রূপগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে দ্রুতগতির প্রাইভেট কারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন কে কারাগারে পাঠেয়েছে আদালত ।
আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আসামী মুবিন আল মামুনসহ তার দুই বন্ধুকে আদালতে উপস্থাপনের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাফিয়া শারমিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী রোববার (২২ ডিসেম্বর) তাদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
আজ শুক্রবার অর্থাৎ (২০ ডিসেম্বর) (বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাত) রাতে পূর্বাচল নীলা মার্কেটের সামনে পুলিশ চেকপোস্টে চলাকালে মোটর সাইকেলকে দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার ধাক্কা দিলে বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহতাসিম মাসুদের মৃত্যু ঘটে ঘটনাস্থলেই। আর গুরুতর আহত হন অমিত সাহা ও মেহেদী হাসান নামের দুইজন বন্ধু ।
মোহতাসিম মাসুদ ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গার মাসুদ মিয়ার ছেলে। আর আহত অমিত ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার তপন কুমার সাহার ছেলে এবং মেহেদী কুমিল্লা সদরের মফিজুর রহমান খানের পুত্র ।
এমন দূর্ঘটনার পর প্রাইভেটকারটি তল্লাশি করে এক ক্যান বিয়ার ও একটি খালি মদের বোতল পাওয়া গেছে বলেও মামলার অবিযোগে উল্লেখ করা হয়।
প্রাইভেটকার চালক অভিযুক্ত মুবিন আল মামুন এবং তার দুই বন্ধু মিরাজুল করিম ও আসিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ।
প্রাইভেটকার চালক অভিযুক্ত মুবিন আল মামুন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুনের পুত্র । প্রাইভেটকারটির রেজিস্ট্রেশনও সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার নামে রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, সড়ক পরিবহন আইনে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ডোপ টেস্টের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
ডোপ টেস্টের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান জানান, `ডোপ টেস্টে দুজনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। তারা অ্যালকোহল নিয়েছে। এ বিষয়ে রিপোর্টও দেওয়া হয়েছে।‘
আইনজীবী রেজাউল করিম খান রেজা জানান, `রূপগঞ্জে পুলিশ চেকপোস্টে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি মোটর সাইকেলকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির একটি প্রাইভেটকার। প্রাইভেটকারের চালক ও সহযাত্রীরা মাদক সেবন করে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলেই একজন শিক্ষার্থী মৃত্যু ঘটে। একই সঙ্গে পুলিশসহ আরও কয়েকজন আহত হন। মাদক সেবন করে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন প্রাইভেটকার চালক।
এ সময় আসামী পক্ষের আইনজীবী আনোয়ার প্রধান জানান, `অসতর্ক অবস্থায় প্রাইভেট চালানোর সময়ে একটি মোটর সাইকেলে ধাক্কা লাগে। দূর্ঘটনায় একজন মারা যান। প্রাইভেটকার চালকের দোষ থাকতে পারে। কিন্তু বাকি দুজন কোনো অপরাধ করেন নাই । তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে শুনানী করবো। এখানে কেউ মাদক সেবনরত অবস্থায় ছিলেন না।
আজ শুক্রবার মুহতাসিম মাসুদের মৃত্যুকে “হত্যাকাণ্ড” বর্ণনা করে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে নির্মমভাবে তাদের ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিচার ও ক্ষতিপূরণ একই সাথে আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহনের দাবী করছি ।









Discussion about this post