প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর নাসিক সুইপার পট্টির চারিদিকের সড়কে দাঁড়িয়ে এবং সুইপারপট্টির অধিকাংশ ঘরের মধ্যে বসেই একেবারেই প্রকাশ্যেই সকল ধরনের মাদক (ফেনসিসিডিল হেরোইন, গাজা, লিকো ও সেন এন্ড কোম্পানীর চোলাই মদ, ইয়াবা, ইঞ্জেকশনসহ) বিক্রি করে যাচ্ছে অসংখ্য সুইপাররা । কোন অবস্থাতেই থামানো যায় না এদের । এর নেপথ্যে প্রতিমাসে টানবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ইন্সপেক্টর বাবদ ৫০ হাজার, টিএসআই বাবদ ৩০ হাজার, এটিএসআই ২০ হাজার মাসোয়ারা ছাড়া থানার বড় বাবুকে ১ লাখ টাকা দিয়েই এই ব্যবসা চালাচ্ছে চক্রের হোতারা । একেবারেই প্রকাশ্যেই এমন মন্তব্য করেই মাদকের রমরমা কারবার চালু রয়েছে ।
প্রতিদির মতো বুধরার ৩০ মার্চ কাকডাকা ভোরে প্রাতঃভ্রমনকালে মাদক বিক্রির দৃশ্য সকলের দৃষ্টি কারে। এর কয়েক ঘন্টার পর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে এমন মাদকের মামলায় সুইপার পট্টির সাগর (৩১) ও ছোট লাল (৪৬), রুবেল (৩৩), রাজিব (২৯) ও ভোলা ওরফে জুয়েল (৩১) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত । এমন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পরও টনক নড়েনি সুইপার পট্টির মাদক ব্যবসায়ীদের। বিকেল থেকে এই রিপোর্ট লেখা কালীন সময় রাত ৮ টা পর্যন্ত দফায় দফায় খোজ নিয়ে জানা যায় , “পুরো দমেই চলছে সুইপার পট্টির মাদক কারবার।”
এমন মাদক ব্যবসার বিষয়ে একজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি দম্ভ করেই বলেন, “এই ব্যবসা না করলে মান্থলি দিমু কেমনে ? থানা আর ফাঁড়ির স্যারেরা কি আমাগো মান্থলি মাফ মরবো ?
নারায়ণগঞ্জে মাদক মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক বেগম সাবিনা ইয়াসমিন এ আদেশ দেন। রায়ে মহারাজ, প্রতিমা ও রাজীবকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার পুরাতন সুইপার কলোনির গোপী লাল দাসের ছেলে সাগর (৩১) ও ছোট লাল (৪৬), লালুয়ার ছেলে রুবেল (৩৩), মদন লালের ছেলে রাজিব (২৯) ও বারেকের ছেলে ভোলা ওরফে জুয়েল (৩১)। এদের মধ্যে ভোলা পলাতক।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জেসমিন আহমেদ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি ধারায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় তাদের প্রত্যেককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও জানান, ২০১১ সালের ২২ মে মাদক বিরোধী অভিযানে টানবাজার পুরাতন সুইপার কলোলি থেকে দুই কেজি হেরোইন, ৪৫ কেজি গাঁজা ও সাড়ে চার লাখ টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরদিন সদর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ।









Discussion about this post