জানা যায়, গৃহবধূ লামিয়া আক্তার ফিজার সাথে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান ওরফে মুন্নার বিয়ের পর থেকেই মুন্না পরকীয়ায় আশক্ত ছিলেন। এতে লামিয়া তাকে বাধা দিলে মুন্না তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতো, তাদের ২ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়ার পরও পরকীয়া অব্যাহত রাখে।
স্বামী মুন্নার এমন পরকীয়ার ঘটনায় লামিয়া অন্যদের কাছে এ বিষয়ে বিচার চাইলে তারা বিচার না করে বরং তাকে গালিগালাজ করতেন।
অসংখ্যবার শালিস মীমাংসা হলেও মুন্না সংশোধন হয় নাই উল্টো দেরীতে বাসায় ফেরাসহ নানা কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে লামিয়া মারধরের বিষয়টি গোপন রাখতো সকলের কাছে।
স্বামী মুন্নার নানা অপরাধের ধারাবাহিকতায় এবং দ্বন্দ্বের জেরে গত ২ জানুয়ারি লামিয়ার পিতার বাসায় আসার কথা ছিল, কিন্তু তিনি আসেন নাই। এ দিন বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে অভিযুক্তদের বাড়ীর পাশে এক ব্যক্তি লামিয়ার চাচার মোবাইলে ফোন করে জানান, অভিযুক্তরা লামিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে ঘরের মধ্যে আটক করে রাখে।
এই সংবাদ পেয়ে লামিয়ার পরিবারের লোকজন ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া নয়ামাটি মার্কাস মসজিদ সংলগ্ন মুন্নার বাড়ীতে এসে লামিয়া ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়।
এমন খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং লামিয়ার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ মামলায় এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামী চুন্নুকে গ্রেফতার করে র্যাব।
তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের অন্যতম গডফাদার শামীম ওসমানের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চুন্নু ও তার বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যপক অভিযোগ। অসংখ্য অপরাধের পরেও ফতুল্লা থানায় রয়েছে ১৪টি মামলা।
বিবরণে জানা গেছে, ২০০৩ সালে কুতুবপুর মির হোসেনের বাড়ী থেকে অস্র সহ শরিফ, তোফাজ্জলকে আটক করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এছাড়াও ২০১৫ সালের ২২ আগষ্ট কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার আম্বর আলীর স্ত্রী নাজমা বেগম মারপিট, জখম, শ্লীলতাহানি, প্রাণ নাশের হুমকী ও চুরির অভিযোগ এনে শরীফ, বাদশা, তোফাজ্জল, রানা সহ আরো একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ্য করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৬৬। ২০১৬ সালের ২রা আগষ্ট র্যাব-১১ এর অভিযানে বিপুল পরিমান মাদক ও বিক্রির নগদ অর্থ সহ আটক হয় বাদশা, শামীম, মামুন সহ চার জন ব্যবসায়ী।
এরপর, ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর র্যাব-১১ এর অভিযানে মাদক বিক্রির নগদ অর্থ ও মাদক সহ আটক হয় শরিফ ও বিল্লাল। এসময় তাদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মাদক মামলা রুজু করা হয়। অপরদিকে, ২০১৮ সালের ২১ জুলাই চুরির মামলায় শরীফ সহ আরো একাধিক অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তবে এরা একাধিক বার জেলা গোয়েন্দা, পুলিশ, র্যাব এর হাতে মাদক ও অস্র সহ নানা অপরাধে আটক হলেও বেরিয়ে এসে তাদের সংঘবদ্ধ সিন্ডকেট তৎপর থেকে যায়।









Discussion about this post