হাইওয়ে পুলিশের ইন্সপেক্টর মশিউর আলম একেবারেই প্রকাশ্যেই সকল পরিবহণ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ থাকলেও কেউ তার টিকিটিও স্পর্শ করতে পারেন না । এর কারণ হিসেবে নিজেই পরিবহণ থেকে চাঁদাবাজিকালে বলেন, “আমি কি বাপের বাড়ি থেকে আইজি অফিস, ডিআইজি অফিস ও গাজিপুরের টঙ্গি তে হাইওয়ের এসপির অফিসে মাস শেষে লাখ লাখ টাকা দিবো নাকি ?”
মশিউর আলমের এমন বক্তব্য সকল সিএনজি ড্রাইভারদের মুখে মুখে উচ্চারিত হলেও কেউ এ বিষয়ে আজো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই ।
ইন্সপেক্টর মশিউর আলমের এমন চাঁদাবাজির ঘটনায় টঙ্গি হাইওয়ে পুলিশ সুপার কার্যালযের সরকারী মুঠোফোনে বিগত সময়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, অপরপ্রান্ত থেকে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে নাম প্রকাশ না করে জানায়, মশিউরের বিরুদ্ধে ড্রাইভারদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন । তারপরের তদন্ত করে দেখা হবে !”
গাজীপুরের টঙ্গি হাইওয়ে পুলিশ সুপার কার্যােলযের এমন মন্তব্যের ঘটনায় ভুক্তভোগি অনেকেই বলেন, “টাকাই সব, মশিউরেই ম্যানজ সকলে ।“
এমন একের পর এক ঘটনার পর এবার নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযোগ উঠেছে ইন্সমপেক্টর মশিউর আলমের শেল্টারে সিএনজিতে ষ্টিকার লাগিয়ে মিঠু চৌধুরীর চাঁদাবাজি চলছে বিরামহীনভাবে । চাঁদা দিয়ে দাপটের সাথে মহাসড়কে চলাচল করছে সিএনজি।
নারয়ণগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইন্সপেক্টর মশিউর রহমান, ট্রাফিক পুলিশের অসাধু একটি চক্র এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত ষ্টিকার লাগিয়ে অবাধে চলছে সিএনজি।
সিএনজি চলাচলের রোড পারমিট চাঁদাবাজদের ষ্টিকার। সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহরে অন্তত ৪ শতাধিক সিএনজি চলছে মিঠু চৌধুরের দেয়া ষ্টিকারে। বিনিময়ে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে মাসে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে মিঠু চৌধুরী। রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, মিঠু চৌধুরীর বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা এলাকায়। কয়েক বছর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় কাসসাফ মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে গেঞ্জির ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় সুবিধা করতে না পারে সাইলো গেইট এলাকার কয়েকজন সিএনজি মালিককে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ফোরস্টোক সিএনজি মালিক সমিতি গঠন করে।
পরে জেলা ট্রাফিক বিভাগের কয়েকজন টিআই ও সার্জেন্টদের ম্যানেজ করে অবাধে চলাচলের জন্য সমিতির নামে একটি ষ্টিকার বানিয়ে সিএনজিতে লাগিয়ে মাসিক চাঁদা আদায় করছে। এভাবে তিনি অন্তত ৪ শতাধিক সিএনজিতে ষ্টিকার লাগিয়ে মাসে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছেন। হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বানিয়েছেন সিএনজি স্ট্যান্ড।
সিএনজি চালকদের অভিযোগ, মিঠু চৌধুরীর কাছ থেকে ষ্টিকার না লাগিয়ে গাড়ি চালাতে পারেনা। ষ্টিকার না থাকলেই ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ গাড়ি আটক করে। পরে জরিমানা দিয়ে গাড়ি ছাড়াতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে মাসিক ৫’শ টাকা চাঁদা দিয়ে ষ্টিকার লাগিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মিঠু চৌধুরী নিজেই ৪০ টি সিএনজির মালিক। সাইলো সড়কের মাথায় তার রয়েছে শতাধিক সিএনজি রাখার ক্ষমতা সম্পন্ন একটি গ্যারেজ। এই গ্যারেজে ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক চার্জ দেওয়া হয়। রয়েছে চোরাই বিদ্যুৎ সংযোগ। এছাড়াও গ্যারেজে বসে প্রতি রাতে জুয়ার আসর। হয় মাদক খাওয়া ও বিক্রি।
এ বিষয়ে মিঠু চৌধুরীর বলেন, জেলা ট্রাফিক ও কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের সাথে কথা বলেই সিএনজি চালাচলের ব্যবস্থা করেছি। চালকরা খুশি হয়েই মাসিক টাকা দিচ্ছে। কারো কাছ থেকে জোর করে চাঁদা নিচ্ছিনা । চাঁদার টাকা সব মহলকেই দিতে হচ্ছে। আমি একা সব নিচ্ছিনা। গ্যারেজে জুয়া ও মাদক বিক্রির অভিযোগ সঠিক নয় বলে তার দাবি।
হাইওয়ে পুলিশের টিআই মশিউর আলম গণমাধ্যম কে বলেন, মিঠু নামে কাউকে চিনি না। মহাসড়কে সিএনজি চলাচলের অনুমতি হাইওয়ে পুলিশ কখন দিবেনা। সড়কে সিএনজি পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।









Discussion about this post