নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকারি ব্যবসাকেন্দ্র নিতাইগঞ্জের ডাইলপট্টিতে বাড়ি থেকে টাকা ও সোনাদানা লুট করতে মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত যুবক আল জোবায়ের।
আটকের পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন তিনি পুলিশকে এ কথা বলেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘জোবায়েরকে আমরা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, তাঁর নিজের চলার জন্য টাকার দরকার। এই কারণে নিতাইগঞ্জের সবচেয়ে বাড়িটি তিনি টার্গেট করেন। ৬ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে কলিং বেল বাজিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ফ্ল্যাটের কেউ দরজা খোলেননি। তখন পাশের রাম প্রসাদ চক্রবর্তীর ফ্ল্যাটে কলিং বেল চাপেন তিনি। ওই ফ্ল্যাটের দরজা খুললে ভেতরে ঢুকে রুমা চক্রবর্তীর গলা চেপে ধরেন জোবায়ের। রুমার গলার মালা তিনি ছিনিয়ে নেন। এরপর ছুরি মেরে রুমাকে হত্যা করেন। রুমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ঋতু চক্রবর্তী এগিয়ে এলে তাঁকেও ছুরি মেরে হত্যা করেন জোবায়ের।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘জোবায়ের বলেছেন যে পাশের রুমে রাম প্রসাদ চক্রবর্তীর ছেলের বউ ফারহানা আক্তার শীলাকে বটি দিয়ে কোপ দিলে তিনি ধাক্কা দেন। এতে জোবায়ের ঘরের মেঝেতে থাকা রক্তে পা পিছলে পড়ে যান। তখন শীলা দৌড়ে বটি নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসেন। জোবায়েরও নিচে নেমে আসেন। শীলার হাতে বটি ও নিচে অনেক লোক দেখে তিনি আবার ওই ফ্ল্যাটের ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।’ পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, এই ঘটনায় অভিযুক্ত জোবায়েরকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলার বাদী হবেন নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রাম প্রসাদ চক্রবর্তী। জোবায়েরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গতকাল বুধবার দুপুরে ৬ তলার ফ্ল্যাটে ঢুকে মা ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জোবায়েরের ব্যাগ থেকে দুটি স্বর্ণের গলার মালা, কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত জোবায়ের ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। পরে আর্থিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন তিনি।









Discussion about this post