নারায়ণঞ্জ সদর উপজেলায় সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও শহরে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ছিনতাই-রাহাজানি রেড়েছে বিপজ্জনক মাত্রায় । মানুষ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে হেঁটে কিংবা রিকশায়, বাসে কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচলের সময়, সকালে-দুপুরে-সন্ধ্যায়, জনাকীর্ণ কিংবা ফাঁকা রাস্তায়।
বিপদের কথা হলো, ছিনতাইকারীরা এখন শুধু লোক জনের টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েই ভাগছে না, ছুরিকাঘাত করতে দ্বিধা করছে না। তারা কখনো কখনো ভুয়া র্যাব,পুলিশ সেজেও ছিনতাই করছে। কিছু ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করছে পুলিশ তবে কিছুতেই ছিনতাইকারীদের দৌড়াত্ম্য কমছে না। গত কয়েকদিন ধরে শহরের ২নং রেল গেইট এলাকসহ দেওভোগ আখড়ার মোড় থেকে মেয়রের বাড়ি পর্যন্ত প্রতিদিন ছিনতাই ও চুরির ঘটনা ঘটছে। মন্ডলপাড়ার বিএনপির হাই কমান্ড াফিসের সামনে যেন ছিনতাইকারীদের মিলন মেলার আয়েজন করেই রেখেছেন বিএনপির এক নেতা । বিএনপির ওই নেতা ও তার স্ত্রীর শেল্টারে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন ছিনতাইকারী , ২০ থেকে ২৫ জন মাদক ব্যবসায়ী সারাদিন রাত ২৪ ঘন্টা পুরো শহরে অপরাধের সাম্রাজ্যে পরিণত করে নানাভাবে ফায়দা হাসিল করেই যাচ্ছে ।
এমন ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে কোন কথা কেউ বলতে সাহস করে না । প্রকাম্যে এমন অপরাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করলেই নানাভাবে খড়গ নেমে আসায় ভুক্তভোগিরাও কথা বরতে সাহস করে না ।
শহরের চাষাড়া, উকিলপাড়া, কালীরবাজার, করিম মার্কেট, মন্ডলপাড়ার, নিতাইগঞ্জের একাধির এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। যদিও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে সদর থানা পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে। তবে বিগত সময়ে ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা যত ঘটছে, সে তুলনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও শাস্তির ঘটনা খুবই কম। বিচারহীনতার পরিবেশে সব অপরাধীর সাহস বেড়ে চলে। পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব আন্তরিকভাবে তৎপর থাকলে ছিনতাইকারীদের দৌড়াত্ম্য এভাবে বেড়ে ওঠা সম্ভব ছিল না। এখন যখন এই অপরাধীরা বিপজ্জনকভাবে ধারালো অস্ত্রপাতি ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে চলেছে, তখনো কি আমাদের বাহিনীগুলো তৎপর হবে না ?
চিহিৃত ছিতাইকারীদের মধ্যে অন্যতম হলেন উত্তর চাষাঢ়া এলাকার খলিলুর রহমানের পুত্র তামিম। মাসদাইর ছোট কবরস্থান এলাকার তারিফ মিয়ার পুত্র সুমন ও দেওভোগ আখড়া মসজিদ এলাকার সুমন মিয়ার পুত্র রিফাত। নগরীর গলাচিপা এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে অটোচালক ফাহিম, একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাগর, মাসদাইরের লিয়াকতের ছেলে আলামিন, মাসদাইর লিচুবাগানের ফজলুল রহমানের ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মাসদাইর গুদারাঘাট এলাকার ইব্রাহিম মল্লিকের ছেলে আরমান। মাসদাইর বেকারী মোড় এলাকার গফুর মিয়ার ছেলে মানিক। ফতুল্লার কাশিপুর স¤্রাট হল এলাকার কাদিরের পুত্র জসিম ও একই এলাকার ওমর খাঁনের ছেলে সাঈদুর রহমান এবং হরিহরপাড়া আমতলা এলাকার তপন দাসের ছেলে সঞ্জয় দাস। পঞ্চবটি শিষ মহল আমতলা এলাকার রানা, রনি, রাজা, মোবারক হোসেন। সানারপাড় এলাকার শফিকের বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত. আঃ ছাত্তার গাজির ছেলে জামাল হোসেন ভুলু ও আনোয়ার হোসেন খানের ছেলে জুয়েল। ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ মুন্সি বাড়ির নুরুল হকের ছেলে জাহিদ হাসান, চর কাশিপুর দিঘলীপট্টি এলাকার মৃত নুর ইসলামের ছেলে রকিব । চর কাশিপুর এলাকার শাহিনের বাড়িতে ভাড়াটিয়া মৃত খলিল মোল্লার ছেলে বোরহান । মাসদাইরের ফারুক মন্ডলের ছেলে আলোচিত সিয়াম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেদী মন্ডল একই এলাকার মনির হোসেনের ছেলে হ্নদয় ওরফে নাকা, জয়নাল আবেদীনের ছেলে আমির হামজা ওরফে লিংকন, মৃত নুর ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মনির হোসেনের ছেলে আদর আলী, বাচ্চু মিয়ার ছেলে বাবু , ইসদাইর রেললাইন এলাকার মৃত আবেদ আলীর ছেলে হাবিব ওরফে চোরা হাবিব ও দেওভোগ এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে অনিক । ভুইগড় এলাকার ভুয়া পুলিশ শাহিন সে কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার খেয়াঘাট এলাকার মহাসিন মিয়ার ছেলে। ভুইগড় এলাকার আব্দুর রব বেপারীর ছেলে সুরুজ বেপারী । দাপা ইদ্রাকপুর এলাকার মৃত হাইদর সরদারের ছেলে ইয়াছিন, মতলব কাজীর ছেলে সেন্টু কাজী, মৃত আজিজ মিয়া ছেলে শাহআলম, ফতুল্লা রেলষ্টেশন এলাকার সামসুল মিয়ার ছেলে চোরা সুমন ও আল আমিন। এরা সকালেই চিহিৃত ছিনতাইকারী। এদের গ্রেফতারে পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায় না। এরা বিভিন্ন এলাকার হলেও শহরেই ছিনতাই করে বেড়ায়।
প্রতিদিন শহরের নিতাইগঞ্জ ও মন্ডলপাড়া থেকে শুরু করে শহরের এমন কোন এলাকা নেই যেখানে ওঁৎ পেতে অবস্থান করে না ছিনতাইকারীরা । এক বা একাধিক সদস্য বেস্টিত এই ছিনতাইকারীরা ধারলো অস্ত্র ঠেকিয়ে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েই চলছে । প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর মডেল থানায় একাধিক মোবাইল হারানোর সাধারণ ডায়রী দায়ের করা হয় । আসলেই কি মোবাইল হারানোর ঘটনা ঘটে নাকি ভিন্ন কিছু ? এমন ঘটনার অনুসন্ধ্যান করতে গিয়ে গিয়ে রেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য । সূর্য উদয়ের সাথে সাথে অনেকের মতো বৃদ্ধ – বৃদ্ধাগণ নানা শারিরীক অসুস্থতার কারনে প্রাতঃভ্রমনে বের হয়ে প্রতিনিয়তঃ পরতে হচ্ছে ছিনতাইকারীদের কবলে। এমন অহরহ ঘটনা ঘটেই চলছে মন্ডলপাড়া ও নিতাইগঞ্জে । এ ছাড়াও শহরের ২নং রেলগেইট , ফলপট্টি, কালিরবাজার চাষাড়া , ফতুল্রা পহ্ছবটি. সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকার মতো জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যেই ঘটাচ্ছে ছিনতাই ।
অতি সম্প্রতি কয়েকজন সরকারী কর্মকর্তাও এই ছিনতাইকারীদের কবলে পরে মূলতঃ সাধারণ ডায়রী করে শান্তনা নিয়ে ফিরে গেছেন । কারো কারো মোবইল উদ্ধার করে দিলেও অধিকাংশরাই হতাশা প্রকাশ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন । আর ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের কোন কঠোরতা না থাকায় দিন দিন রেড়েই চছেছে অপরাধের মাত্রা । আর এমন কারণেই অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ।









Discussion about this post