র্যাব বারবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও নারায়ণগঞ্জের তেল ডিপোকে কেন্দ্র করে বিশাল জ্বালানী তেল চোরদের গডফাদাররা এখনো রয়েছে অধরা । গডফাদাররা উল্টো হুংকার দিয়ে জানায়, তারা আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়মিত আগাম মাসোয়ারা দিয়েই চোরাই কারবার চালিয়ে যাচ্ছে দিনে ও রাতে সমানতালে । সংশ্লিষ্ট অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই চিহ্নিত তেলচোরেরা শুধু তেল আর তেল নিয়ে থাকেন। আবার আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধুদের এবং রাজনৈতিক দলের অসাধু নেতাদের শুধু তেল আর তেল মারেন। এ যেন শুধু তেলের খেলা !
এবার রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জ্বালানী তেল চোরাই সিন্ডিকেটের ৬ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন আব্দুল্লাহ (২৫), মোঃ রাজু (২৫), মোঃ মহিন (১৮), মোঃ মানিক (৩২), মোঃ জনি (১৮) , মোঃ জনি (৩২)। গত ২ জুন রাত সাড়ে ১২ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় গ্রেফতারকৃত আসামীদের দখল হতে ২টি ড্রামভর্তি ৫০০ লিটার চোরাই ডিজেল, ৪টি খালি ড্রাম, জ্বলানী তেল চুরির কাজে ব্যবহৃত বিশেষভাবে মোটর সংযুক্ত করা ৩টি পিকআপ ভ্যান ও চোরাই জ্বালানী তেল ক্রয়-বিক্রয়ের নগদ ১৪ হাজার ৮শত টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সিপিএসসি আদমজীনগর) মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, ডেমরা থানার চনপাড়া ও রূপগঞ্জ থানার সাওঘাট এলাকায় জ্বালানী তেল চুরি ও কেনাবেচার একাধিক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। মহাসড়কে চলাচলরত গাড়ীসমূহ রাস্তার পাশে পার্কিং করে গাড়ীর ড্রাইভার ও হেলপার ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় এই চোরাই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যরা বিশেষ কায়দায় মোটর ফিটিং করা পিকআপ ভ্যান ব্যবহার করে অভিনব কৌশলে উক্ত গাড়ীসমূহ হতে তেল চুরি করে। গাড়ীর ড্রাইভার ও হেলপার তেল চুরির বিষয়টি টের পেয়ে গেলে উক্ত সিন্ডিকিটের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের জিম্মি করে এবং জোরপূর্বকভাবে তেল চুরির পাশাপাশি ড্রাইভার ও হেলপার এর নিকট হতে টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। উক্ত চোরাই সিন্ডিকেট আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে এই তেলের সাথে ভেজাল তেল মিশিয়ে বিভিন্ন ক্ষুদ্র তেল ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করে, যা ব্যবহার করে গাড়ীর ইঞ্জিন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা স্বীকার করে যে, পরষ্পর যোগসাজশে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অভিনব কৌশলে রাস্তার পাশে পার্কিং করা গাড়ী হতে জ্বালানী তেল চুরি করে মজুদ করে এবং অবৈধভাবে কেনাবেচা করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেলচোর চক্রের একাধিক সদস্যদের গ্রেফতার করা হলেও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের তেল দুটি ডিপো, ফতুল্লার দুটি তেল ডিপো ও শীতলক্ষ্যা এবং বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দিনে ও রাতে হাজার হাজার লিটার তেল চুরির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে চিহ্নিত জ্বালানী তেল চোরদের গডফাদাররা। এই জ্বালানী তেলচোরদের গডফাদাররা দম্ভ করে হুংকার দিয়ে জানান দেয়, তারা আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়মিত অগ্রিম মাসোয়ারা দিয়েই এমন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ।
এমন শীর্ষ তেল চোরচক্রের মূল হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আইনশৃংখলা বহিনীর যেমন সুণাম বৃদ্ধি পাবে তেমনি রাস্ট্রিয় সম্পদ রক্ষা পাবে ।









Discussion about this post