সোনারগাঁও থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম ও উপ পরিদর্শক (এসআই) সাধন চন্দ্র বসাকের বিরুদ্ধে পুলিশ ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে তদন্ত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও চাঁদাবাজীর অভিযোগে করা মামলায় গত ২৩ মে ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
তবে আসামিরা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে গেলেও আগের আদেশ বহাল রাখা হয়। আদালতে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম স্বপনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাসিদুল ইসলাম জনি। বর্তমানে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর নিজবাড়ি থেকে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে হাত ও চোখ বেধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন চন্দ্র। সেই সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে জ্ঞান হারালে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্ঞান ফিরলে তাকে আবারও থানায় আনা হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়।
আইনজীবী জাসিদুল ইসলাম জনি সাংবাদিকদের বলেন, জাহিদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে থানায় বেধে নির্যাতন করে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই (দারোগা) সাধন চন্দ্র বসাক।
পরে স্বজনরা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে এবং বাকি টাকা পরে দিতে বলা হয়। ওই ঘটনায় জাহিদুল থানায় মামলা করতে গেলে গ্রহণ করা হয়নি। পরবর্তীতে তিনি আদালতে মামলা করলে তা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ মামলায় পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।
রিপোর্টের উপর স্বপন নারাজি দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার কমিশন ও ডিআইজি বরাবর অভিযোগ করেন স্বপন।
মানবাধিকার কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায় এবং অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে এরকম বেশ কয়েকটি অভিযোগ তারা পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।
জাসিদুল ইসলাম আরও বলেন, নারাজির বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করা হয়েছিল। তবে দীর্ঘ সময়েও শুনানি না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়। হাইকোর্ট বিষয়টি ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। পরে দায়রা জজ আদালত শুনানি করে রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন স্বপন। হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
পরবর্তীতে রুল নিষ্পত্তি করে পুলিশ ছাড়া অন্যকোনো সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আসামিরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে যায়।
তবে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে আগামী বছরের ৩ মার্চ শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।









Discussion about this post