নজরুলকে আমাদের স্কুল জীবনের বন্দুরা বাইত্যা ইন্দুর আবার কেউ ইন্দুইরা নজরুল কইয়া ডাকতাম ! সে ছিলো মহাধূর্ত ! ইন্দুরের মতো চলাফেরা করতো । তাকে ধরা যাইতো না । সেই ইন্দুরের নাম আমরা নজরুল বলেই জানতাম । পরে বিএনপির রাজনীতিতে ডুইক্কা তার নাম দেখি নজরুল ইসলাম আজাদ । নজরুল একদিকে জিয়া পরিবারের নাম বেইচ্যা চলে আর দিকে দিকে আওয়ামীলীগ নেতারে বাপ ডাকে !
পাপ করলে যে মাফ নাই তার প্রমাণ করেছে প্রভাবশালী এমপি হাজি সেলিম ও তার পরিবার । অপরদিকে আরেক অপরাধীদের গডফাদার নারায়ণগঞ্জের অজপাড়াগাঁয়ের সাধারণ পরিবারের ছেলে বিএনপির শীর্ষ নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ যিনি আড়াইহাজারের পাঁচরুখী ভুঁইয়াপাড়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে । ১৯৯৮ সালে পাঁচরুখী হাজি সাহেব আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে রাজধানীমুখী হলে তার ও তার পরিবারে ঘটে বিশাল পরিবর্তন ।
সহপাঠী বন্ধুরা এই নজরুল ইসলাম কে ইন্দুর ওরফে বাইত্যা ইন্দুর হিসেবেই ডাকতো । স্কুল জীবন থেকেই মহাধূর্ত হওয়ায় সকলেই এই নজরুল ইসলামকে ইন্দুর নজরুল হিসেবেই পরিচিত । পরিবারের কেউ কেউ কবিরাজি পেশায় জড়িত থাকায় এতোটাই ধূর্ত ছিলো তারা যে, এলাকার কেউ তাদের টিকিটিও কেউ স্পর্শ করত পারতো না ।
সেই নজরুল এখন কোটি কোটি টাকার মালিক । বাবা মোস্তাফিজুর রহমানের অসংখ্য স্ত্রী থাকায় কোন বাধন মানতো না এই নজরুল । এলাকার সকলে এবং তার বাল্য বন্ধুরা নজরুল ইসলাম হিসেবে চিনলেও পরবর্তীতে আজাদ নাম যুক্ত হওয়ায় সকলের কাছে আরো বেশী প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে উঠেছে পরিবারটি।
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও তার পরিবারকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক । ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কাস্টমসের হাতে দুবাইগামী বিমানের যাত্রী রাকিবুলকে গ্রেফতার করে ।
রাকিবুলের লাগেজ তল্লাশির সময় তার ব্রিফকেসে ৩৩ হাজার ৯০০ ইউএস ডলার ও ৪২ হাজার ইউএই দিরহাম পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য ৪২ লাখ টাকা। এ ঘটনায় এক সপ্তাহ যাবৎ কারাগারে রয়েছেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা যিনি নিজেকে জিয়া পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে নানা অপরাধ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ । এতোদিন কোন প্রমাণ না থাকায় কেউ কোন মন্তব্য না করলেও এবার মুখ খুলতে শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার পাচরুখী এলাকার অনেকেই ।
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার পাচঁরুখী এলাকার অনেকের ভাষ্য থেকে আরো জানা যায়, বিএনপির রাজনীতিতে জরিত নজরুল ইসলাম আজাদ ও তার পুরো পরিবার অপরাধ জগতের বাসিন্দা। তার ছোট ভাই এবার মানিলন্ডারিং আইনে গ্রেফতার হওয়ার পর নজরুল ইসলাম আজাদের কি রাজনীতি করতে চান নাকি রাজনীতির নামে আন্ডার ওয়াল্ডের ডন হতে চান সেই প্রশ্ন উটেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ।
আজাদের ছোটো ভাই রাকিবুল ইসলাম প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে যাওয়ার সময় শাহ আমানত বিবানবন্দরের কাস্টম বিভাগ তাকে আটক করে। এরই মাঝে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে আজাদের ছোটো ভাই একজন মুদ্রা পাচারকারী হিসাবে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে এর আগে সে এবং তার ভাই আরো কি পরিমান মুদ্রা দেশ থেকে পাঁচার করেছে ?
