ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। একই সাথে জনগণের স্বার্থে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি তোলেন দলটির নেতারা।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) মারা যান। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার ব্যানারে এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ। জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, জেলা নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক পপি রাণী সরকার, মশিউর রহমান রিচার্ড, কেন্দ্রীয় ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, জেলা সভাপতি শুভ দেব, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস জামান, মহানগরের আহ্বায়ক ফারহানা মানিক মুনা প্রমুখ। এর আগে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
আবুল হাসান রুবেল বলেন, মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য এই দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার এই স্বৈরাচারী সরকার নিজেদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে ‘কালা কানুন’ মানুষের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। একটি কার্টুন শেয়ার করার কারণে গ্রেফতার হয়ে কারাগারের ভেতর মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে লেখক মুশতাক আহমেদকে। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা ও জীবনের নিরাপত্তার উপর কর্তৃত্ব চালানো হচ্ছে। রাতের আধারে ভোট ডাকাতি করে জনগণের উপর ফ্যাসিবাদী শাসন চালাচ্ছে এই সরকার। লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকান্ড’ উল্লেখ করে বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান আবুল হাসান।
ফিরোজ আহমেদ বলেন, প্রায় দশমাস কারাগারে ছিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ। তার সাথে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাষ্ট্রচিন্তার দিদার, কার্টুনিস্ট কিশোর। বাংলাদেশের লুটেরা শাসকগোষ্ঠী যেভাবে দেশকে লুন্ঠন করছে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করছে তার প্রতিবাদে কিশোর কার্টুন এঁকেছিলেন। একজন জনগণের টাকা চুরি করে আরেকজন জনগণের পক্ষে কথা বলে, এই ধরনের কার্টুন এঁকে গ্রেফতার হয়েছিলেন কিশোর। এই রকম তুচ্ছ কারণে লেখক, কার্টুনিস্ট, রাজনৈতিক কর্মীকে জেলে থাকতে হয়। ছয়বার তাদের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। এইরকম হাস্যকর এক শাসনব্যবস্থা চলছে এই দেশে।
তিনি আরও বলেন, সরকারবিরোধী কথা বলা আর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলা এক জিনিস না। সরকারের সমালোচনাকে তারা রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা বলে মামলা করছে। যারা জনগণের টাকা লুণ্ঠন করছে তারা রাষ্ট্রবিরোধী নাকি তাদের সমালোচনা করা কিশোর, মুশতাক আহমেদ; এই প্রশ্ন থাকলো জনগণের সামনে ।
সভাপতির বক্তব্যে তরিকুল সুজন বলেন, লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেফতারের পর ধীরে ধীরে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনগণের প্রয়োজন নেই। সবার আগে জনগণের জীবনের নিরাপত্তার প্রয়োজন। এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশকে লুটেরা সন্ত্রাস, স্বৈরাচারী ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।









Discussion about this post