নারায়ণগহ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকা অফিসে হামলা ভাঙচুর এবং পত্রিকার সম্পাদককে গুলি করে হত্যা ও পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকীর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রোববার রাত থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারী সোমবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে ডিবি পুলিশের একাধিক টিম।
এ সময় ফতুল্লার কাশিপুর এলাকা থেকে আজমেরী ওসমানের সহযোগি ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, কাশিপুর হাটখোলা এলাকার আদর্শ নগর এলাকার মৃত আবুল কাশেমের পুত্র মাসুম ওরফে কাইল্লা মাসুম (৪২), হাটখোলা সিকদার বাড়ী এলাকার মজিবর সিকদারের পুত্র মো: রানা সিকদার (৩২), হাটখোলার ওয়ারিশ সরদার বাড়ির মৃত আনোয়ার হোসেনের পুত্র মো: জিতু সরদার (৩৫)।
বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে ডিবি পুলিশ পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই ইয়ানূর এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের নির্দেশে সোমবার ১৪ ফেব্রুয়ারী মামলাটি সদর মডেল থানা পুলিশ থেকে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এর আগে রোববার রাতে পত্রিকার সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও সদর মডেল থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১৩ ফেব্রুয়ারী রোববার বিকেলে গ্রেফতারকৃত ৮ জনকে সদর থানা পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করে। নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ মোহসেন এর আদালত শুনানি শেষে প্রত্যেকের ১ দিন করে রিমা- মঞ্জুর করে। গ্রেফতারকৃত ৮ জন হলেন শ্যামল সাহা লক্ষণ, কৃষ্ণা ওরফে কৃষ পাল, মো. নাসির হোসেন, মো. ইব্রাহিম, লিটন দাস, মো. ফয়সাল, মো. হাসিব ও বিল্লাল হোসেন।
বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও আজিজ আল মামুন।

উল্লেখ্য শনিবার দুপুর ১২টা ২৫মিনিটে স্থানীয় পত্রিকা ‘দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ’ অফিসের নিচে অর্ধ ধশতাধিক সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে এসে অবস্থান নেন। তাঁরা অফিসে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
শুক্রবার সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার প্রধান সংবাদ ছিল ‘যা ছিল খসড়া চার্র্জশিটে’। সংবাদটি কেন প্রকাশ করা হয়েছে, তার কৈফিয়ত জানতে চান হামলাকারীরা। তাঁরা বলেন,‘তোরা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে নিউজ করস। কালকের মধ্যে পত্রিকায় ক্ষমা না চাইলে পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেব ও সম্পাদককে গুলি করে মেরে ফেলব।’ হামলাকারীরা প্রায় ১৫ মিনিট কার্যালয়ে অবস্থান করে হুমকি দিয়ে চলে যান। এসময় বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেন। সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। দু’টি পিসির হার্ডডিক্স ও সিসি ক্যামেরার সরঞ্জাম খুলে নিয়ে যায়।’

দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারী একটি র্যাবের সেই প্রকাশিত খসড়া চার্জশীট নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। মূলত সেই খসড়া চার্জশীট র্যাব প্রকাশ করে এবং ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করে। সেটাই হুবহু তুলে ধরা হয়েছ। সেখানে আমাদের নিজেদের মনগড়া বক্তব্য নাই। কিন্তু তারা যেভাবে অফিসে হানা দিয়েছে সেটা ন্যাক্কারজনক। তারা অফিসের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিন ও একটি পিসির হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছে। ভাঙচুর করেছে ক্যামেরা। সাংবাদিক ও স্টাফদের বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরা প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানের সমর্থক। ত্বকীর ওই নিউজে আজমেরী ওসমানের নাম ছিল। সেজন্যই তারা এসে এ হামলা চালায়। হামলাকারীরা কৈফিয়ত দিতে বলে কেন আজমেরী ওসমানের নামে নিউজ করেছি। এতেই স্পষ্ট হয় যারা হামলা করেছে তারা আজমেরী ওসমানের সমর্থক।’









Discussion about this post