সরকারী সম্পদ নানাভাবে লুটপাট, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসে সোনারগাঁয়ের বালু মহল নিয়ন্ত্রক, ভূমিদস্যুতা, বিসিবির কোটায় আমলাপাড়ার কুখ্যাত অপরাধী সুজিৎ সাহাকে দিয়ে পুরো জেলা ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবসহ পাগলা ভাসমান মেরী এন্ডারসনের শত শত কোটি টাকার মাদক (দেশী বিদেশী মদ বিয়ার) ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ অস্ত্রের নিয়ন্ত্রক ছাড়াও সকল ধরণের অপরাধ যেন গডফাদার শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর ছিলো ‘হাতের তুরি’ মতো।
আর এমন উল্লেখিত অপরাধ সিদ্ধ করতে বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে ম্যানেজ করে বিসিবির মতো সংস্থার পরিচালক হতে কোটি কোটি টাকা ব্যায় করেন টিটু। এরপর আর পিছু তাকাতে হয় নাই নানাভাবে বিতর্কিত তানভীর আহমেদ টিটুর ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, সরকারী সম্পদ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের ভূমি শাখার নিয়ন্ত্রণ করাতেন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সহ সভাপতি এক সময়ের গণপরিবহণের হেলপার ড্রাইভারপুত্র এস এম রানার মাধ্যমে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে লিয়াজোঁ করে শত শত কোটি টাকা লুটপাটের মূল হোতা ছিলেন এই তারভীর আহমেদ টিটু । সেই টিটু এবার বিসিবি থেকে পদত্যাগ করলেও তাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের অনেক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, “আওয়ামীলীগ সরকার পবিরর্তন ও সকলে পালিয়ে যাওয়ার যাওয়ার পর টিটু ও এসএম রানা মিলিত হয়ে ক্লাবের শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে।”
গত ১৯ জুলাই বিকেলে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা মিছিল বের করেন। একটি উঁচু ভবনের ওপর থেকে মুঠোফোনে ২৯ সেকেন্ডের ধারন করা ভিডিওতে দেখা যায় শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ (টিটু) গুলি করছেন এলোপাথারীভাবে।
৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর আর কোন খোজ পাওয়া যায় নাই নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য অপরাধের হোতা শামীম ওসমান ও তার গুলিবর্ষণকারী শ্যালক তানভীন আহমেদ টিটুসহ তার পরিবারের কোন সদস্য কিংবা চেলা চামুন্ডা কোন অপরাধীদের।
জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র আগের জরুরি সভার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন জালাল ইউনুস। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে ডাকা বিসিবির ওই বোর্ড মিটিংয়ে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নাজমুল হাসান পাপন।
আবার ওই মিটিংয়েই এনএসসির মনোনীত হিসেবে আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববিকে বাদ দিয়ে নতুন করে পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে।
এবার নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে প্রথম বোর্ড মিটিং ডাকা হয় আজ। যেখানে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবির আরো দুই পরিচালক। তারা হলেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং তানভির আহমেদ টিটু।
এর মধ্যে নাদেল হলেন ২০২৪ সালের জানুয়ারীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মৌলভীবাজার-২ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং তানভির আহমেদ টিটু হলেন নারায়নগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের শ্যালক।
নাজমুল হাসান পাপন বোর্ড প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও এ বোর্ডে যারা সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ও সম্পৃক্ত তারা আর বোর্ডে আসেননি।
এদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন আ জ ম নাসির, নাইমুর রহমান দুর্জয়, শেখ সোহেল, শফিউল আল চৌধুরী নাদেল, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, তানভির আহমেদ টিটু, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, আহমেদ নজিব, মঞ্জুর কাদের প্রমুখ পরিচালক।
যতদূর জানা গেছে, তারা যোগাযোগও করেননি। আবার বোর্ডে ফিরবেন, সে সম্ভাবনাও কম। এছাড়া ৪ পরিচালক ছুটি চেয়ে আবেদন করে রেখেছেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের কাছে।
শুধু মাহবুব আনাম, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, ইফতেখার রহমান মিঠু, কাজী ইনাম, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম চৌধুরী স্বপন ও মঞ্জুর আলমরা বোর্ডে আসছেন। ধরেই নেওয়া হচ্ছে, এ কয়জন পরিচালকই ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন বোর্ডে থেকে যাবেন।
নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুর এমন পদত্যাগের খবর নগরীতে ছড়িয়ে পরলে অনেকেই বলেন, “প্রকাশ্য গুলিবর্ষন করা এই টিটুর সকল অপরাধ সাম্রাজ্য এখনো চলমান রয়েছে । যার মধ্যে ভূমিদস্যুতার হিসেব নিকেষ রয়েছে এস এম রানার কাছে। আর মাদকের সাম্রাজ্য চালাচ্ছেন শহরের আমলাপাড়ার সেই সুজিৎ সাহা । একই সাথে শিপিং ব্যবসা ও অন্যান্য ব্যবসা পূর্ব থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছেন বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা। যাদের অপরাধ খুঁজে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীও উঠেছে নগরীজুড়ে।









Discussion about this post