নারায়ণগঞ্জ শহর ও আশেপাশের এলাকা জুয়াড়িদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। লকডাউনের সুযোগে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও ক্লাবগুলিতে রমজানের মধ্যেও চলছে জমজমাট জুয়ার আড্ডা।
ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ এসে র্যাবের একটি দল সদর থানা থেকে ৫শ’ গজ দুরে অবস্থিত ইয়ার্নমার্চেন্ট ক্লাব থেকে বিপুল পরিমান জুয়া খেলার টাকাসহ ২২ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে। তার পরের দিন র্যাব সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আরো ১২ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে।
গতকাল শনিবার সোনারগাঁয়ে জামপুরে গ্রামবাসী জুয়ার আস্তানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এইসব জুয়াড়িরা শহরের মাছঘাট এলাকায়সহ বিভিন্ন স্থানে ছোট শাহজাহান ও বড় শাহজাহানের তত্ত্বাবধানে জুয়ার আসর চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি মাছঘাট থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ কিছু জুয়াড়িকে আটক করে। জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও সামান্য জরিমানা দিয়ে তারা আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে শহরের বিভিন্ন অভিজাত ক্লাবে ও কেউ অফিস ভাড়া নিয়ে জমজমাট জুয়ার আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। লকডাউনের কারণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অন্যত্র ব্যস্ত থাকায় রমজানে জুয়ার আড্ডা চলছে জমজমাট।
বিশেষ করে ইয়ার্ন মার্চেন্ট ক্লাবে পর পর বেশ কয়েক বার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালানোর পরও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এই জুয়ার আড্ডা চলছে বলে সুতা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। তারা ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের মত একটি জাতীয় ভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের ক্লাবে নিয়মিত এই জুয়ার আড্ডার কারণে হতাশা ব্যক্ত করে এর নেপথ্য ইন্ধন দাতাদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আবেদন জানিয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার খুব কাছাকাছি ইয়ার্ন মার্চেন্ট ক্লাবে প্রতিদিন জুয়ার আসর বসলেও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনদিন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।
এ ব্যপারে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, যারা এই জুয়ার আড্ডার সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করতে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। পুলিশের কেউ জড়িত থাকলেও তাকে ছাড় দেয়া হবে না। যেকোন মূল্যে জুয়ার আসর নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্মূল করা হবে।
গত ১৭ এপ্রিল র্যাবের অভিযানে ২২ জন জুয়ারীকে গ্রেফতার হওয়ার পর ক্লাব সদস্যরা সভাপতি লিটন সাহার বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। এর আগেও এই ক্লাবে অভিযান চালিয়ে জুয়ারীদের গ্রেফতার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ক্লাব সদস্যদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ইয়ার্ন মার্চেন্ট ক্লাবে জুয়ার আসর থেকে দৈনিক লাখ লাখ টাকা কমিশন হাতিয়ে নিচ্ছেন সভাপতি লিটন সাহা। ব্যবসায়ীদের ক্লাবকে তিনি জুয়ারীদের আড্ডাস্থল বানিয়েছেন।
তবে এ ব্যাপারে লিটন সাহা দাবী করেছেন, জুয়ার আসরের সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। অথচ ম্যানেজার কৃষ্ণ বলছেন, সভাপতির অনুমতি ছাড়া তো আর জুয়ার আসর বসে না।








Discussion about this post