বুধবার ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে কাঞ্চন পৌরসভার বিরাবো এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় পৌরসভা মেয়র রফিকুল ইসলামের ভাই দূর্ধর্ষ অপরাধের হোতা অসংখ্য মামলার আসামী কুখ্যাত সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলামকে । নারায়ণগঞ্জের এক সময়ের শান্তির জনপথ কাঞ্চন এলাকায় দীর্ঘদিন নানা দূর্ধর্ষ অপরাধের আখড়া হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলো রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকার রিফিউজি এবং আশরাফ জুট মিলের হারুন কেরানীর পুত্র ও বর্তমান পৌরসভা মেয়র রফিকুল ইসলামের ভাই নজরুল, সাইফুল, মোঘল ও শফিকুল ইসলাম। নানাভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে অপরাদীদের রামরাজত্বে পরিণত করে একেবারেই নিঃস্ব থেকে হাজারো কোটি টাকার মালিক বনে গিয়ে পুরো এলাকার অপরাধের সাম্রাজ্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে একদিকে মেয়র রফিকুল ইসলামের পরিবার অপরদিকে কাঞ্চন পৌর আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী গোলাম রসুল কলি বাহিনীর দৌড়াত্মে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে কাঞ্চনবাসী ।
দূর্ধর্ষ অপরাধের হোতা অসংখ্য মামলার আসামী কুখ্যাত সন্ত্রাসী শফিকুল ইসলাম গ্রেফতারের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর অভিনব কায়দায় পুরানো দ্বন্ধকে পুঁজি করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মানববন্ধনের আয়োজন করে মেয়র রফিকুল ইসলামের সমর্থকরা।
সম্প্রতি নির্যাতনের শিকার এক যুবলীগ নেতা দাড়িয়েছিলেন নিজের রক্তাক্ত জামা নিয়ে। কারো হাতে ছিল সন্তানের আবার কারো হাতে ছিল স্বামী স্বজনদের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের ছবি। যা দেখে গা শিউরে উঠছিল প্রত্যক্ষদর্শীদের। পঙ্গুত্ব বরণ করা আওয়ামীলীগের একজন কর্মীও দাড়িয়েছিলেন মানববন্ধনে।
কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি আয়ুবুর রহমান খোকা বলেন, আমার বড় চাচা মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মোল্লার ছেলে রূপগঞ্জ গ্রাজুয়েট এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি এবং পায়রা টাওয়ারের স্বপ্নদ্রষ্টা শফিকুল রহমান মোল্লাকে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি ও তার সহযোগিরা কুপিয়ে জখম করে। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এলেও সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ভয়ে কেউ সামনে যায়নি। একপর্যায়ে হামলাকারীরা শফিকুলকে মৃত ভেবে চলে গেলে স্থাণীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমরা আদালতে মামলা দায়ের করতে গেলেও সেই মামলা নেওয়া হয়নি।
কলি বাহিনীর অন্যতম সন্ত্রাসী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল। কাঞ্চনে কলি বাহিনী এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে হামলা চালায়। এ পর্যন্ত কলি বাহিনী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ৭৩ জনের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। তারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। নির্যাতনের শিকার সাধারণ মানুষ মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়না। কলি বাহিনী স্থানীয় থানা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরও কারো কথার মূল্যায়ন করেনা। মন্ত্রী মহোদয়েরও কথা শোনেনা। স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু গ্রুপ ও বিএনপির ক্যাডারদের নিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কাঞ্চন ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গোলাম রসুল কলি আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথায় ও হাতে পায়ে কুপিয়ে জখম করে। আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেও কেন হামলার শিকার হলাম এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই।
পঙ্গুত্ববরণকারী আওয়ামীলীগ কর্মী বলেন, তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতেন। গোলাম রসুল কলি বাহিনীর হামলায় তিনি পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। তিনি মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। নির্যাতনের শিকার হাজেরা বেগম বলেন, গোলাম রসুল কলি তার পুত্রকে নির্যাতন করার পাশাপাশি ৭-৮টি মিথ্যা মামলায়ও ফাঁসিয়েছে। আসমা নামে অপর এক নারী বলেন, কলি বাহিনীর হামলার শিকার হয়ে তার স্বামী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
এদিকে স্মারকলিপিতে কাঞ্চন পৌর আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী গোলাম রসুল কলিকে চোরাই ও অবৈধ গ্যাস লাইনের মূল হোতা, মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যুতা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ধরেন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, আমি এ বিষয়টি পুলিশ সুপার মহোদয়কে জানাবো। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।









Discussion about this post