সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কাজের গতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
২২ সেপ্টেম্বর ( মঙ্গলবার ) সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রাঙ্গনে এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুকের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন থানার ওসি পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল।
সভাপতির বক্তব্যে ওসি কামরুল ফারুক বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা শিল্পাঞ্চল এলাকা। এ এলাকায় ক্রাইম হয় ভিন্ন ধরনের। বর্তমান এসপি’র সময়ে তার নির্দেশনায় পূর্বের তুলনায় সকল খারাপ কাজ অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে। আগে যেখানে ২০-২৫ টি ছিনতাই, ১১০-১২০ টি মাদক মামলা, ৮-১০ টি মার্ডার হতো, গত ৩-৪ মাসে মাত্র ২টি খুন হয়েছে। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডি-মামলা করতে টাকার প্রয়োজন হয় না, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে টাকার প্রয়োজন হয় না। যদি এরকম অভিযোগ পান আমার কাছে এবং এসপি সাহেবের নিকট জানাবেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে এসপি সাহেবের নিকট জানাবেন।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে কোন ঝুট সন্ত্রাসী থাকবে না। ঝুট সন্ত্রাসী অবশ্যই ঝুট ব্যবসায়ী না। হয় এ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ওসি থাকবে নয়তো ঝুট সন্ত্রাসী থাকবে। যদি সন্ত্রাসী থাকে আগামী সপ্তাহের মিটিংয়ে ওসির থাকার প্রয়োজন নেই। ওসি কোন জনগণের সাথে তো দূরের কথা, কোন ছিচকে চোরের সাথেও খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না, সেখানে মা-বোন তো দূরের কথা। কারণ, কোন ছিচকে চোরের টেক্স এ হয়তো আমার বেতন হয়। সংবিধানের কোথাও কারো সাথে খারাপ ব্যবহারের জন্য বলা হয় নি। আমার কাজে কেউ খুশি-বেজার হলে, আমার কিছু যায় আসে না।
মাদক প্রসঙ্গে এসপি জায়েদুল বলেন, কতজনকে ধরলে মাদক নির্মূল হবে বলতে পারবেন? প্রতি মহল্লায়-পাড়ায় মাদক বিক্রেতা-সেবী রয়েছে। আজ হয়তো কোন বিক্রেতাকে ধরে পুলিশে দেয়া হবে পরবর্তীতে তিনি ১০-২০ হাজিরা দিয়ে মুক্ত হয়ে যাবেন। মাদকমুক্ত করতে হলে সমাজ ও পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। কিশোর গ্যাং প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার বলেন, বাবা-মা’কে তাদের সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। আপনি আপনার সন্তানকে কেন টাচ মোবাইল কিনে দিচ্ছেন। প্রতিটি জনপ্রতিনিধি তাদের এলাকায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করলে এ অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব। একশ সিকিউরিটি এবং ১ টি সিসিক্যামেরা সমান।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আরও বলেন, জিডি-মামলা করতে টাকার প্রয়োজন নাই। এ বিষয়ে কিংবা অন্য বিষয়ে অভিযোগ ওসিকে জানাবেন। তিনি কল না ধরলে আমি মনে করি তার এখানে থাকার প্রয়োজন নাই, কারণ অনেকে ওসি হওয়ার জন্য বসে আছে। আমার কাছে ওসিকে কল দেওয়ার পর কোন ব্যবস্থা না নিলে আমাকে কল দিয়ে জানাবেন।
সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় ডিবি’র সোর্স পরিচয়ে অনৈতিক কাজ হয়, এমনই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসপি জায়েদুল আলম বলেন, পুলিশের এবং ডিবি’র কারো কোন সোর্স থাকবে না। এমন পরিচয় কেউ দিয়ে খারাপকাজে লিপ্ত হলে তাকে পুলিশে দিবেন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে। এর আগের মিটিংয়েও আমি শুনেছিলাম পুলিশের সোর্স। এ মিটিংয়েও আমাকে শুনতে হলো, দুঃখজনক। পুলিশের সোর্স এ এলাকার সকল মানুষ। আলাদা কোন সোর্স পুলিশের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজনে সোর্স লাগবে যে পুলিশের তাকে সিদ্ধিরগঞ্জে রাখা হবে না। প্রয়োজনে সিদ্ধিরগঞ্জের সকল পুলিশ চলে যাবে।
মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, সকল ধর্মেই মানবিক হওয়ার কথা বলে।
আরও উপস্থিত ছিলেন – নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ ,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কর্মকর্তাবৃন্দসহ আরও অনেকে ।








Discussion about this post