নারায়ণগঞ্জে মাত্র দুদিনের ব্যবধানে একটি প্রাইভেট ও সরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করে মো. জিসান নামে ক্যানসার আক্রান্ত এক রোগীর রিপোর্ট নেগেটিভ এবং পজিটিভ হয়।
কোন প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট ভুল আর কোন প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট সঠিক, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে তার পরিবার।
ভুক্তভোগী জিসান নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুরের বাসিন্দা মোহন মিয়ার ছেলে। তার বাবা নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা লোড-আনলোড করে স্বল্প আয় দিয়ে তিন সদস্যের সংসার চালান।
জিসানের স্বজনরা জানান, ১৪ এপ্রিল ১৯ বছর বয়সী জিসানের মাথায় টিউমার ধরা পড়ে। ২৫ এপ্রিল সেই টিউমারের অপারেশন হয়। পরে ক্যানসার ধরা পড়ায় জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
তাই ৫ জুন নারায়ণগঞ্জের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ হাজার ৩০০ টাকা ফি দিয়ে নমুনা দেন। পরদিন ৬ জুন রিপোর্ট আসে পজিটিভ (করোনা আক্রান্ত)। এতে বাবার মন সায় দেয় না। পপুলারের রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ হলে ৭ জুন ১০০ টাকা দিয়ে খানপুরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে আবারও করোনার নমুনা দেন। ৮ জুন সেই রিপোর্টে নেগেটিভ আসে (করোনা মুক্ত)। এমন বাস্তবতায় কঠিন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরিবারটি।
জিসানের বাবা মোহন মিয়া বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে যে চিকিৎসার জন্য করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে, ভুল রিপোর্টের ফলে সেই চিকিৎসাই এখন পর্যন্ত নিতে পারিনি। আগামী ১২ জুন হাসপাতালে গেলে বুঝা যাবে, ভুল রিপোর্টের মাশুল কতদিনে দিতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘কারটা ভুল আর কারটা সঠিক, সেটা আমি বলতে পারব না। আমাদের রেকর্ড দেখে বলতে হবে। তার জন্য রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। এরপরই বলতে পারব ঘটনা কী।’
এ সময় রিপোর্টের ছবি পাঠানোর কথা জানালে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ করেন।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসার বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে যোগ্যতা সম্পন্ন চিকিৎসক ও টেকনোলজিস রয়েছে। এছাড়া কোনো রিপোর্ট সন্দেহ হলে একাধিকবার টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়া হয়। তাই খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরীক্ষার রিপোর্টই গ্রহণ যোগ্য।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘করোনা পজিটিভ হলে এক-দুদিনের ব্যবধানে কখনোই নেগেটিভ হয় না। কোনো একটি রিপোর্ট ভুল রয়েছে।’









Discussion about this post