বহুতল ভবনের নির্মাণাধীন লিফটের ফাঁকে পড়ে খন্দকার জনি (৩৯) নামের এক মাছ ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার রাতে ফতুল্লা থানার পশ্চিম দেওভোগ চাচার দোকান এলাকার খন্দকার টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত খন্দকার জনি একই টাওয়ারের নাসির খন্দকারের ছেলে। তিনি শহরের ৫ নম্বর ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।
জনির বন্ধু রোমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যার পর তারা এক সাথেই আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত ৮টার পর সে তার বাড়ি ফিরে যায়। রাতে ভবনটির নির্মাণাধীন লিফটের ১০ তলায় ফাঁকা দিয়ে পড়ে যায় সে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহরের তিন শ’ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১২টার দিকে মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, কী কারণে বা কেন সে ১০ তলায় উঠেছিল তা জানা যায়নি।
তবে এলাকার একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘এই খন্দকার টাওয়ার ঘিরে অসংখ্য অংশিদারের সাথে মহাধূর্ত দিদার খন্দকারের বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিগত সময়ে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নাম ব্যবহার করে এক (১) নং খেয়াঘাটে বিশাল অপকর্ম চালিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান দিদার। একই সাথে ওই বন্দর খেয়াঘাটে বসে চাঁদাবাজি অপহরণ, মুক্তিপন আদায়ের মতো অসংখ্য ঘটনা জানাজানির পর বিএনপির ছিচকে সন্ত্রাসী দিদার খন্দকারকে ঘাট থেকে অপসারণ করেন সেলিম ওসমান।
বিএনপির ছিচকে সন্ত্রাসী থেকে সেলিম ওসমানের সহায়তায় খেয়াঘাটের ইজাদারের দায়িত্ব পেয়ে ঘাটের অর্থ আত্মস্যাৎ, অপহরণ, মুক্তিপন আদায়, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধের খবর ছড়িয়ে পরলে দ্রুত খেয়াঘাট থেকে বিতারিত করা হলে মহাধূর্ত দিদার খন্দকার আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিয়ে খন্দকার টাওয়ার তৈরী করতে ডেভেলপারে সাথে চুক্তি করে প্রতারণা শুরু করে। এক্ষত্রেও নানা প্রতারনার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হলে পলাতক থাকে এই দিদার খন্দকার।
সাম্প্রতিক সময়ে দিদার খন্দকারের এমন প্রতারনা ছাড়াও বিএনপির নেতাদের সাথে নানা নাশকতায় অংশ নিলে হাতেনাতে ধরাও পরে ডিবি পুলিশের হাতে। বিএনপির নাশকতার সাথে জড়িত থাকার ঘটনায় হাতে নাতে ধরা পরার পর নগদ এক লাখ টাকায় ডিবি পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার ঘটনাটি দিদার খন্দকারের প্রতিপক্ষের কাছে প্রকাশ করলে আরো বেকায়দায় পরে ডিবি পুলিশ। নির্বাচনের আগে ডিবি পুলিশের একাধিক টিম হন্যে হয়ে দিদারকে খুজঁতে থাকে। ডিবি পুলিশ কর্তৃক এমন গ্রেফতার ও টাকার বিনিময়ে মুক্তি এবং পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানির এতো ঘটনা নেপথ্যে চাচাতো ভাই এবং খন্দকার টাওয়ারের অংশিদার খন্দকার জনি জড়িত থাকার বিষয়টি জেনে যায় দিদার ।
সেই ক্ষোভ থেকেই খন্দকার জনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা কার হতে পারে বলেও ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। স্বচ্ছ তদন্ত করলেই হয়তো বেড়িয়ে আসবে খন্দকার জনি কি হত্যাকান্ডে শিকার হয়েছেন নাকি দূর্ঘটনা।
দিদার খন্দকার ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার ও এক লাখ টাকায় মুক্তির বিষয়ে মুঠোফোনের ৪ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর হাতে এসেছে । সেখানে নানা আশংকার তথ্য ছিলো এই খন্দকার জনির।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া জানান, রাতে নিহতের পরিবারের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।









Discussion about this post