বন্দরে আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ৩১টি ঘর পরিদর্শন করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। এ সময় তিনি বেশ কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সুবিধা অসুবিধার বিষয়ে সার্বিক খোঁজ নেন।
সোমবার (১২ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার লক্ষণখোলা পৌরসভার মাঠ এলাকায় অবস্থিত এই আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
এসময় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ঘর পরিদর্শন করেন। ঘরে কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা তা জানতে চান। যদি কোন অসুবিধা হয় তা দ্রুত ইউএনওকে জানানোর পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে আশ্রয়ন প্রকল্পে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানেরও তাগিদ দেন তিনি।
পরিদর্শনকালে আশ্রয়নে থাকা শিশুদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। বেশ কিছু সময় শিশুদের সাথে খুনসুটিতে মেতে উঠেন তিনি। পাশাপাশি বয়স্ক নারী পুরুষদের সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রাপ্তির জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনাও চান তিনি।
পরিদর্শন শেষে মোস্তাইন বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, পুরো জেলায় আমাদের আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বন্দরের লক্ষণখোলা এলাকায় ৩১টি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুতই তৈরী করা হবে। পরিদর্শন করে আমরা স্থাপনা কেন্দ্রিক কোন সমস্যা দেখতে পাইনি। তবে এর বাইরের কিছু কাজ বাকি থাকায় সেগুলো দ্রুত সমাধানের তাগিদ দেয়া হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ফলে ৩১টি ঘর তৈরীতে মোট ব্যয় হয়েছে ৫৩ লাখ ১ হাজার টাকা। গত রোজার ঈদের পর প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে উঠেছেন বাসিন্দারা। তবে ২ মাস না যেতেই বেশ নানা সমস্যার মুখোমুখী হয়েছেন তারা। ঘরের মেঝেতে ফিনিশিং হয়নি ঠিকমত, বারান্দার মেঝেতে সিমেন্টের মধ্যে দেখা দিয়েছে চিকন ফাটল, বাথরুমের পানি ঠিকমত সরছে না। তবে জেলা প্রশাসকের পরিদর্শনের পূর্বে ঠিকাদারের লোকজন এসে দ্রুত সেসব সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন বলে জানা গেছে।
নতুন ঘর পাওয়া বাসিন্দারা জানান, ঘরে উঠার কিছুদিন পরেই ফ্লোরগুলোতে সূক্ষ চিকন ফাটল দেখা দেয়। যদিও তার পরিমাণ খুবই সামান্য, কিন্তু এত দ্রুত ফাটল দেখা দেওয়ায় কাজ ঠিকমত হয়নি বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। অনেক ঘরের চাল থেকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পরতো। দেয়ালের সাথে ফ্লোরের জয়েন্টগুলোতে ফিনিশিং ছিল না। ২ দিন ধরে এসব সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের তোড়জোর চলছে।
বেশ কয়েকটি ঘরের ভেতর ও বারান্দায় দেখা যায় সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে চিকন ফাটল ঢেকে দিচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকেরা। সংস্কার করে দেয়া হচ্ছে দেয়াল ও মেঝের মাঝে অসমাপ্ত ফিনিশিং। কয়েকজন কর্মকর্তা ঘুরে ঘুরে কাজগুলো তদারকি করছেন। ঘরগুলোতে ঢুকে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করে দিচ্ছেন দ্রুতই। আর এসব কাজ ঠিকাদারের বদলে উপজেলা থেকেই করে দেয়া হচ্ছে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
ঘর হস্তান্তরের অল্প সময়ের মাঝেই আবার সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, এগুলো ফাটল নয়। আপনারা যদি ইঞ্জিনিয়ার এসে দেখতে চান তাও করতে পারেন। এগুলো হচ্ছে দেয়াল ও ফ্লোরের মাঝে ফিনিশিং দিতে হয় প্লাস্টার দিয়ে। সেই ফিনিশিংটা তারা দেয়নি। এটা যদি সত্যিই এমন কিছু হতো তাহলে যেই মিস্ত্রী কাজটা করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম। এটা এমন কোন মেজর প্রবলেম না। ফাটল শব্দটা খুব বড় একটা বিষয়। যদি আপনাদের কোন রকম কনফিউশন থাকে তাহলে আপনারা ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে এসে দেখতে পারেন।









Discussion about this post