নারায়ণগঞ্জ জেলায রূপগঞ্জ উপজেলা, সদর উপজেলার সদর থানা এলাকায় অসংখ্য লবণ কারখানা ছাড়াও ফতুল্লার কাশিপুর, পাগলাসহ জেলার একাধিক স্থানে অসংখ্য লবন কারখানায় বিরামহীনভাবে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানী করা চোরাই লবণ সরকারের হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশীয় বাজারে এভাবেই বাজারজাত করে যাচ্ছে চোরাই কারবারীদের অনেকেই ।
নারায়ণগঞ্জের জেরা প্রশাসনের একাধিক অসাধু কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটনিয়মিত মোটা অংকের টাকা মাসোয়ারা নিয়ে এভাবেই লবণের টচারাই কারবারে উৎসাহিত করে যাচ্ছে বছরের পর বছর জুড়ে । আর মাসোয়ারা প্রদানে গরিমসি হলেই লোক দেখানো অভিযান চলে বলেও দাবী অনেক সাধারণ ব্যবসায়ীদের ।
নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে হাতি সল্ট নামে মেসার্স উত্তরা লবন কারখানাকে প্রতারণার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রবিবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জেলা সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ক্যাব ও জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে জেলা সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জমান জানায়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনার আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাকিতায় নিতাইগঞ্জ কেরসিনঘাট এলাকায় অবস্থিত মেসার্স উত্তরা লবণ কারখানায় গেলে কোন ক্যামিক্যাল টেস্ট ছাড়াই লবণের প্যাকেটের উপর উপাদানসমূহ লিখা পাই। এছাড়াও তাদের কোন ল্যাবরেটরি অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটি প্যাকেটের উপর লবণের পরীক্ষা ছাড়াই মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছে যা ভোক্তাদের সাথে প্রতারণার সামিল। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর ৪৫ ধারা মোতাবেক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
এমন জরিমানার বিষয়ে তাৎক্ষনিকভাবে অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নারায়ণগঞ্জের সকল সেক্টরে নিয়মিত (প্রতি মাসে) অসাধু লবন কারবারীরা মোটা অংকের টাকা দিয়ে আসে । যাতে বিনা বাধায় তাদের এমন অনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে পারে । বিদেশ থেকে আমদানী করা ইন্ডাস্ট্রিয়াল লবণ বিনা শুল্কে আমদানী করে তা বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরীতে ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেই বিষাক্ত লবণ কোন প্রকার যাচাই বাচাই ছাড়াই প্যাকেট জাত করে সারাদেশের বাজারে বিক্রি করছে সারা বছর জুড়েই । সারা বছর যাবৎ এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে চোখে দেখেও দেখে না জেলা প্রশাসন । কারণ লবন মিল মালিক সমিতির অসাধু সিন্ডিকেটের হোতারা প্রতিমাসে জেলা প্রশাসনের নাজিরের হাতে নির্লজ্জভাবে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে আসছে । এ জেলা প্রশাসন ছাড়াও পুলিশের একটি চক্র এই উৎকোচ গ্রহণ করে থাকে । সব চাইতে বেশী উৎকোচ গ্রহণ করে শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তর, ভ্যাট , ট্যাক্স, ডিবি । ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার, থানা পুলিশের ক্যাশিয়াার, সিআইডির ক্যাশিয়ার নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করে আসছে এই অসাধু লবণ মালিকদের কাছ থেকে ।
আর এই অনৈতিক লবনের মূল হোতা হিসেবে সারা বছর জুড়ে কলকাঠি নেড়ে আঙ্গুল ফুলে করাগাছ বনে যাচ্ছে বিসিক ও বিএসপিআইএর কর্মকর্তারা । যারা খাবার লবন হিসেবে আয়োডিন ও বিএসটিআইএর পরীক্ষা করার কথা তারাই এই অপরাধীদের নাানভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে । নারায়ণগঞ্জে প্রায় অর্ধ শতাধিক এমন অবৈধ লবণ তৈরীর কারখানা রয়েছে । এতা কারখানা থাকতে কোন কারখানায় অভিযান না চালিয়ে এখানে এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো মাসোয়ারা সকলেই ঠিক মতো প্রদান করো, নইলে আবাারো চলবে এই অভিযান।” এমন তীর্যক মন্তব্য করেছেন নিতাইগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ীরা ।









Discussion about this post