নারী নিয়ে সোনারগাঁয়ে হেফাজতের লংকাকান্ডের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড়ের পর আবার বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল ) বিকেলে হেফাজতের নেতা মামুনুল হকের ফেসবুকের লাইভে এসে ৩২ মিনিট ৩২ সেকেন্ড বক্তব্য দিয়ে আলোচনার সমালোচনার ঝড় তৃুলেছেন।
মামুনুল হকের পক্ষের অনেকেই এমন ঘটনাকে বৈধ বলে মন্তব্য করেছেন । আবার অনেকেই বলেছেন, এমন নারী কেলেংকারীকে ইসলাম ধর্মসহ কোন ধর্ম ই সমর্থন করে না । ইসলাম ধর্ম এমন নারী কেরেংকারীর ঘটনায় কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে । ইসলাম ধর্মের এমন কঠোর বিধি নিষেধ ও শাস্তির বিষয়টি কোন ভাবেই সমর্থন করতে রাজি নয় মামুনুল হকের সমর্থকরা । এদিকে একে পর এক অডিও রেকর্ড প্রকাশের পর নিজের কথাই নিজেই অস্বীকার করে চলেছেন মামুনুল হক ।
একদিকে নিজ স্ত্রীকে ফোন করে বলছেন, তুমি আবার বিস্বাস করো না । পরিস্থিতির কারণে এই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলতে হয়েছে । আসলে তিনি আমাদের শহিদুল ভাইয়ের স্ত্রী !” আবার একের পর এক লাইভে এসে মামুনুল হক বলছেন জান্নাত আরা ঝর্ণা তার দ্বিতীয় স্ত্রী । অপরদিকে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামধারী এই মহিলা আমার মা বলে দাবী করে ফেসবুকে বক্তব্য দিয়েছে রহমান । রহমান জানায়, “আমার মাকে আমি তো খুব ভালো করে চিনি । তার নাম জ্ন্নাত আরা ঝর্ণ না । তার আইডিতে নাম শাহিদা । আমার বাবার নামের সাথে মিলিয়ে আমার মায়ের নাম শাহিদা ইসলাম হিসেব ভোটার আইডি কার্ড করা হয়েছে।”
এতো কিছুর পর আবার ৮ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে । তাতে মামুনুলের দাবীকৃত দ্বিতীয় স্ত্রী বলছেন : ”উনি তো ফাইস্যা গেছেন । কি প্রমাণ দেখাবেন এখন !
হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে তার সেই নারীসঙ্গী জান্নাত আরা ঝর্ণার একটি ফোনালাপে। সোনারগাঁওয়ের স্থানীয় এক হেফাজত নেতার সঙ্গে ঘটনার দুই দিন পর প্রায় আট মিনিট ১১ সেকেন্ড কথা বলেন ঝর্ণা। ঘটনার দিন স্থানীয় জনতা তাদের ঘেরাও করার সময় কে কী বলেছিলেন এবং এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহও উঠে এসেছে তাদের কথোপকথনে।
আলাপে ঝর্ণা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মামুনুল হক কারও কারও কাছে তাকে না চেনার বিষয়ে বলেছেন। এতে তিনি বিপদে পড়ে যেতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন।
আলাপে মামলা করা প্রসঙ্গে ওই নারী বলেন, ‘আচ্ছা কীসের জন্য মামলা করবেন? এইটা মিটাবে কীভাবে? এটা তো সরকার, থানাতে গেলে তো ডকুমেন্ট চাইবে। তখন কীভাবে কী করবেন?’
