ফতুল্লা (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি :
নারী সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তাকে ধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত সেই বাগেরহাট জেলার পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের ছোট ভাই ও দুই ভাতিজাকে সন্ত্রাসীকান্ডের অভিযোগে গ্রেফতারের পর আদালত আসামীদের কারাগারে পাঠায় বিজ্ঞ বিচারক ।
আদালতে দায়ের করা মামলায় বুধবার রাতে ফতুল্লার রামারবাগ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বিতর্কিত এসপি মোকতার হোসেনের ভাই আক্তার হোসেনের ও তার দুই ছেলে আজিম এবং নিরব।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদ আসামীদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান ।
মামলায় বিবরণ থেকে জানা যায়, ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় ৩০ মে রাত ১০টায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্তার হোসেন ও তার দুই ছেলেসহ ৮/৯ জন মিলে আবুল হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন রুবেল ও তার চাচাতো ভাই মোর্শেদ কামাল ফয়সাল এবং জান্নাতুল নাঈমকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও পকেট থেকে টাকা পয়সা লুটে নেয়।
এমন ঘটনায় আশপাশের লোকজন এসে রুবেল, ফয়সালও নাঈমকে উদ্ধার করে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুইজনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলেও নাঈমকে রাজধানীর মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল থেকে প্রেরন করেন। চিকিৎসা শেষে তারা স্থানীয় ভাবে আপোষ মিমাংসার জন্য আক্তারকে গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে ডাকেন। কিন্তু আক্তার কাউকে পাত্তা না দিয়ে স্থানীয় লোকজনদেরও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন এবং নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়।
এতে আপোষে ব্যর্থ হয়ে রুবেল ২৪ আগষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান,আদালতে নির্দেশে থানায় মামলা গ্রহন করে ৩ জনকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার সকালে তাদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, বারবার চুরি, ছিনতাই, মারামারি, ডাকাতি ও বিশাল বিশাল মাদকের চালানসহ গ্রেফতার হলেও শেষ পর্যন্ত হাজতে আটক করতে পারে নাই পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা মোকতার হোসেনের ভাই আকতার হোসেনকে ।
এবার সামান্য মারামারির মামলায় ফতুল্লা থানায় গ্রেফতার হয়েছে ফতুল্লার সেই দূর্ধর্ষ অপরাধী আকতার হোসেনকে ।
১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার এসপি মোকতার বিরুদ্ধে একজন নারী পুলিশ পরিদর্শক ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা দায়ের করলে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় সর্বত্র । নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়ও ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে । ফতুল্লা এলাকার অনেকেই তীর্য়ক ভাষায় মন্তব্যও করেছেন ।
এমন ধর্ষন মামলার আসামী হওয়ার কারণে এসপি মোকতার হোসেন এবার আর তার ভাই নানা অপরাধের মূল হোতা আকতারের পক্ষে কোন তদ্বির করতে না পারায় গ্রেফতার হয়েছে ফতুল্রা থানায়।
ফতুল্লার একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র আরো জানায়, মূলতঃ কুমিল্লা থেকে সস্তাপুর কুতুবআইল প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতার চাকুরীর সুবাধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আসেন সুলতার মৌলভী । স্কুলের শিক্ষকতার পাশাপশি সস্তাপুর পঞ্চায়েত মসজিদের ঈমাম ছিলেন এই সুলতান মৌলভী । তার দুই পুত্রের মধ্যে মোক্তার হোসেন পুলিশের এসপি হিসেবে কর্মরত। আর তার ছোট ভাই আকতার পুলিশী ক্ষমতার দাপটে মাদক ব্যবসা, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করে বারবার গ্রেফতার হলেও জোড়ালো তদ্বিরের কারণে বারবার ছাড়া পেয়ে পুরো সদর উপজেলায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছিলো । অতি সম্প্রতি ফতুল্লা কমিউনিটি পুলিশের সেক্রেটারী মোস্তফা কামালের পরিবারের সদস্যদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করার পর এই পুলিশ কর্মকর্তা মোক্তার হোসেনের ভাই আক্তারসহ তার সহযোগি মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে বহাল তবিয়্যতে। এমন ঘটনায় ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও শেষ পর্যন্ত টিকিটিও স্পর্শ করতে পারে নাই মাদক ব্যবসায়ী ও নানা অপরাদের হোতা আক্তারের ।









Discussion about this post