বছরের পর বছর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ, বন্দর ও সদর উপজেলায় প্রায় ২৫/৩০ টি মুড়ি তৈরীর কারখানায় বিরামহীন পন্থায় তিতাস গ্যাসের চুরির মহোৎসব চালিয়ে বিষাক্ত হাইড্রোজ ও ইউরিয়া সার মিশিয়ে একেবারেই প্রকাশেই তৈরী হচ্ছে মুড়ি। আর মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র এই রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রায় দুই মাস পূর্ব থেকেই এই বিষাক্ত মুড়ি তৈরী করতে প্রতিটি থানা, ডিবি পুলিশ, সিআইডির ক্যাশিয়ার কে মোটা অংকের মাসোয়ারা দিয়ে সকলকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এই অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে অসাধু মুড়ি কারবারীচক্র।
গেলো বছর ফতুল্রা থানা পুলিশ কে ইফতার করতে দুই বস্তা পিওর মুড়ি উপহারসহ ২০ হাজার টাকায় থানার গেইটের মাত্র কয়েক গজের মধ্যে এমন অবৈধ ও বিষাক্ত মুড়ি তৈরীতে অনুমতি পায় একটি কারখানার মালিক। এমন করে প্রায় প্রতিটি মুড়ি তৈরীর কারখানায় একদিকে গ্যাস চুরি অপর দিকে হাইড্রোজ ও ইউরিয়া সার দিয়ে মুড়ি তৈরী করে পুরো দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে প্রকাশ্যেই।
গত কয়েক বছর যাবৎ এমন সরজমিনে ভিডিওসহ গ্যাস চুরি ও সার ও ইউরিয়া মিশ্রণের চিত্র প্রকাশের পরও আইনপ্রয়োগকারী কোন সংস্থা ভ্রুক্ষেপও করতে দেখা যায় নাই এমন নগ্ন কর্মকান্ডকে ঘিরে। উল্টো ফতুল্লা থানার পুলিশসহ জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে জেল খাটানোর হুমকিও দেয়। হমকির ঘটনায় কোন গণমাধ্যমে বিষাক্ত মুড়ি আর গ্যাস চুরির বিষয়ে পরবর্তীতে তেমন কোন সংবাদ প্রকাশ করে না কোন গণমাধ্যমকর্মীরা। ফলে বিষাক্ত মুড়ি হজম করাতে (ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের) তেমন কোন কষ্ঠ হয় না মুড়ি কারবারী অসাধু চক্রের। অসাধু এই চক্রের সাফ কথা, “আইনশৃংখলা বাহিনী ম্যানেজ তো সব ম্যানেজ !’
এমন হাজারো অভিযোগের পর এবারই প্রথম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অভিযানে দুটি মুড়ির কারখানাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পিরোজপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা আদায় করা হয়।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনসহ নানা অনিয়মের দায়ে মায়ের দোয়া ফুড প্রোডাক্টকে ২ লাখ ও মক্কা ফুড প্রোডাক্টসকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা জানান, মুড়ির কারখানায় অভিযানে দেখা যায় চরম অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করা হচ্ছিল।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর খাদ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহার, কিডনি রোগ সৃষ্টিকারী হাইড্রোজের ব্যবহারসহ নানা অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। পরে নিরাপদ খাদ্য আইনের ৩৮ ও ৩৯ ধারায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহসিন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এমন জরিমানার খবর দ্রুত সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে পুরো জেলায় ছড়িয়ে পরলে অসাধু মুড়ি কারবারীদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয় । নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে একজন অসাধু মুড়ি কারখানার মালিক প্রতিবেদককে বলেন, ‘নারাযণগঞ্জের সব থানা, ডিবি, সিআইডি, বিএসটিআইসহ সকল আইনশৃংখলা বাহিনী ম্যানেজ করা হইছে আগে থেইক্কাই। এখন আবার এই নিরাপদ খাদ্য সংস্থা আইলো কই থেইক্কা ?‘









Discussion about this post