‘আমার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা যেমন আপাদমস্তক আওয়ামী লীগের ছিলেন, তেমনটা আমিও। দলের বিরুদ্ধে অথবা দলের কোনো নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কর্মকান্ড আমি করিনি। আমি ১৯৮৪ সাল থেকে তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলাম। আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি আনোয়ার কাকাকেই নেতা হিসেবে মেনেছি। ওনার নেতৃত্বে থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি।’
এভাবেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী তার বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন ।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের এক সভায় তিনি এই কথা বলেন। ওই সভায় নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নামার ঘোষণা দেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, ‘যত কিছুই হোক না কেন নেত্রী নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে অবগত। বড় দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবেই। মনোনয়ন চাওয়া দোষের কিছু না। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেয় তার পক্ষেই থাকা উচিত। আমি মনোনয়ন পাবার আগে সবসময় বলেছি, প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকা দেন তার পক্ষে কাজ করবো। আমাকে না দিলেও আমি বিপক্ষে অবস্থান নিতাম না।’
আইভী বলেন, ‘আমাকে যেই চেয়ারে বসতে হয় সেখানে সারাদিন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ২৭টি ওয়ার্ডে কাজ করতে গিয়ে প্রতি ওয়ার্ডেই কোনো না কোনো নেতা-কর্মীর সাথে দেখা হয়, কথা হয়। তাদের নিয়েই কাজ করি। ২০০৩ সালে আপনাদের সাথে নিয়েই কাজ শুরু করেছিলাম। তখন দলীয় এমন কোনো কর্মকান্ড নেই যেখানে আমি ছিলাম না। যখনই ডেকেছেন তখনই এসেছি। কৃষকলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে সকল সম্মেলনে আমি উপস্থিত ছিলাম। কর্মীবান্ধব সবসময় ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। ২১শে আগস্টের বোমা হামলার সময় এই পার্টি অফিসে প্রথমে আনোয়ার কাকা এসেছিলেন, আমিও সাথে সাথে এসেছিলাম। আমরা এইখান থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করেছি। এক-এগারোর সময় নেত্রীর পক্ষে এমন কোনো কর্মসূচি নাই যেখানে আমি ছিলাম না। ঢাকায় যেতে হবে বলে ডাকলে কখনই না করিনি। আমি ঠিক জানি না আর কতটুকু কাজ করলে অ্যাক্টিভ হওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কী কারণে যেন আমি অনেকের মন জয় করতে পারিনি। এটা হয়তো আমার দুর্ভাগ্য। আমি একটু সরাসরি কথা বলি, সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারে বসে অন্য দশজনের মতো সকলকে বিবেচনা করি। অন্যায় হলে সাথে সাথে বলে দেই। এই কারণে হয়তো অনেকের খুব বেশি কাছে যেতে পারিনি। কিন্তু আমি তো মানুষ। আমি সরাসরি কথা বলি, সরাসরি কথা বলতেই পছন্দ করি। আমি দলের একজন নিবেদিত-প্রাণ কর্মী। দুঃসময়ে বোঝা যায় কে দলে থাকে আর কে থাকে না। আমার ভিটা-বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। আমি সবসময় আপনাদের সাথে আছি। সবসময় আমাকে ডাকলেই পাবেন।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাড. মো. আসাদুজ্জামান, আরজু রহমান ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব, জিএম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আইয়ুব আলী, প্রচার সম্পাদক হাবীব আল মুজাহিদ পলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, কোষাধ্যক্ষ কামাল দেওয়ান, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসাইন, মহানগর প্রমুখ।








Discussion about this post