মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিভাইডারের গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিভাইডারের ওপর দিয়েই সড়ক পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, এতদিন পারাপারের জন্য ডিভাইডারের একটি অংশ খোলা থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে এটি বন্ধ করে রেখেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সড়কের মধ্যেই তাদের নামিয়ে দেওয়ায় উঁচু ডিভাইডারের ওপর দিয়েই পারাপারে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের সওজ বিভাগের কার্যালয়ের সামনে এমনই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েকমাস আগে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সরাসরি যেন ঢাকায় যেতে পারে সেজন্য চার লেনের ঢাকামুখী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুয়েতপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত উঁচু ডিভাইডার দিয়ে দুই লেন বিভক্ত করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুই লেন রাখা হয়। এতদিন দূরপাল্লার লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাত্রীদের চলাচলের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা হতো। ওইখানে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদের নামিয়ে দিতো। কিন্তু গত তিনদিন ধরে তা বন্ধ করে রেখেছে সহজ কর্তৃপক্ষ। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এখনো সেই স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে।
এই গেটের আশপাশে যাত্রী পারাপারের আর কোনো গেট না থাকায় যাত্রীরা উঁচু ডিভাইডারের ওপর দিয়েই পারাপার হচ্ছেন। পুরুষ যাত্রীরা কোনোভাবে এটি পার হতে পারলেও নারী যাত্রীদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এভাবে পার হতে গিয়ে অনেক যাত্রীকেই আঞ্চলিক লেনে চলাচল করা বাসের সামনে পড়ে যেতে হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
আশরাফুল আলম নামের এক যাত্রী বলেন, সওজ কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। যদি ডিভাইডারের গেট বন্ধই রেখে দেওয়া হয় তাহলে এসব দূরপাল্লার বাসচালকদের কেন সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য করা হচ্ছে না ? এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।
রাফিয়া আক্তার নামের যাত্রী বলেন, ‘শিমরাইল মোড়ের এই ডিভাইডার কুয়েত প্লাজা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদেরতো ওইখানে নামা সম্ভব না। দূরপাল্লার যানবাহনগুলোও আঞ্চলিক লেন দিয়ে চলাচল করতে চায় না। আমাদের সড়কের মধ্যেই নামিয়ে দিচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসচালক জানান, আঞ্চলিক পরিবহন চলাচলের জন্য নির্মিত লেনে সবসময় যানজট লেগে থাকে। তাই ওইদিক দিয়ে যাতায়াত করা হয় না।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই একেএম শরফুদ্দিন বলেন, ডিভাইডার বন্ধের বিষয়ে সওজ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম গেটটি খুলে রাখার জন্য। এভাবে পারাপারের ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, মূলত ওই গেটটি নির্মাণ করা হয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন চলাচলের জন্য। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এখানে বিভিন্ন দূরপাল্লার যানবাহনের যাত্রী নামানোর ফলে দুর্ঘটনা ঘটছিল। তাই গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিমরাইল মোড়ের পুরো অংশটি বন্ধ করে দেওয়া হবে যাতে সড়কের মধ্যে বাস চালকরা যাত্রী নামাতে না পারেন।
তিনি আরও বলেন, যাত্রী ওঠানামার জন্য দুই লেনের সার্ভিস লেন করা হয়েছে। শিমরাইল মোড়ের যাত্রী নামাতে হলে ওই লেন ব্যবহার করতে হবে বাসচালকদের। রাস্তার মধ্যে কোনোভাবেই যাত্রী নামানো যাবে না।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এর কর্মকর্তা ক্ষোভের সাথে বলেন, সড়ক ও জনপথ নারায়ণগঞ্জের এই কার্যালয়ে সব সময় চলে তুঘলকি কান্ড । টাকার জন্য পিয়ন থেকে শুরু করে শীর্ষ কর্তাদের অনেকেই ঘৃন্য এমন কোন কান্ড নাই যা তারা করতে পারে না। অবৈধ ও অনৈতিক অর্থ আদায় করতে কুকুরের মতো হা করে তাকে এই অফিসের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী। সড়কের পাশে হাট, বাজার, দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি, ঠিকাদারদের কাছ থেকে নানা উপয়ে কমিশন আদায় ছাড়াও সড়ক ও জনপথের সকল কাজে কমিশন ছাড়া কোন কাজ ই করেন না কেউ । নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এর কর্মকর্তাদের প্রায় সকলেই যেন একেকজন চাকুরীজীবী হিসেবে কাজ করেন না । অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা এই সরকারী চাকরীকে ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করেই সকল ধরণের ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত থাকে। এখানে জনস্বার্থের বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এর অসাধু কর্মচারী কর্মকর্তাদের কাছে হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না। আর এই জনস্বার্থের বিষয়টি দেখবে কে ? কার বা গোয়াল আর কে ই বা দেয় ধোয়া !’









Discussion about this post