পুলিশের হাতে সিসি ফুটেজের চিত্র আসলেও তাতে আজমীর ওসমানের কোন ছবি দেখা যায় নাই । তবে আজমীর ওসমানের ব্যবহৃত গাড়ী দেখা গেছে ফুটেজে । গাড়ীর ভিতরে কে আছে তাও স্পস্ট না । একই সাথে কয়েকজনকে এই ফুটেজে দেখা গেলেও আনোয়ারুল কবির টিটুর অবস্থান নাই এই ফুটেজে । এমন ঘটনায় এখনো নারায়ণগঞ্জে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ।
অনেকেই কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন আজমীর ওসমান শুধু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে হুমকি দিয়েছে বলে ফতুল্লা থানায় যে সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে তার নেপথ্যে আর কি কাহিনী রয়েছে ? তা তদন্ত করা জরুরী ।
অনেকেই ফোন করে আবার সরাসরি সাক্ষাৎ করে এবং কয়েকদফা বিবি মরিয়ম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অনুসন্ধানকালে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেছেন, প্রয়াত সাংসদপুত্র আজমীর ওসমান যদি হুমকি দিয়ে থাকে তবে শুধু কি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে ই হুমকি দয়েছে ? এমন হুমকির বিষয়টি মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয় । এর নেপথ্যে রয়েছে আরো অনেক কারণ । এমন কারণের মধ্যে এলাকায় আরো ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে :
১ । নাসিম ওসমান জীবদ্দশায় মডেল গার্মেন্টের মালিক মাসুদুজ্জামান এলাকায় বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করেছেন । যা সমাঝোতা করে দিয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান । সেই সমাঝোতার সময় মাসুদুজ্জামান প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন । প্রয়াত বাবার সাথে এমন প্রতারণার সকল তথ্য জানতে আজমীর ওসমান বারবার ধর্ণা দিয়েছে মাসুদুজ্জামানের কাছে ।
২ । খানপুর , তল্লা ও আশেপাশের অনেক সম্পত্তি নিয়ে মডেল গার্মেন্টের মালিক মাসুদুজ্জামানের সাথে অনেকের বিরোধ রয়েছে। একই সাথে বিবি মরিয়ম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও আশেপাশের বিশাল সরকারী ও বেসরকারী সম্পত্তি দখল করতে একটি প্রভাবশালী চক্রকে ব্যবহার করছে মডেল গার্মেন্টের মালিক মাসুদুজ্জামান । যার খবর পেয়ে আজমীর ওসমান অবস্থান নিতে পারে ।
৩ । আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিবি মরিয়ম উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব ও দখল করতে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিতে যাচ্ছে মাসুদ । এমন খবর চাউর রয়েছে পুরো তল্লা এলাকাজুড়ে ।
৪ । সিসি ফুটেজে আজমীর ওসমানের গাড়ী দেখা গেলে কি কথা হয়েছে তা জানা যায় নাই । এমন ফুটেজ ছাড়াও ঘটনার পুর্বে এবং পরবর্তীতে অর্থ্যাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টম্বর পর্যন্ত মডেল গার্মেন্টস এবং ওই সময় থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত বিবি মরিয়ম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সিসি ফুটেজ দেখার দাবী করেছে এলাকার লোকজন । শুক্রবার রাত ১২ টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ছাদে লোকজন নিয়ে কি করেছেন স্ব শিক্ষিত মনির হোসেন তাও তদন্তের দাবী তুলেছেন কেউ কেউ।
মাসুদের সাথে কারা কারা গোপন মিটিংয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করেছিলো তার খতিয়ে দেখার দাবী উঠেছে ।
মডেল গার্মেন্টের আদলে একই সিকিউরিটি ( একই পোষাক পরিহিত গার্ড ) দিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবকেদের সাথে গার্মেন্টকর্মীদের মতো আচরণের অভিযোগও তুলেছেন অনেকেই।
সর্বপরি মডেল গার্মেন্টের মালিক মাসুদুজ্জামান কার নাম ব্যবহার করেন ? কার ইশারায় গভীর রাত পর্যন্ত দফায় দফায় গোপন মিটিং হয়েছে ? নারায়ণগঞ্জ জেলার অত্যান্ত ক্ষমতাধর কে এই ব্যক্তি যার কথায় বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল খায় ! তাকে খুজে বের করার দাবী তুলেছেন তল্লাবাসী । বিএনপির কট্টর সমর্থক হয়েও আওয়ামীলীগের এই শাসনামলের দীর্ঘসময়ে কোন খুটির জোড়ে মডেল গার্মেন্টের মালিক মাসুদুজ্জামান এতোকিছু করে যাচ্ছে তার তথ্য জানতেও চায় শহরবাসী ।
নারায়ণগঞ্জ শহরে চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনার বিরণের জানা যায় :
প্রয়াত সাংসদ পুত্র আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ‘খুন জখমের হুমকী’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে মডেল ডি ক্যাপিটাল ইন্ডাস্ট্রির উপ-মহাব্যবস্থাপক অরুণ কুমার সাহা ।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ফতুল্লা মডেল থানায় ডায়রীটি করা হয়। (জিডি নং-১৬৪১)।
বিবাদী করা হয় বিবি মরিয়ম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আলম খাঁন, আজমেরী ওসমান, তরিকুল ইসলাম লিমন, আনোয়ারুল করিম টিটু, সনেটসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে।
সাধারণ ডায়রীতে বলা হয়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে বিবি মরিয়ম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আলম খাঁনের। এ অবস্থায় স্বপদে বহাল থাকতে বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করেন। মডেল গ্রুপের মালিক মাসুদুজ্জামান বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ায় বিদ্যালয়ের মিটিং এবং কার্যক্রমে কিছু দায়িত্ব পালন করতেন মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেন।
শফিউল আলম খাঁনের তদবিরের প্রেক্ষিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টায় একটি সাদা পাজারো গাড়ীতে (যারার নং- ঢাকা মেট্টো-ঘ-১৩-৪১৩৮) মডেল গ্রুপের সামনে অবস্থান নেন আজমেরী ওসমান। এ সময় তার সহযোগী তরিকুল ইসলাম লিমন, আনোয়ারুল করিম টিটু, সনেটসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে নির্দেশদেন মডেল গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেনকে ধরে নিতে। পরে মেইন গেইটে সিকিউরিটিদের ধাক্কা মেরে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে প্রবেশ করেন। ‘মনির হোসেন কোথায়? তাকে বের করে দে?’ বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। মনির হোসেনকে না পেয়ে খুন জখমের হুমকী দেওয়া হয়। এ সময় বলেন, ‘নিয়ম টিয়ম বুঝি না- শফিকুল আলম খাঁনকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে বহাল রাখা হবে। আবার যদি আসি তাহলে খুব খারাপ হবে’।
নিরাপত্তা চেয়ে মডেল গ্রুপ থেকে জিডির সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে (ওসি তদন্ত) শফিকুল ইসলামকে। তদন্তে অভিযোগ অপরাধী প্রমানিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঞ্চল্যকর এমন জিডির ঘটনায় ঘটনায় ফতুল্লা থানার জিডির তদন্ত কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর তদন্ত) এস এম শফিকুল ইসলাম নারায়ণগহ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, জিডির নেপথ্যে অনেক কিছু থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুধাবন করতে পারছি । নেপথ্যের থথ্য জানতেই কাজ করে যচ্ছি । বিষয়টি খুবেই স্পর্শকাতর তাই এর বেশী কোন মন্তব্য করতে পারছি না । তবে অসংখ্য প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্ত চলছে সঠিক পথে ।









Discussion about this post