রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপুকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থেকে সাজাসহ একাধিক প্রতারণা মামলায় জামিন প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার ২৪ আগস্ট বিকেলে সাজাপ্রাপ্ত আসামী মাসুম চৌধুরী অপুর জামিন মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ বিচারক আনিসুর রহমান।
প্রতারণা মামলা সাজাপ্রাপ্ত আসামী মাসুম চৌধুরী অপু জামিন পেয়ে আদালত প্রাংগণে ফটোসেশান করলে উপস্থিত অনেকেই তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন । অনেকেই বলেছেন, “কানকাটার আবার লজ্জা কি !”
এর পূর্বে রংধনু গ্রুপের ইডি ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপুকে একাধিক প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায় ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মাহিন ফরাজি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে রোববার রাতে বলেন, কিছুক্ষণ পুর্বে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু কে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ এবং তাকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে ।
ঘটনার বিবরণে আদালত সূত্র থেকে জানা যায়, রূপগঞ্জের কদুর মার্কেট জাংগির এলাকার মহি ইমাম চৌধুরীর পুত্র এবং রংধনু গ্রুপের অংশিদার সাজাপ্রাপ্ত প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপু অনেকের সাথে প্রতারণা করায় একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করে আদালত । একই সাথে ৪০৩/১৮ নম্বর মামলায় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আদালত ছাত্রলীগের নামধারী এই প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপুকে এক বছরের সাজা প্রদান করেন ৷ এমন সাজাসহ অন্যান্য ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে মহাধুর্ত ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপু এলাকায় বীরত্বের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো ।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশের অনেকের সাথে সাজাপ্রাপ্ত প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপুর সখ্যতা থাকার পরও রোববার ২৩ আগস্ট গ্রেফতার করলে থানা পুলিশের মধ্যে দেখা দেয় বিতর্ক। সাজাপ্রাপ্ত প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপুকে আটকের পর থানা থেকে ছাড়াতে ব্যাপক তদ্বির হলেও সাংবাদিকদের কারণে আর থানা থেকে ছাড়তে পারে নাই পুলিশ । যার কারণে আদালতে পাঠানোর পর চেকের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আনিসুর রহমান সাজাপ্রাপ্ত প্রতারককে জামিন প্রদান করেছেন।
রূপগঞ্জের অনেকের সমালোচনা থেকে আরও জানা যায়, রূপগঞ্জের প্রভাবশালী ভুমিদস্যুদের গডফাদার রংধনু গ্রুপের কর্ণধার রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিকের ঘনিষ্ট সহযোগি মাসুম চৌধুরী অপু নানাভাবে পুরো রূপগঞ্জ এলাকায় প্রতারণা ছাড়াও সাধারণ মানুষকে হয়রান, হুমকি ধমকি দিয়ে নিজেদের রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে আসছিলো । এমন অপকর্মের কারণে আন্ডা রফিকের প্রভাবে পুলিশকে নানাভাবে ম্যানেজ করে ভূমিদস্যুতা ছাড়াও সকল ধরনের অপরাধে অপু ও তার বাহিনীর সদস্যরা ছিলো সিদ্ধহস্ত ।
শাসক দলের নাম ব্যবহার করে এমন অপকর্মের জন্য পুলিশের অনেকেই ছিলো আন্ডা ও অপু বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। অসংখ্য ওয়ারেন্ট থাকার পরও এই অপরাধীকে এতোদিন কেন গ্রেফতার হয় নাই এমন প্রশ্নে রূপগঞ্জ থানার নির্ভরশীল একটি সূত্র জানিয়েছেন, খোদ ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) যখন এই অপরাধীদের সাথে মিলেমিশে চলাফেরা করেন তখন ওয়ারেন্টের নথি আর খুজে পাওয়া যায় ।
এমন ঘটনায় দফায় দফায় রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের সরকারী মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই এবং গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপুর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সার্বিক তথ্য পাওয়া যায় নাই ।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশের নির্ভরশীল একাধিক সূত্র জানায়, প্রতারক মাসুম চৌধুরী অপু কে গ্রেফতার করায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় থানার অভ্যন্তরেই৷ এরপর অপুকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার পূর্বেই সাংবাদিকদের ফোন এবং সংবাদ প্রকাশিত হলে আদালতে পাঠাতে বাধ্য হয় পুলিশ। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ সহসাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী গ্রেফতার করে না৷ শুধু বাণিজ্য চলে এই ওয়ারেন্ট নিয়ে ।









Discussion about this post