বর্তমান সরকারের আমলে বিপুল পরিমান মুদ্রা পাঁচার হচ্ছে বলে দাবি করে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। কারা কিভাবে এ দেশকে ফোকলা করে বিদেশে মুদ্রা পাচার করছে তারও বিবরন থাকছে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে। কিন্তু আজাদ বিএনপির রাজনীতির সাথে জরিত।
অথচ আজাদের ভাই হয়ে এভাবে মুদ্রা পাচার করার সাহস তিনি কোথা থেকে পান সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক সচেতন মহল। এই ঘটনা ধরা পরার পর আজাদ নিজে কি করছেন সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে। আজাদ আরো আগে থেকেই বিতর্কিত কর্মকান্ডের সাথে জরিত বলে বিএনপির ভেতর থেকেই অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও ফকির গার্মেন্টসে অর্থনৈতিক এক ঝামেলায়জড়িয়ে চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলো বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ ।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের সন্ত্রাসী মাদকাশক্তদেরকে দেখা যায় তার চারিপাশে। এছাড়া আজাদকে রাতের বাসিন্দা বলারও যথার্থ কারন রয়েছে। আর সেটা হলো তিনি পাঁচ তারকা হোটেল ওয়েস্টিনে অধিকাংশ সময় রাত কাটান। তিনি তার অনুসারীদের সঙ্গে দাবি করেন ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের একটি বড় অংশের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বা তিনি নিয়ন্ত্রন করছেন।
আওয়ামী লীগের কিছু গুরুত্বপূর্ন নেতার সাথেও তার সম্পর্ক থাকার কথা তিনি তার অনুসারীদের বড় গলায় বলে থাকেন। তাই সব কিছু মিলিয়ে এই আজাদ কোনো রকম স্বচ্ছ রাজনীতির সাথে জরিত নন। এর আগেই তিনি জেলা বিএনপির কমিটিতে সাধারন সম্পাদকের পদ দেয়ার কথা বলে আজহারুল ইসলাম মান্নানের কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়েছেন চেকের মাদ্যমে।
এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির ভেতরে আজাদ এখনো সমালোচিত হচ্ছেন। তাই এই পরিবার যদি কখনো ক্ষমতার রাজনীতিতে আসতে পারে তাহলে কি রেখে কি করবেন সেটা এখনই অনুমান করা যায়। এরা বিএনপির এসেট নয়, বরং বোজা বলেই মনে করেন নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক সচেতন মহল।
খোজ নিয়ে আরা জানা যায় মহাধূর্ত নজরুল ইসলাম আজাদ তার ভাই রাকিবুল ইসলাম, বাবা মোস্তাফিজুর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্যরা একদিকে যেমন বিএনপির প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং তিন তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কনিষ্ট পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন । জিয়া পরিবারের খালেদা জিয়া, আরাফাত রহমান কোকো, কোকোর স্ত্রীর নাম ব্যবহার করার পাশাপাশি শাসক দল আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গির কবির নানকের একমাত্র পুত্র সায়াম উর রহমান সায়াম ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে নসই শোকাবহ পরিবেশের সুযোগে আওয়ামীলীগের এই নেতাকে বাবা বলে ডেকে নানাভাবে সুবিধা আদায় করতো বলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাদের মাঝে চাউর রয়েছে ।
আড়াইহাজার উপজেলার অনেকেই আরো বলেন, মূলতঃ যে কোন মূল্যে সুবিদা আদায় করা ই হলো মহাধূর্ত নজরুল ইসলাম আজাদ ও তার পরিবারের নেশা ও পেশা ।









Discussion about this post