প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিএসটিআইয়ের (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস্ অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) কোনো অনুমতি ছাড়া অবৈধ গ্যাস পন্থায় সেমাই কারখানা তৈরী করে আসছিলো রহমান স্টোরের মালিক আবদুর রহমান মিয়ার পুত্র ফারুক হোসেন রিপন। একই সাথে অবৈধ চোরাই গ্যাস সংযোগ দিয়ে এমন অনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো এই রিপনসহ তার সহযোগিরা । অথচ ঈদকে ঘিরে উৎপাদন করা সেমাইয়ের মোড়কে তাদের লোগো রয়েছে বিএসটিআইএর লোগো ।
বুধবার অভিযানের শুরুতেই দীর্ঘক্ষন ম্যাজিস্ট্রেটদের এই অবৈধ কারখানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে ভিতরে অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করে। একই সাথে অনেক তৈরীকৃত সেমাই পাশের বিল্ডিংয়ের চারতলায় লুকিয়ে রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে তারাবদ্ধ ফ্ল্যাটের চাবি নাই বলে বিভ্রান্তও করে ভ্রাম্যমান আদালতকে ।
মহাধূর্ত রিপনের এমন কান্ড দেখে তাৎক্ষনিক উপস্থিত এলাকার অনেকেই টিপ্পনী কেটে বলেন, পুলিশ এখানে এলেই নানাবাবে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে রিপন। আর ম্যাজিস্ট্রেটকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখানোর সাহস করছে কি করে !
অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুরো টিম চলে আসার পর আবার সেই একই কায়দায় অবৈধ সংযোগ স্থাপন করে পুরোদমে শুরু করেছে সেমাই তৈরীর কর্মকান্ড । যা এখনো পুরোদমে চালু রয়েছে
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডে সুকুম পট্টিতে ‘আনন্দ ফুড প্রডাক্টস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বুধবার (৫ মে) কারখানায় অভিযান চালিয়ে এসব তথ্য পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়। পাশাপাশি প্রায় ৪ হাজার কেজি সেমাই জব্দ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সহাকারী কমিশনার (ভুমি) হাসান বিন আলীর নেতৃত্বে অভিযানে ছিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ এর সহকারী পরিচালক মো: সেলিমুজ্জামান।
এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, ক্র্যাবের প্রতিনিধি ও সদর থানা পুলিশের একটি টিম ছিলেন।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেওয়ার অপরাধে ৫০ হাজার ও প্রতিশ্রুত পণ্য সরবরাহ না করার অবরাধে ৪৫ ধারায় আরও ৫০ হাজারসহ মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া বিএসটিআইয়ের লগো ব্যবহার করায় ৯ হাজার ৪১৭ প্যাকেট ও ১৪৮ টুকরি ভর্তি খোলা লাচ্ছা সেমাই জব্দ করা হয়। পাশাপাশি সেমাইয়ের গুণগত মান পরীক্ষা করার জন্য কয়েক প্যাকেট সেমাই পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান বিন মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রথমে কারখানা কর্তৃপক্ষ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লোকজন দেখে ভেতর থেকে গেট বন্ধ করে দেয়। পরে আমি গেলে এবং চেয়ারম্যানসহ অন্যদের দিয়ে মালিককে ফোন করলে তারা দরজা খুলে।’









Discussion about this post