নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় একটি হাটের ইজারা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার পর পুলিশ যখন আসামি ধরতে অভিযান চালাচ্ছে তখন তিন আসামিকে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের এক সভায়। সেখানে তারা রীতিমতো ফটোসেশনও করেছেন।
এছাড়া সভায় মামলা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কেন পুলিশ তাদের এজাহারভুক্ত করেছে তার কৈফিয়তও ওসির কাছে মুঠোফোনে জানতে চেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম ভূইয়া। তিনি ওই উপজেলা চেয়ারম্যান।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সোনারগাঁয়ের অভিজাত রয়েল রিসোর্টে থানা আওয়ামী লীগের সভা শেষে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। সেখানে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুম বাবু, জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমসহ আরো কয়েকজনকে দেখা গেছে। আর এ তিনজনের পাশেই ছিলেন সামছুল ইসলাম ভূইয়া। এছাড়া সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সারসহ আরো কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে দেখা গেছে।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে কাইকারটেক হাটের দরপত্র নিয়ে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর সমর্থকদের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহাগ রনির সমর্থকদের সংঘর্ষ ঘটে। ওই ঘটনায় রনি গ্রুপের সিরাজুল ইসলাম সজল বাদী হয়ে যে মামলা করেছেন সেখানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় নেতাদের সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবুলের একটি বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে প্রাথমিক অব্যাহতি দিয়ে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে বাবুলের ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগও সভার আহ্বান করে। যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মামলার আসামি রফিকুল ইসলাম নান্নু, আরিফ মাসুম বাবু ও জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূইয়া জাগো নিউজকে বলেন, মামলা হওয়ার পর তাদের আসামি হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। জানার সঙ্গে সঙ্গে সোনারগাঁ থানার ওসিকে বলেছি আমরা ক্ষমতায়, এরা (রফিকুল ইসলাম নান্নু ও আরিফ মাসুম বাবু) সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। আপনি তো তাদের চিনেন। এরা তো ঘটনাস্থলে ছিল না। তাদেরকে কেন আসামি করেছেন। তখন পুলিশ আমাদের বলেছে মামলা তো আর আমি করি নাই। বাদী করেছে।
সভায় উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরা (রফিকুল ইসলাম নান্নু ও আরিফ মাসুম বাবু) আসামি হয়েছে ঠিক কিন্তু তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে এই মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতার করা হবে। তবে আমরা কাউকে হয়রানি করবো না। প্রকৃত যারা দোষী তাদেরকেই গ্রেফতার করা হবে। কারণ মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে যারা জড়িত না। তদন্ত করে মূল আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
রয়েল রিসোর্টে রফিকুল ইসলাম নান্নু ও আরিফ মাসুদ বাবুর উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমরা জানতে পারিনি। জানতে পারলে ব্যবস্থা নিতাম।









Discussion about this post