নারায়ণগঞ্জ জেলায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন আরও ৩৩ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২৪ জন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৪১৬ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে দুই চিকিৎসকসহ মারা গেছেন ১৫০ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও মানুষ তা মানছেন না। মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছেন নগরের বাসিন্দারা। বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেখানে ৩৩ জনের ফলাফল পজিটিভ এসেছে। তিনি বলেন, সিটি এলাকায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৭৫ জনের, শনাক্ত হয়েছেন ২২ জন। সদর উপজেলায় ৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। বন্দর উপজেলায় ৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৪ জন, আড়াইহাজার উপজেলায় ২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত নেই। রূপগঞ্জ উপজেলায় ৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৩ জন। সোনারগাঁয়ে ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১ জন।
৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত তিন রোগীর দুজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের। ৩০ মার্চ করোনায় সংক্রমিত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। গত ৭ এপ্রিল করোনা সংক্রমণের জন্য নারায়ণগঞ্জকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল আইইডিসিআর।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিটি এলাকায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে সবচেয়ে বেশি ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানে ১৯ হাজার ২১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সদর উপজেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। এই এলাকায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১২ হাজার ৪৩৮টি। বন্দর উপজেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানে ২ হাজার ৩৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। আড়াইহাজারে করোনায় সংক্রমিত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৬৬৩ জন। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪ হাজার ১৩৩ জনের।
রূপগঞ্জ উপজেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এখানে সংগৃহীত ১৬ হাজার ৫৭২টি নমুনার মধ্যে ১ হাজার ৪৫০টি নমুনার প্রতিবেদন পজিটিভ আসে। সোনারগাঁ উপজেলায় করোনায় মারা গেছেন ২৩ জন। ৩ হাজার ৪৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার হটস্পট থেকে নারায়ণগঞ্জ একটি স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। তবে করোনামুক্ত হয়ে যায়নি। দিন দিন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা বাড়ছে। মাস্ক ছাড়াই মানুষ ঘোরাফেরা করছে। মাস্ক পরার বিকল্প নেই। মাস্ক না পরলে শীতকালে এই আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে









Discussion about this post