ডিজিটাল সেবা আমাদের আধুনিক সেবা। আমরা এটার মাধ্যমে আমরা সকলের কাছে পৌছাতে চাইছি। আপনারা জানেন নারায়ণগঞ্জ হটস্পট ছিল করোনার। তখন আমি বলেছিলাম নারায়ণগঞ্জ হটস্পট হবেই কারন এখানে ৬৪ জেলার লোকের বসবাস। সকল জেলার মানুষ এখানে থাকে এখানে কাজ করে। নারায়ণগঞ্জে সে সময় যখন কেউই এগিয়ে আসছিল না তখন সর্বপ্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এগিয়ে আসে। আমার কাউন্সিলররা অনেক কাজ করেছে। নিজেদের জীবনের মায়া ভুলে তারা কাজ করেছে। সে সময় অনেকের স্বজনরাও তাদের আত্মীয়দের লাশ ধরত না। তারা শুধু ভোটের জন্য এ কাজ করেননি। মানবিকতার কথা মাথায় রেখে এ কাজ করেছেন।
এভাবেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বুধবার (৬ এপ্রিল) এক সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এই ক্রাইসিসে পড়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো জেনেছি। এখন আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারব। আমরা যে এত ভেজাল খাবার খাচ্ছি, কেন ম্যাজিস্ট্রেটরা সব জায়গায় হানা দিবে না ? কেন আটা ময়দা দিয়ে এন্টিবায়োটিক বানানো হবে ? আমি অনুরোধ করবো, মাঠে প্রচুর ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামাতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য মানুষ ব্যাংকক ইন্ডিয়া যায়। এতে অনেক টাকা বাইরে চলে যায়। আমাদের সেবার মান বাড়াতে হবে। যেন আমাদের দেশের একটি মানুষও বাইরে না যায়।
ডাক্তার ভাইরা আমাদের নানান স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে । আমার প্রশ্ন হল ডাক্তার ভাই কেন, বোন কেন নয়। এই ভাই শব্দটা পরিবর্তন করে জেন্ডার নিউট্রাল করার ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে। আমাদের পুরুষ শাসিত এ সমাজে সব জায়গায় আপনাদের যে কর্তৃত্ব সে কর্তৃত্বটা আপনারা রাখেন। আমাদেরও যদি সেখানে একটু অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন তাহলে আমরাও একটু সম্মানিত বোধ করি। আমরাও এ দেশের সেবা করতে চাই।
তিনি বলেন, এখানে ইউনিয়ন পরিষদের একটি সেন্টার রয়েছে। এটা ভাল হয়েছে, এতে কোথায় পার্সেন্টেজ কেমন তা দেখা যাবে। আমি দীর্ঘদিন এই পৌরসভা চালাচ্ছি। আমি দেখেছি সব প্রজেক্ট নারায়ণগঞ্জে হয়। নারায়ণগঞ্জে সব সময় এ প্রজেক্টটা জনপ্রিয় ছিল।
মেয়র আইভী আরো বলেন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি আমরা অনেক কিছু নিয়ে নাড়াচারা করি। কিন্তু আমরা তা কন্টিনিউ করি না ৷ আমরা যেমন এগিয়ে যাচ্ছি তেমন পিছিয়েও যাচ্ছি। আমি চাই আপনাদের নেতৃত্বে যে জায়গা জমিগুলো পড়ে আছে সেগুলো আপনার নেতৃত্বে ভাড়া দেন। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চাচ্ছে সেভাবে হোক। তবে কেন জানি মনে হয়, আমরা যারা নেতৃত্ব দেই তারা সেভাবে পারছি না। সাহস করে আমরা সে কাজটা করতে চাচ্ছি না। আপনারা আমার দেশের সিনিয়র সিটিজেন। আমরা আপনাদের দেখে শিখেছি যখন আপনারা কোন ভাল কাজ করবেন মানুষ বলবে আপনার এ কাজটা তার আমলে হয়েছে, সে ভাল কাজ করেছে। আপনি স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের পাশাপাশি হাসপাতালে রাতের দুইটায় কেউ যেন গিয়ে ফেরত না আসে সে ব্যবস্থা গ্রহন করুন। এটাও আমাদের জন্য প্রয়োজন।

জীবন বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আপনাদের যেসব জায়গা-জমি ও অফিসগুলো পড়ে আছে সেগুলোকে কাজে লাগান। আপনাদের প্রয়োজনেই কাজে লাগান, অন্যকে ভাড়া দিয়ে নয়। প্রধানমন্ত্রী সবগুলো সেক্টরেই নজর রাখছেন। কিন্তু আমাদেরই হয়তো কোথাও গাফিলতি থেকে যাচ্ছে।
বক্তব্য শেষে উপকারভোগীদের কয়েকজনের হাতে ভাউচার কার্য ও হেলথ কার্ড তুলে দেন। এই কার্ডধারী ব্যক্তিগণ ডিজিটাল মাধ্যমে স্বাস্থ্য তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবহার, কাস্টমার কেয়ার নম্বরে কল করে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসকের পরামর্শ, ই-প্রেসক্রিপশন, বহির্বিভাগ চিকিৎসা, হাসপাতালে ভর্তি বীমা ও জীবন বীমা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জীবন বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাসুম পাটোয়ারী, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান প্রমুখ।









Discussion about this post