আাবরো আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পুলিশের কর্মকর্তা এসপি হারুন । ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদকে এখনো দেশবাসী চিনেন এসপি হারুন হিসেবেই । পুলিশের এই কর্মকর্তা কাজ করতে গিয়ে নানা সমালোচিতও হয়েছেন অনেকের কাছে।
এই এসপি হারুন কিংবা উপ কমিশনার (ডিসি) আবরো প্রমাণ করলেন তিনি যে কোন ঝুঁকি নিয়েই পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে পছন্দ করেন।
এবার গত ১৮ এপ্রিল রোববার দুপুরে সারাদেশে তুমুল বিতর্কিত হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে সুস্পষ্ট ও নানা অপরাধের প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদের (এসপি) নেতৃত্বে পুলিশের অসংখ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা । এমন ঘটনায় তোলপাড় চলছে সর্বত্র।
২০১৩ সালে শাপলা চত্তরে হেফাজত ইসলামীর তৎকালীন সময়ে আন্দোলনের তুমুল ক্রান্তিলগ্নে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতো এসপি হারুন হেফাজতের শীর্ষ নেতা আল্লামা শফি হুজরকে রাজধানী থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে চট্টগ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ।
এমন ঘটনার পূর্বে ২০১১ সালের ৬ জুলাই হরতাল চলাকালে পুলিশের সাথে বাক বিতন্ডা, ধাক্কা ধাক্কি, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নাল আবেদিন ফারুক গুরুতর আহত হয়েছেন । বিএনপির তৎকালীন চীফ হুইপ জয়নাল আবেদিন ফারুক পুলিশের হানায় আহত হলে পুলিশ কর্মকর্তা এসপি হারুনের নাম উঠে আসে সমালোচকদের কাছে। সেই থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে ঝুকি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ।
এমন ঘটনার পর পুলিশের এই কর্মকর্তাকে গাজীপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করলে দীর্ঘ চার বছর সময় নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যে দায়িত্ব পালন করেন ।
পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জের মতো দেশের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলায় ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। পূর্ণ ১১ মাস দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জর শীর্ষ অপরাধীদের কাছে আতংকের নাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা । এসপি হারুন অর রশিদ নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বপালন কালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জে অনেকে নেতা ধর্ণা দিয়ে পুলিশের সহায়তা কামনা করেছেন । আবার অনেকেই এসপি হারুনকে কিভাবে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিতারিত করা যায় নেই লক্ষেও নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়েছেন । অনেকেই বিশাল বিশাল শো ডাউন করে, ”এবার ঘন্টা বাজানো হবে !” এসপি কে বিদায় জানাতে ”আল্টিমেটাম” দিয়েও ব্যর্থ হয়ে আবার নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ধর্ণা দিতে দেখা গেছে।
বিগত ও বর্তমান প্রেক্ষপটে পুলিশ সুপারের মতো কর্মকর্তাদের অনেকেই রাজনৈতিক দলের নেতাদের দপ্তরে ধর্ণা দিতে দেখা গেলেও নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুন অর রশিদ দায়িত্ব পালনকালে সেই চিত্র ছিলো ভিন্ন । এসপি হারুনের তৎকালীন সময়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাড়াসী অভিযানের সময় নারাযণগঞ্জের পথে পথে “নারায়ণগঞ্জের সিংহাম” লেখা ব্যানার ফ্যাস্টুন সর্বত্র দেখা যায় । আর ওই সময়ে এসপি হারুনের ভয়ে বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল খেতে হয়েছে বলে চাউর রয়েছে পুরো নারায়ণগঞ্জে ।
নারায়ণগঞ্জে কাটায় কাটায় ১১ মাস পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালনকালীন সময়ে এসপি হারুন অর রশিদ ছিলেন পুরোপুরি হিট ।
নারাযণগঞ্জ থেকে বদলীর পর ২০২০ সালের ১২ জুলাই তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ করোনা ভাইরাস জালিয়াতির অভিযোগে জেকেজি’র চেয়ারম্যান ডাক্তার সাবরিনাকে গ্রেফতার করে । চিকিৎসক সাবরিনাকে গ্রেফতার করাও ছিলো ঝুকিপূর্ণ। কারণ সেই সময় চিকিৎসকদের সংগঠনকে এক ধরণের চ্যালেঞ্জ করেই এই ডাক্তারকে গ্রেফতার করতে হয়েছে ।
সবশেষ চরম ঝুকিপূর্ণ মৌলবাদী সংগঠন হেফাজত ইসলামীর নেতা মামুনুল হকের সরকার বিরোধী নানা অপকর্মের সরকার যখন দিশেহারা । কোমলমতি শিশুদের সামনে রেখে হেফাজত ইসলামীর নেতাদের আন্দোলন, জ্বালাও পোড়াও, ভাংচুরসহ ব্যাপক তান্ডব যখন চরম পর্যায়ে ঠিক তেমন সময়ে আরেকবার ঝুঁকি নিয়ে মামুনুল হক কে গ্রেফতার করায় এসপি হারুন অর রশিদের এমন কাজকে আবারো সকলের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে প্রশংসার সাথে ।








Discussion about this post