাই না, কোত্থাও চাই না, এই নাটক, এই ভন্ডামী আমার ভালো লাগে না। কি করে। ভোট এলে প্রার্থীরা মসজিদে যায়, ভোট চায় । নানা সমস্যার কথা বলে । এই ভন্ডামী আমি পছন্দ করি না। আমি ছবি তুলবো ? তারপর প্রচার হবে । ভোট শেষ আমি ভূলে যাবো। সেই ভন্ডামী আমি পছন্দ করি না । আপনি কি মনে করেন, আওয়ামী লীগের সব ভালো লোক ? না। আমাদের খারাপ লোক আছে। অন্য দলে সব খারাপ লোক ? নো। সেখানেও ভালো লোক আছে। নির্বাচনের পর সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। জীবনের শেষ বয়স চলছে। প্রতিদিন আমার কেন জানি মনে হয়, আমি আর বাঁচব না। তাই মানুষের জন্য কাজ করে আল্লাহকে খুশি করে যেতে চাই ।“
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে স্থানীয়দের নিয়ে আয়োজিত এক নির্বাচনী উঠান বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখানে কিছু বাচ্চাও আছে। আমার চার বছরের একটা নাতি আছে। ঘরের সবার কলিজার টুকরা সে। দেশে ট্রেনে আগুন দেওয়া হচ্ছে। মায়ের সঙ্গে তিন বছরের সন্তানও পুড়ে মারা গেল। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মা সন্তানকে বুকে ধরে রাখলো। ধরুন, আমরা ট্রেনে চড়ে বাবা-মেয়ে গল্প করতে করতে যাচ্ছি। সেখানে কেউ আগুন দিয়ে দিল, রাজনীতির নামে। আমি আমার মেয়েটাকে রক্ষা করতে পারলাম না। বাবা-মেয়ে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় একসঙ্গে মরে গেলাম। এর নাম কি রাজনীতি? আপনারা কি আল্লাহর কাছে জবাব দেবেন না। সব কাজের ঠেকা কি আমাদের?
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার নাম কি রাজনীতি ? কেন রে ভাই। আল্লাহর কাছে কি জবাব দেবেন না। আমাদের ৫৪ জন মানুষকে এই পর্যন্ত নিজের হাত দিয়ে দাফন করতে হয়েছে। আমরা তো প্রতিশোধ নেই না। আমার ভাই সেলিম ওসমান তখন রাজনীতি করতো না। তার ফ্যাক্টরির ভেতর ঢুকে তিন শ গরুর দুধের বান কেটে দেওয়া হলো। ভাইকে গ্রেপ্তার করা হলো। ১৫ মিনিটের মধ্যে যদি মনে করি ওদের নাই করে দেব। পুলিশ-প্রশাসন ওদের পক্ষে থাকবে, তারপরও কিছু করতে পারবে না। কিন্তু আমি এটা করবো না।
তিনি বলেন, আমরা ৮৫ ভাগ কাজ শেষে করেছি, আমি বাকি কাজগুলো শেষ করতে চাই। আমি এখন চাচ্ছি, নারায়ণগঞ্জের মানুষের যাতে আর ঢাকায় যেতে না হয়। আমাদের নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল হবে। আমরা একটা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই।
শামীম ওসমান বলেন, আমরা এই কাশিপুর থেকে মুন্সীগঞ্জ ফ্লাইওভার করছি। এই রাস্তা আমার বাবার নামে হবে। এই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক আমার বাবার নামে হয়েছে। আদমজী সড়ক আমার মায়ের নামে হয়েছে। আমি কিন্তু চাইনি, তারপরও বাবা-মাকে সম্মান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষ পানির নিচে গাদাগাদি করে থাকতো। আমরা সেই ডিএনডি প্রজেক্ট নিয়ে এসেছি। এই রাস্তা করেছি ৬২৫ কোটি টাকার, শুধু ফতুল্লায়। আমরা প্রাইমারি স্কুল করেছি, হাইস্কুল করেছি। পাগলের মতো কাজ করতে চেষ্টা করেছি আল্লাহকে খুশি করতে।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের নেতা আইয়ুব আলীসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে শামীম ওসমান আরো বলেন, আমার নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল হবে। নারায়ণগঞ্জে যদি আইটি ইনস্টিটিউট, বিশ্ববিদ্যালয়, মেট্রোরেল হয়ে যায় আমাদের কী দরকার আছে ঢাকায় যাওয়ার। আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ দেখতে চাই, স্মার্ট বাংলাদেশ দেখতে চাই। এগুলো ভোগ করবে কে? আমাদের বাচ্চারা। এই রাস্তা দিয়ে কী শুধু আওয়ামী লীগ চলে। বিএনপিও তো চলে।









Discussion about this post