নামের বিষয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণা ওই হেফাজত নেতাকে বলেন, ‘এই বিষয়টা আমি ভালো করে আপনাকে ক্লিয়ার করতেছি। যেটা হচ্ছে যে হুজুর যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসছিল, যখন হুজুর প্রথম… একদম প্রথম দফা তারা যখন জেরা করতেছিল, তখন সে বলছে আমার স্ত্রীর নাম হচ্ছে আমেনা তৈয়বা। ঠিক আছে। তারপর যখন তারা চলে গেল, টিএনও সাহেব আসলো, এসআই আসলো, সাংবাদিকদের সবগুলারে বের করে দিল, তখন আমি শুনতেছিলাম যে হুজুর বলছে যে এটা আমার সেকেন্ড ওয়াইফ। আমি বিয়ে করেছি আমি কোনো অবৈধ কিছু করি নাই। যখন তিনি সেকেন্ড ওয়াইফ বলছে তারপর আমাকে জেরা করা হইছে। এখন আমি কীভাবে ফেইক বলি। আমি তো তার বাবার নাম জানি না। আমি কী করে কী বলব, বলেন? আমাকে তো আলাদা জেরা করছে। এটা নিয়ে লাস্টে কী…’
বোরকার রং নিয়ে যে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে সেই প্রসঙ্গে মামুনুল হকের সেই নারীসঙ্গী বলেন, ‘ব্লু কালারের ওপরের খিমারটা (হিজাব) ছিল, নিচের কালারটা ছিল কালো কালার। এইটা লাস্টে কী হইতে পারে? আপনার কী ধারণা হচ্ছে?’
উত্তরে সেই হেফাজত নেতা বলেন, ‘আমাদের ধারণা এখন মানে আমার যেইটা এখন… এগুলা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলেই আরও বেশি সমস্যা। হুজুরে এখন আসবে শুনছি, আমি যেভাবে পারছি যে হুজুর এই মুহূর্তে সোনারগাঁও না আসাটা ভালো। আসার দরকার নাই। যতটুকু হইছে হইছেই। কারণ এখানে ক্ষয়ক্ষতি তো কম হয় নাই। কারণ জিনিসটা আরও বাড়বে। মানে প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ কইরা এই মুহূর্তে পারব না। যতটুকু করছি ততটুকুই আল্লাহ উদ্ধার করতে পারছে দুই জনকে। এইটাই বেটার ছিল।’
কথোপকথনে জান্নাত আরা ঝর্ণা ওই হেফাজত নেতাকে বলেন, ‘আপনারা যা বলতেছেন, আমার মনে হইতেছে উনি (মামুনুল হক) পুরা নিজে ফাঁইসা গেছে।’
জবাবে হেফাজত নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘এখন আমরা এত মর্মাহত, এত কষ্টে আছি। ভাবছি, উনি তো বিপদেই আছে, উনি কেমন কষ্টে আছে। এখন আমরা কিছু করতে পারতেছি না। আমি হ্যাং হয়ে গেছি। বুঝছেন না ? আর আপনি কোনো সমস্যা নাই তো না ?’
জবাবে ঝর্ণা বলেন, ‘এখন কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু আপনাদের মুখ দিয়ে যা শুনতেছি এভাবে যদি বলে তাহলে তো আমি আমার মানে প্রবলেমে পড়ে যাবো।’
ঝর্ণা ও হুজুরদের বক্তব্যে যেন ‘অমিল’ না থাকে উল্লেখ করে ওই নারী আরও বলেন, ‘আমার কথা আর হুজুরের কথা এক থাকতে হবে। কিন্তু সে এখন একেক জনের কাছে একেক কথা বলতেছে। সেইগুলা ফাঁসও হয়ে যাইতেছে। তাহলে আমার কথা আর তার কথা কি এক থাকবে ? উনি একসঙ্গে কেন অটল থাকতে পারল না ? টিএনও সাহেব যখন বলল, যখন ওসি সাহেবকে বলল, আমি রেকর্ড করে রাখতে পারি নাই। তখন সাংবাদিক ছিল না। তখন উনি যখন এই কথাগুলো বলল, তখন উনি এই কথাগুলোর ওপর অটল থাকলেই তো হয়ে যেত। সত্যর জানেন সবসময় না জয় হয়, আর মিথ্যার সবসময় অপমৃত্যু হয়। উনি কেন মিথ্যার আশ্রয় নিলো ?’









Discussion about this post