রূপগঞ্জে মেট্রোরেল এমআরটি লাইন ১ এর জন্য অধিগ্রহনকৃত জমির মূল্য না দিয়ে সীমানা বুঝিয়ে নিতে এসে জমি মালিকদের বাঁধার মুখে পড়েছেন মেট্রোরেল কর্মকর্তা ও নারায়ণগঞ্জ এডিসি তোফাজ্জল হোসেন।
এ সময় স্থানীয় জমি মালিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচী পালন করেন।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সদর ইউনিয়নের পিতলগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।
তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষের দাবী, কারো বাঁধা নয় বরং প্রজেক্ট পরিদর্শন করতে এসেছিলেন তারা।
অধিগ্রহণকৃত এলাকা পিতলগঞ্জ মৌজার জমি মালিক সামসুল হক মুন্সি বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় বলেন, আমরা সরকারে উন্নয়নের অংশীদার হতে চেয়েছি, তাই জমি অধিগ্রহণ করায় খুশি হয়েছিলাম। তবে জমির মুল্য বুঝে না পেয়ে জমি ছেড়ে দেব তা মেনে নেবনা।
জমি মালিক একই গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ঝিনু ভুঁইয়া বলেন, আমাদের জমির ৮০ ভাগ বিল পরিশোধ না করা হলে আমরা জমি ছাড়বো না।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল ভুঁইয়া বলেন, ৩২০ বিঘা জমি থেকে মাত্র ২ বিঘার বিল দিয়ে পুরো জমি নারায়ণগঞ্জ এলএ শাখা বুঝে নিতে চায় ৷ এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও জমি মালিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়বেন। অপর জমি মালিক মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, জমির বিল না দিয়ে জমি থেকে আমাদের তুলে দিলে কোথায় যাবো ? বরং বিল দিলে ওই বিল দিয়ে অন্য এলাকায় জমি কিনে ঘর বাড়ি করতে পারবো। এখন ওই বিল না দিয়ে জমি বুঝে নিতে চাইলে কোন ক্রমেই দেয়া হবে না। আমরা মহামান্য হাইকোর্টে রিট করেছি। ওই রিটের রায় না আসা পর্যন্ত তাদের জমি নিতে দেব না।
পিতলগঞ্জ মাদরাসা কমিটির লোকজন তাদের বক্তব্যে বলেন, অধিগ্রহণ এলাকায় কবরস্থান, মসজিদ,মাদরাসা ও ৬ শতাধিক ঘর বাড়ি রয়েছে। এসব ঘর বাড়িসহ সরকার অধিগ্রহণ করেছেন। কিন্তু এখনো বিল বুঝিয়ে দেয় নাই। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করতে আগে বিল প্রয়োজন। অথচ মেট্রোরেলের লোকজন জেলা প্রশাসনের লোকজন নিয়ে জমি বুঝিয়ে নিতে আসছে। এতে আমরা জমি মালিকরা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এডিসি রাজস্ব তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমরা রূপগঞ্জের মেট্রোরেল এমআরটি লাইন ১ প্রজেক্ট পরিদর্শন করতে গিয়েছি। কারো বাঁধার শিকার হয়নি। তবে স্থানীয়দের দাবী দাওয়ার কথা শুনেছি। আনুষ্ঠানিক তাদের দাবী লিখিতভাবে জানালে বিষয়টি সুরাহার করা হবে।
মেট্রোরেল এমআরটি লাইন ১ এর ডেপুটি সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা জমি বুঝে নিতে আসিনি। পরিদর্শন করতে এসেছিলাম। জমি মালিকদের সঙ্গে সব বিষয় সমাধা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে অসংখ্যবার রূপগঞ্জসহ জেলার অন্যান্য অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণ করার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার একটি প্রভাবশালী চক্র যারা নিজেদেরকে প্রভাবশালী শ্যালকের ঘনিষ্টজন হিসেবে প্রচার চালিয়ে নানা পন্থায় দূর্ণীতি করে আঙ্গুল ফলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন । জমির মূল মালিকদের সাথে প্রতারণা করে বিশাল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে উর্টো নানা হুমকি ধমকি দেয়ার অভিযোগ প্রায়ই নগরীর রাজনৈতিক অঙ্গণে সমালোচনার ঝড় তুলে। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ওই চক্রটি বছরের পর বছর যাবৎ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নাানাভাবে ম্যানেজ করেই এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে । কারা এই চক্রের হোতা এবং এমন অভিযোগর বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার দাবীও উঠেছে সর্বত্র ।









Discussion about this post