দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার শহরের দিগুবাবুর বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু চক্র। তাও আবার সেই দিগু বাবুর বাজারের বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৩০ কেজি পলিথিন জব্দ এবং দুই প্রতিষ্ঠানকে মোট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও হাজার হাজার কেজির গোডাউন এই শহরে থাকলেও সেদিকে চোখ তুলেও তাকায় নাই অসাধু এই চক্রের হোতারা ।
দিগু বাবুর বাজার ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ শহরের মূল প্রাণ কেন্দ্রস্থল দুই নং রেল গেইট এলাকার পলিথিনের গডফাদার কয়েক হাজার টন নিষিদ্ধ পলিথিনের মজুদদার নানা কেলেংকারীর হোতা পলিথিন বাবুল, জালাল মহাজান, ছামাদ, নারায়ণ, সাগর, লিটন সাহা চক্র প্রায় যুগের পর যুগ যাবত পুরো নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও আশেপাশের জেলা ও কুমিল্লা বিভাগের অনেক জেলায় এই নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌ ও সড়ক পথে পাইকারী নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি করে আঙ্গুল ফলে কলাগাছ বনে গেছেন।
আর এই গডফাদার বাবুলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সদর উপজেলায় কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ টি নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরীর কারখানা। যে কারখানায় দিন রাত ২৪ ঘন্টা তৈরী হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। এই কারখানা থেকে উৎপাদিত বিশাল নিষিদ্ধ পলিথিন এই অঞ্চলের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় পুরান ঢাকা থেকে এই নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরী করে গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য গোডাউনে তা মজুদ করেই বিক্রি করছে পাইকারীভাবে।
এমন গুরুতর অভিযোগের সকল খবর নগরীর সকলের জানা থাকলেও আইনশৃংখলা বাহিনী বিশেষ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু চক্র কখনো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আবার কখনো জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যৗাজিস্ট্রেটগণদের নানানভাবে বিভ্রান্ত করে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে নিজেদের ফায়দা হাসিল করতে অভিযান নামক নাটক মঞ্চায়ন করেই যাচ্ছে মাসের পর মাস বছরের পর বছর।
এমন নাটকের ধারাবাহিকতায় এবার আজ রোববার (২৯ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এমন অভিযানে সহায়তা করলেও র্যাবের বিচক্ষনতার কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত এমন নাটক মঞ্চায়নে অংশ গ্রহণ করেন নাই।
কথিত এই অভিযানে হাফিজ স্টোর এবং সিদ্দিক স্টোর নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ পলিথিন মজুদ ও প্রদর্শনের প্রমাণ পেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ৬ক ধারায় এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করাসহ জব্দকৃত ৪৩০ কেজি জব্দ করা হয়। যার কারণে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে নগরীতে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোবারক হোসেন এবং মো. রাসেল মাহমুদ । যাদের বিরুদ্ধে পুরো নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক চাঁদাবাজি, কল কারখানা, মিল ফ্যাক্টারীসহ সকল প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে ।
অথচ এই নাটক মঞ্চায়েনের পর গণমাধ্যমকে মোবারক হোসেন এবং মো. রাসেল মাহমুদ জানায়, নিষিদ্ধ পলিথিন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, যা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। যা তারা এতোদিন পর বুঝতে পেরেছেন বলেও টিপ্পনী কেটে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে এমন মন্তব্য করেছেন অভিযানে অংশ নেয়া একজন কর্মকর্তা।
এমন অভিযানের পর দিগুবাবুর বাজারেরে একজন ব্যবসায়ী বলেন, মাঞ্জারুল মান্নান নামক একজন কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে চাকরী কালীন সময়ে এই নিষিদ্ধ পলিথিনের গডফাদার বাবুলের কয়েক ট্রাক বোঝাই নিষিদ্ধ পলিথিন আটক করেছিলো। ওই সময়ের পর সেই মাঞ্চারুল মান্নানকে নগদ অর্থ, নারী, মদ দিয়ে তুষ্ট করা ছাড়াও প্রতিরাতে নিয়মিত মেডিস্টার ক্লিনিকে নারী ও মদ পাটিয়ে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করে সেই বাবুল নাারয়ণগঞ্জের গডফাদার বনে যান। এরপরে আর এই বাবুল ও তার নিষিদ্ধ ব্যবসায়ী চক্রকে পুরোপুরি বন্ধ না করে নানাভাবে নাটক মঞ্চায়ন করে নিষিদ্ধ ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন। কোন বড় ধরণের ঝামেলা হলে সেই মাঞ্জারুল মান্নান এখনো এই বাবুল চক্রকে রক্ষায় নেপথ্যে থেকে রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করে। সম্প্রতি সেই কেলেংকারীর হোতা নিষিদ্ধ পলিথিনের গডফাদার বাবুলের বিরুদ্ধে একজন নারী আদালতে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষনের ঘটনায় মামলা দায়ের করায় ওই নারীকে নানাভাবে হমকি ধমকি দিয়ে উল্টো দেশ ছাড়া করার প্রকাশ্য ঘোষনা দেয়। একই সাথে ওই মাঞ্জারুল মান্নানকে দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বিশেষ বাহিনীকে ম্যানেজ করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। ’
ওই ঘটনায় ‘নগরবাসীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি : বাবুলের নিষিদ্ধ ব্যবসা ও নারী কেলেংকারী তুঙ্গে ! নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসার পাশাপাশি নারী কেলেংকারীতেও গডফাদার বাবুল মিয়া‘ এমন শিরোণামেসংবাদ প্রকাশ হলেও বাবুল ও তার চক্রের সদস্যরা নগরীতে আস্ফালন চালিয়ে যাচ্ছে অনবরত।
এভাবেই হাজারো অপকর্ম করে আইনশৃুংখলা বাহিনীর অসাধুৃ চক্রকে ম্যানেজ করে টিকে আছে নিষিদ্ধ পলিথিনের জনক বাবুল ও তার সহযোগিরা।









Discussion about this post